আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্মৃতির পাতা থেকে-নটরডেম কলেজ (অম্লমধুর নানা অভিজ্ঞতা).........পর্ব ৬ (“ফাদার বিমল” কেলেংকারী এবং কলেজের কিছু অন্ধকার দিকের সাথে পরিচয়)

আমি শুনতে পাই লক্ষ কোটি ফিলিস্তিনীর আর্তনাদ...হাহাকার স্মৃতির পাতা থেকে-নটরডেম কলেজ (অম্লমধুর নানা অভিজ্ঞতা).........পর্ব ৫ (আমার হৃদয়ে ঝড় তোলা টিনা ম্যাডামের কথা) ১৮+ হলেও হতে পারে। (লেখাটা আগেই পোস্ট করা হয়েছিল, কিন্তু ৫ মিনিট পর দেখি একদম গায়েব, মডুরাও কোন ম্যাসেজ দেয় নাই। হঠাৎ দেখি আবার লেখাটা ফিরে এসেছে! "বাগ" হলেও হতে পারে। ) আগেই বলে রাখি এই ঘটনার সময়কাল ২০০০-২০০২। বর্তমানের সাথে মেলাতে চাইলে নিজ দ্বায়িত্বে মেলাবেন।

আমার পরের ব্যাচের ভাইয়েরাই এসম্পর্কে ভাল বলতে পারবেন এখন কলেজের কি অবস্থা। এর আগের পর্ব গুলোতে বিভিন্ন স্মৃতি ও কলেজের বিভিন্ন শিক্ষকদের সম্পর্কে বলেছিলাম। আজ বলব নটরডেমের কিছু অন্ধকার দিকের কথা। নটরডেম কলেজে ভর্তি হবার পর ১ম বর্ষে “হিসাব বিজ্ঞান” ক্লাস নিতে আসলেন ফাদার বিমল। তার সদা হাস্যজ্জ্বল মুখ ও টেনে টেনে কথা বলার স্টাইল দেখে আমাদের সবার তাকে ভালো লেগে গেল।

একদিন আমাদের এক ক্লাসমেটের বাবা মারা যাবার কথা শুনে তিনি সবাইকে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করতে বললেন। উনি টেনে টেনে সুর করে বললেন “হে ইশ্বর, তার বাবার আত্মাকে শান্তি দিন, আমিন” উনি একজন “ফাদার”, অর্থাৎ তিনি জীবনে বিয়ে করতে পারবেন না। একবার কথা প্রসঙ্গে উনি বলেছিলেন, “তোমরা তো ভবিষ্যতে সংসারী হবে, কিন্তু আমাদের তো সে সুযোগ নেই। আমরা সারা জীবন ইশ্বরের সেবা করব। “ শুনে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল।

আমি ভাবলাম কত মহান ব্যাক্তি!! ইশ্বরের সেবায় সারা জীবন দিয়ে দেবে? তাকে অনেক মহান মনে হলো। এরকম মহান ব্যাক্তিকে পেয়ে আমরা অনেকে গর্ববোধ করলাম। একবার ক্লাসে উনি ১০ টি জাবেদা লেনদেন লিখতে দেন। আমার সবগুলি ঠিক হওয়ায় আমাকে খাতায় Good লিখে দেন। যদিও কিছুদিন পর বুঝতে পারি ইনার পড়ানোর মান মোটেও ভাল নয়।

এর পরই আমি শীতল স্যারের কাছে ব্যাচে পড়তে শুরু করি। তবে তাকে ফাদার হিসেবে অনেক সন্মান করতাম। একদিন দেখলাম তিনি এলেননা। তার পরিবর্তে এলেন কলেজের সেক্রেটারি ও হিসাব রক্ষক “মিঃ অতুল ডি রোজারিও”। উনাকে জিজ্ঞেস করাতে বললেন উনি ক্লাস নিবেননা।

ক্লাব-ডে’র দিন জেমস এর কনসার্টে নাচানাচির এক পর্যায়ে তাকে দেখতে পাই। আমরা হাত নাড়তেই উনি মিষ্টি হেসে হাত নেড়ে জবাব দিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরে এক ভয়ঙ্কর কুৎসিত কথা শুনলাম। শুনলাম যে, ফাদার বিমল মার্টিন হলের এক ছাত্রকে যৌন নির্যাতন করেছে!! এবং এই ঘটনার পরে "ফাদার" বিমলকে ইন্ডিয়া পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রথমে খবরটি বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছিল।

পরে মার্টিন হলের ছেলেরাই জানায় যে “ফাদার” বিমল আসলেই ওই নোংরা কাজ করেছে। আমার বন্ধু জাহিদ মার্টিন হলের ছেলেদের কাছে শুনেছিল, ফাদার বিমল নাকি ওই ছেলেটিকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন এই বলে- “তুমি যদি আমার প্রস্তাবে রাজি থাক, তাহলে আমি তোমার ছুটির ব্যাবস্থা করে দেব। “ মার্টিন হলে সাধারনত যারা পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমসিম খায় সেইসব ক্রিশ্চান ছেলেরা থাকে। “ফাদার” বিমল সেই ছেলের দূর্বলতার সুযোগে তার উপর এই পাশবিকতা চালায়। সেসময় আরও শুনেছিলাম যে ফাদারদের বিল্ডিং ম্যাথিয়াস হাউজে এরকম ঘটনা হয়।

সেবার অনেক মজার গুজব শুনেছিলাম। আমাদের প্রিন্সিপালের ম্যাথিয়াস হাউজের রুমের বারান্দায় নাকি মেয়েদের অন্তর্বাস ঝুলতে দেখা গেছে। এক রাতে নাকি তিনি কু-কাজ করতে গিয়ে ধরা খেয়ে মোটর সাইকেল ফেলে পালিয়ে যান। আমার চেনা এক ছোটভাই বলেছিল যে তারা নাকি একবার বন্যার সময় দেখল যে ম্যাথিয়াস হাউজের সামনে থেকে একটি প্যাকেট ভাসছে। সেটি ভাসতে ভাসতে কাছে আসার পর দেখা গেল যে সেটি কনডমের প্যাকেট।

তবে সেইসব কথা কেবলই শোনা কথা, সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। আমি যে স্যারের কাছে অর্থনীতি পড়তে যেতাম তাঁর কাছে ফাদার বিমলের ঘটনাটির ব্যাপারে নিশ্চিত হলাম। উনার মুখ থেকেই কলেজের এক অন্ধকার দিকের ব্যাপারে অবগত হলাম। জানলাম, কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্মচারী ও হলিক্রস পাদ্রিদের সাথে শিক্ষকদের দ্বন্দের কথা। অর্থনীতির স্যরের কাছ থেকে জানলাম টেরেন্স স্যার "বিমল" এর তীব্র নিন্দা করেছিলেন।

স্যার চেয়েছিলেন ওই পাদ্রিকে কঠোর শাস্তি দিতে । তিনি ব্যাপারটিকে বিচারের আওতায় আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কলেজ প্রশাসন তা হতে দেয়নি। তারা ভয় পেয়েছিলেন এই কথা প্রকাশ হলে “ফাদারদের” উপর সাধারন মানুষের বিশ্বাস ভেঙ্গে পড়বে। হয়ত এই কাজে কলেজের সুনাম রক্ষা হয়েছে, কিন্তু একটা ভয়ঙ্কর অপরাধের কথা চাপা পরে গেল।

তারা হয়ত কলেজের মধ্যে সঙ্ঘঠিত বিভিন্ন অনিয়মের কথাও ফাঁশ হয়ে যাবার ভয় পেয়েছিলেন। সেদিন জেনেছিলাম শিক্ষক নিয়োগের অনিয়মের কথা। কলেজে শিক্ষক নিয়োগের জন্য কোন বিজ্ঞাপন দেয়া হয় না। । বেশীরভাগ টিচার নিয়োগ করে কলেজ প্রশাসন।

এই ক্ষেত্রে টিচারদের কোন মতামত নেয়া হয়না। সেই ফাদার বিমল ছিল সাধারন বি.কম পাশ করা। অথচ একটা কলেজে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম অনার্স মাস্টার্স লাগে, আর ডীগ্রি পাশ করলে দুটাতেই ফার্স্ট ক্লাস লাগবে। কিন্তু সে ছিল সাধারন ডিগ্রি পাশ। তার পড়ানোর মান দেখেই সেই কথার সত্যতা খুঁজে পেলাম।

কিছু বিভাগে হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষক বাদে সবার শিক্ষা দেবার মান অত্যন্ত বাজে। তবে আমার এই কথা শুধু “ব্যবসায় শিক্ষা” ও “মানবিক” বিভাগের জন্য প্রযেজ্য। আমাদের প্রিন্সিপাল ছিলেন বাংলার শিক্ষক নিতে জানতাম। সেদিন জানলাম আমাদের প্রিন্সিপাল আসলে বাংলার ছাত্র ছিলেননা তিনি ছিলেন সমাজ বিজ্ঞানের ছাত্র, তিনি কিভাবে বাংলার শিক্ষক হলেন? নটরডেম কলেজের সুনাম মূলত “বিজ্ঞান” বিভাগের জন্য। কারন ওখানে অনেক দক্ষ শিক্ষকরা শিক্ষাদান করতেন।

আর “বিজ্ঞান” বিভাগে যে সব ছাত্ররা ভর্তি হয় তারা সবাই খুবই মেধাবি ছাত্র। সেজন্য তারাই এইচ.এস.সি তে ভাল রেজাল্ট করে। সে কারনে অনেক ছাত্রই মেধা তালিকায় স্থান পেত। এই রেজাল্ট এর জন্যই সব সময় বলা হতো ঢাকার সেরা কলেজ। কিন্তু চাপা পড়ে যেত “ব্যাবসা শিক্ষা” ও "মানবিকের" দুর্দশার কথা।

ব্যাবসা শিক্ষা বিভাগে সব সময় ‘এ’ এবং ‘বি’ সেকশনকে। আমাদের সময় হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে ‘এ’ ও ‘বি’ সেকশনে ক্লাস নিতেন যথাক্রমে শীতল স্যার ও আহসান হাবিব স্যার। কিন্তু ‘সি’ এবং ‘ডি’ সেকশনে দেয়া হলো সেই ফাদার বিমলকে। এমনকি ফাদার বিমল চলে যাবার পরেও কলেজের সেক্রেটারিকে ক্লাস নেবার জন্য পাঠানো হয়। অনেক হৈচৈ করার পর শীতল স্যারকে কিছুদিনের জন্য ক্লাস নিতে পাঠানো হয়।

‘সি’ এবং ‘ডি’ সেকশনে কম দক্ষ টিচারদের ক্লাস নিতে পাঠানো হতো। নটরডেম কলেজের মত একটি বিখ্যাত কলেজে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হলে, কোন সন্দেহ নেই যে অনেক মেধাবি প্রার্থী আবেদন করত এবং সেখান থেকে তুখোড় প্রার্থী বেছে নেয়া অসম্ভব হতো না। কিছু কিছু বিষয়ে কিছু শিক্ষকের শিক্ষাদানের মান ছিল অত্যন্ত খারাপ। স্যাররা চেয়েছিলেন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে উপযুক্ত শিক্ষক নেয়া হোক। কিন্তু সেসব তোয়াক্কা না করে সাধারন মানের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হতো।

এবং এর বেশীরভাগই খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের। স্যারেরা বলে ছিলেন- “আপনারা খ্রিষ্টান সম্প্রদায় থেকে নেন সমস্যা নেই কিন্তু ভাল কাউকে নেন, একটা সিস্টেমের মধ্যে নেন। কিন্তু কলেজ প্রশাসন তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। কলেজ ছাড়ার পর দেখলাম প্রশাসনিক স্টাফ থেকে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে মানবিক বিভাগে ও ব্যাবসায় শিক্ষা বিভাগে। এসব কারনে নটরডেম কলেজের ব্যাবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের অবস্থা খুব একটা যে উন্নত সেটা বলতে পারব না।

তবে “বিজ্ঞান” বিভাগ নিয়ে এখানে আমার কিছু বলার নেই। কেননা আমার জানা মতে সেখানের শিক্ষকদের শিক্ষা দানের মান খুবই উন্নত এবং বিজ্ঞান বিভাগে সব সেরা ছাত্ররা ভর্তি হতো। এবং সেজন্যই এত ভাল রেজাল্ট। স্যারদের মতে নটরডেম কলেজের আরেকটি খারাপ দিক হচ্ছে কলেজের প্রশাসনিক ষ্টাফদের “নাক উচা” টাইপ বা “তাচ্ছিল্য” মনোভাব। স্যারদের কে কেউ তোয়াক্কা করত না।

টিচার ও কলেজ প্রশাসন সম্পূর্ন যেন আলাদা সত্ত্বা। ফাদাররা চাইতেন টিচারদের সাথে প্রশাসনের কোন সম্পর্ক না থাকে। ক্যুইজ পরীক্ষার সময় দেখা যেত কলেজের অফিস ষ্টাফ টাইপের কিছু লোক ঘুরে ঘুরে দেখত টিচাররা ঠিক মত গার্ড দিচ্ছেন কিনা। যা যেকোন শিক্ষকের জন্যই অপমানজনক। একবার আহসান হাবিব স্যার হিসাব বিজ্ঞান ক্যুইজের প্রশ্ন কম্পজের জন্য একজন অফিসের কম্পিউটার রুমে গিয়ে হাতে লেখা প্রশ্নটি দিয়ে আসেন।

পরে তাকে নাকি সরাসরি জেরা করা হয়- “আপনি কেন ওই রুমে ঢুকলেন? জানেননা এই রুমে ঢোকা নিষেধ?.....একটা কলেজে কি এমন নিষিদ্ধ জায়গা থাকতে পারে যে স্যারকে এমন জেরার মুখে পড়তে হলো। পড়ে বায়োলজী টিচার আজমল স্যার এই কথা শুনে সরাসরি প্রিন্সিপালের রুমে গিয়ে এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। পরে এই ঘটনার জন্য প্রিন্সিপালের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়। আমাদের প্রিন্সিপালের রুম কোথায় সেটা কেউ জানতাম না, কেননা সেটা প্রকাশ্য স্থানে ছিলনা। তার সাথে দেখা করতে হলে তখন কেবল ভেতরে যাওয়া যেত।

একবার এক ক্যুইজ পরীক্ষার সময় কোন স্যার আসেননি। পরীক্ষা শুরু হবার প্রায় দুই মিনিট আগে একজন অফিস স্টাফ এসে হাজির হয়। সে ঢুকেই দেখে আমার এক ফ্রেন্ড তখনও বই গোছায়নি। তাই দেখে সেই স্টাফ তাকে দুটা থাপ্পর দেয়। আমরা সেদিন তাকে কোন টিচার মনে করেছিলাম।

পরে জানলাম যে সে অফিস ব্যবস্থাপক। যেখানে টেরেন্স স্যারকেও কোনদিন ক্লাসে কাউকে গায়ে হাত দিতে দেখিনি, কিন্তু একজন অফিস ষ্টাফ হয়ে এই কাজ করা দেখেই বোঝা গেল তারাই নিজেদেরকে হর্তাকর্তা মনে করত। আনিস স্যারও একবার আপেক্ষ করে বলেছিলেন, এমন অবস্থা হয়েছে যে আমার কাছে কোন গেষ্ট আসলে তাকে নাস্তা দেয়ার জন্য নিজে গিয়ে কিনতে হয়। শিক্ষকরা চেয়েছিলেন কলেজ পরিচালনা আরও স্বচ্ছ হোক, গভর্নিং বডি থাকুক, যেসব ডোনেশন পাওয়া হয় সেগুলোর একটি স্বচ্ছ হিসাব থাকুক। আরেকটি ব্যাপার ছিল বেতন বৈষম্য।

শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক থেকে অনেক পেছনে থাকলেও অফিস ষ্টাফরা তুলনামুলক ভাবে অনেক বেশী সুযোগ সুবিধা পেতেন। কারন সব অফিস ষ্টাফরাই “হলিক্রস সঙ্ঘের” নিরব আধিপত্য মেনে নিয়েছিল। কয়েকজন টিচার বাদে সব টিচারই এর বিরুদ্ধে একমত হন। টেরেন্স স্যারই এর প্রতিনিধিত্ব করেন। এর কিছুদিন পর টেরেন্স স্যারকে স্টুডেন্স গাইডেন্স এর পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

এবং আরো পরে তাকে বরখাস্ত করা হয়। অনেকে মনে করেন কেউ একজন “ফাদার” হয়ে গেলে সে অনেক ভাল শিক্ষক হয়ে যায়, সে একদম ভাল মানুষ হয়ে যায়, তার কাজ কর্মে কোন প্রশ্ন তোলা যায়না। এইরকম মনভাবের কারনেই মার্টিন হলের সেই ছেলের উপর করা পাশবিকতার বিচার হয়নি। একবার, দৈনিক জনকন্ঠে পাঠকের চিঠি কলামে “অ্যামিটি মৃধা” নামে এক ছাত্র লেখে যে, সে কয়েকমাস ধরে ক্লাস করে একটা জিনিষ খেয়াল করে যে নটরডেম কলেজে জাতীয় পতাকা উড়ানো হয় না। (আসলেই সেই সময় নটরডেম কলেজে জাতীয় পতাকা উড়তে দেখিনি।

) আরো কয়েকদিন খেয়াল করে সে একজন কর্মচারীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সে বলে যে এই কলেজে রাজনীতি হয়না। তখন অ্যামিটি প্রশ্ন তোলে যে জাতীয় পতাকার সাথে রাজনীতির সম্পর্ক কি? ব্যাপারটা এখানেই শেষ হয়ে যেত, কিন্তু ঝামেলা হলো যখন এই চিঠি লেখার কারনে তার এইচ.এস.সি পরীক্ষার প্রবেশ পত্র আটকে তাকে মানষিক ভাবে হয়রানি করা হয়। এই ঘটনাও পত্রিকায় আসে কিন্তু একদম ছোট করে। তবে ফাদার বিমলের সেই কেলেংকারীর ঘটনা দেশের কোন প্রথম সারির পত্রিকায় আসেনি, এসেছিল শুধু ইনকিলাব পত্রিকায় এসেছিল। আসলে প্রথম আলোর মতিউর রহমান, জকন্ঠের আতিকুল্লাহ খান মাসুদ, নিটল টাটার আবদুল মাতলুব এবং এদের মত অনেক প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্য নটরডেমিয়ান ছিলেন।

ফাদাররা আসলে তাদেরকে ম্যানেজ করেছিলেন, এবং হয়ত তারাও চাননি এইসব ঘটনা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে, হয়ত কলেজের সুনাম নষ্টের আশঙ্কা করেছিলেন। তবে এর কারনে একটা নোংরা অপরাধের কথা চাপা পড়ে গেল। আমার মতে কলেজের কলেজের সবথেকে দিক ছিল শিক্ষক নিয়োগে দুর্বলতা। শেষের দিকে এমন কিছু শিক্ষক ছিল যাদের পড়ানোর মান ছিল অত্যন্ত নিম্ন, কারন কলেজ ষ্টাফ বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানলেও শিক্ষক হিসেবে তাদের যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেয়া হলে কোন সন্দেহ ছিল না যে মেধাবীদের মধ্যেই শিক্ষক বাছাই হতো, তাহলে কলেজে যোগ্য শিক্ষকের অভাব হতো না।

কয়েক বছর আগে আমার পরিচিত নটরডেম কলেজের এক ছোট ভাইকে কলেজেরই কিছু ছেলে কলেজে আসার পথে বিভিন্ন ভাবে বিরক্ত করত (নিরিহটাইপ ছেলেদের সাথে যা সাধারনত করা হয়)। সেই ভাই কলেজের সে সময়ের স্টুডেন্ট গাইডেন্স “ফাদার” বকুলকে জানাতে উনি তাকে পরামর্শ দেন যে কয়েকদিন তাকে অন্য রাস্তা দিয়ে কলেজে আসতে!! টেরেন্স স্যার থাকাকালিন এইরকম ঘটনা কখনও শুনিনি। সেই ছেলে শেষ পর্যন্ত তার বন্ধুদের সাথে একজোট হয়ে সেই সব ছেলেদেরকে হুমকি দিয়ে সমস্যা সমাধান করে। একজন পাদ্রী হলেই যে সে একজন দক্ষ পরিচালক হবে এমন কোন কথা নেই। নটরডেম কলেজ বিভিন্ন দিক দিয়ে ছিল সেরা এবং আসা করি এখনও আছে - নিয়মিত ল্যাব ক্লাস, নিয়ম নীতি (টেরেন্স স্যার থাকা পর্যন্ত), ক্লাব কার্যক্রম ইত্যাদির জন্য।

তবে কলেজের উচিত কলেজ পরিচালনায় শিক্ষক ও অভিভাবকদের গভর্নিং বডিতে সম্পৃক্ত হওয়া আর “হলি ক্রস সঙ্ঘের” একক আধিপত্য রোধ করা। তাহলেই কলেজের মান আরও বাড়বে আর “ফাদার” বিমল কেলেংকারীর মত কোন ঘটনা ঘটবে না। .....(চলবে) (এরপর মুখতার স্যারকে নিয়ে পোস্ট দেব। তিনি আমাদের ২য় বর্ষে ক্লাস নিয়েছিলেন। সেই পোস্টের লেখায় কোন কাটছাট থাকবেনা।

কারন তার ক্লাসের প্রকৃত সুধা বুঝতে হলে তা কোনরকম কাটছাট ছাড়াই তা বর্ননা করতে হবে। ) ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।