আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শতাধিক এমপি সরকারের মাথাব্যথার কারণ

ইতিহাসের পেছনে ছুটি তার ভেতরটা দেখবার আশায় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিপুল বিজয় পেলেও সরকারি দলের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রায় শতাধিক এমপি। দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মনোনয়ন বাণিজ্য, চাকরি বাণিজ্যসহ নানাকারণে বিতর্কিত হয়েপড়া এসব সংসদ সদস্যদের আর কোনো ভবিষ্যৎ দেখছেন না স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বুধবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এসব এমপির কার্যক্রমে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন তাদের কার্যক্রম তিনি নিজেই মনিটরিং করছেন। আগামী নির্বাচনে এসব সংসদ সদস্যকে মনোনয়ন না দেয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই সরকারদলীয় সংসদ সদস্যদের কার্যক্রম মনিটরিং শুরু করা হয়।

সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সংসদ সদস্যদের কার্যক্রমের বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছে। সরকারের একাধিক মন্ত্রীর কার্যক্রমও এ মনিটরিংয়ের আওতায় রাখা হয়েছে। গতবছরের শুরুতেই বিতর্কিত সংসদ সদস্যদের ৭০ জনের তালিকা তৈরি করা হলেও গত দেড়বছরে এ সংখ্যা একশতে পৌঁছেছে। নতুন করে বিতর্কিত হয়েপড়া সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে নির্বাচনি এলাকায় গুরুতর আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। সরকারের শুরুতেই বিতর্কিত হয়েপড়া কক্সবাজারের আব্দুর রহমান বদি, চট্টগ্রামের আব্দুল লতিফ, নারায়ণগঞ্জের সারাহ বেগম কবরী, দিনাজপুরের ইকবালুর রহিম, ঢাকার কামাল মজুমদার, আসলামুল হক, সাভারের তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ, ময়মনসিংহের গিয়াসউদ্দিন, পাবনার গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, পটুয়াখালীর গোলাম মওলা রণি, ভোলার নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের পাশাপাশি এমন সব সংসদ সদস্যদের ব্যাপারে অভিযোগ এসেছে যাদেরকে ‘সৎ ও নিষ্ঠাবান’ রাজনীতিক হিসেবে বিবেচনা করা হত।

বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সংসদ সদস্যদের সিংহভাগই প্রথমবারের মতো নির্বাচিত সংসদ সদস্য। আগামী নির্বাচনে তাদের জয়লাভের আশা খুবই কম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব সংসদ সদস্যের বিষয়ে বলেছেন, ‘এবার অনেকে এমপি হয়ে যদি ভাবেন প্রতিবারই তারা দলীয় মনোনয়ন পাবেন আর এমপি হবেন, তাহলে ভুল করবেন। তাদের কার্যক্রমের ব্যাপারে সকল তথ্যই আমার কাছে আছে। ’ ঢাকার পাশেরই একটি জেলায় এক প্রভাবশালী মন্ত্রীকে নিয়ে চলছে নানান মুখরোচক আলোচনা।

প্রতি সপ্তাহে তার নির্বাচনি এলাকায় অবস্থান এবং সার্কিট হাউস ঘিরে রহস্যের তৈরি হয়েছে। বিমানবন্দরের ‘টাকিলা’ কেলেঙ্কারির নায়ক এ মন্ত্রীকে নিয়ে হতাশ ওই জেলার অপর এমপিরা। জেলার আরও নতুন ৩ এমপির কার্যক্রমও সন্তোষজনক নয়। সদ্যসমাপ্ত ইউপি ও পৌরনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে এ জেলায়। দক্ষিণের জেলার এক চিকিৎসক এমপির বিরুদ্ধে অঢেল অভিযোগের পর ওই জেলার এক শিক্ষক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধেও টেন্ডারবাণিজ্য, নিয়োগবাণিজ্য ও বধ্যভূমির জায়গায় বাড়ি করার অভিযোগ এসেছে।

সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজের নাম তালিকাভুক্ত করতে নানা চেষ্টা করছেন তিনি। বরিশালে মাত্র দুটি আসন আওয়ামী লীগের হলেও সেখানে সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মণির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এসেছে। খোদ দলীয় নেতারাই তুলছেন এ অভিযোগ। পটুয়াখালীতে দুই প্রতিমন্ত্রী, এক হুইপ ও এক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগ ভাবিয়ে তুলেছে দলের নীতিনির্ধারকদের। নেত্রকোনায় সার্কিট হাউসে এক সংসদ সদস্যের নারী কেলেঙ্কারি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

আরেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে। নাটোর, নওগাঁ, রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জের এমপিদের বিরুদ্ধেও অভিযোগের অন্ত নেই। গত পৌর ও ইউপি নির্বাচনে এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ভরাডুবির জন্য মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের কর্মকাণ্ডকে দায়ী করা হয়েছে। অনেক এমপির বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে পৌর ও ইউপি নির্বাচনে দলীয় সমর্থন দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেকে কমিশন আদায় ছাড়াও সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকাকে দায়ী করা হচ্ছে।

কোথাও কোথাও দলীয় নেতাদের সঙ্গে বিরোধী দলের মতো আচরণেরও অভিযোগ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদকরা দলীয় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট করেছেন। তাতে হতাশার চিত্র ছাড়া আর কিছুই নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মন্ত্রী-এমপিদের কর্মকাণ্ড আমি মনিটরিং করছি। তাদের কার্যক্রমের ব্যাপারে সকল তথ্যই আমার কাছে আছে।

’ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.