ত্যাড়া...
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ক্ষমতায় আসার পর বর্তমান সরকারের আমলে জারি করা অধ্যাদেশের সংখ্যা এ পর্যন্ত ৮৭টি। ২১ মাসে ৮৭ অধ্যাদেশ। অধ্যাদেশের ওপর ভর করেই সরকারি কর্মকান্ড চলছে। যদিও জরুরি অবস্থার সঙ্গে নানাভাবে যোগসূত্র আছে এ রকম অধ্যাদেশ ছাড়া বাকি অধ্যাদেশগুলো বাস্তবায়নে সরকারের তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি। সংসদের অনুপস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতার সাংবিধানিক আইনগত বিধি-বিধান কিংবা রীতিনীতির তোয়াক্কা করেনি সরকার অধ্যাদেশগুলো প্রণয়ন ও জারি করার সময়।
অধ্যাদেশগুলো প্রণয়নকালে ল’ কমিশনের মতামত নেয়া হয়নি এবং ড্রাফটিং কমিটিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের রাখা হয়নি। এমন বিষয়েও নতুন অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হয়েছে যে বিষয়ে ইতিমধ্যেই আইন বিদ্যমান আছে।
মর্যাদা বিচারে দেশের সর্বোচ্চ আইন হচ্ছে সংবিধান। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন অবৈধ। কিন্তু গত ২১ মাসে প্রণীত অধ্যাদেশগুলোতে রয়েছে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়ের ছড়াছড়ি।
আদালত অবমাননা অধ্যাদেশ বিষয়ে উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ করার পর শুনানি চলাকালে এবং নিকাহ রেজিস্ট্রার সংক্রান্ত অধ্যাদেশ চ্যালেঞ্জের সিদ্ধান্তে হাইকোর্ট বিভাগ বলেছিলেন, এভাবে ঢালাওভাবে অধ্যাদেশ জারি করা অসাংবিধানিক এবং সরকারের এখতিয়ার বহির্ভূত।
ক্ষমতায় আসার পর জরুরি বিধিমালা অধ্যাদেশ দিয়ে যাত্রা শুরু করার পর এ পর্যন্ত জারি করা অধ্যাদেশ ৮৭-তে এসে দাঁড়িয়েছে এবং এর বাইরে আরো ২০টি অধ্যাদেশ জারি হওয়ার অপেক্ষায় আছে। এগুলো বর্তমান সরকার ক্ষমতা ছাড়ার আগেই জারি করবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই শতাধিক অধ্যাদেশের ভবিষ্যৎ কি হবে? বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অধ্যাদেশ জারি হওয়ার পরবর্তী সংসদ অধিবেশন আরম্ভ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সংসদের অনুমোদন নিতে হয়, অন্যথায় ওই অধ্যাদেশ আইনত বাতিল বলে গণ্য হবে। এতো বিপুলসংখ্যক অধ্যাদেশ ৩০ দিনের মধ্যে সংসদে অনুমোদন করিয়ে নেয়া কতোটুকু সম্ভব হবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।