আমি একদম আলাদা
রবিবার, ২৭ মার্চ ২০১১
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার: ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে না যাওয়ায় রাজধানীর সরকারি বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের কমপক্ষে ২৫ ছাত্রীকে মারধর করেছে ছাত্রলীগ। আহতরা হলেন কলেজের পুরাতন হলের ৩০৬ নম্বর কক্ষের লাবণী আক্তার (স্নাতক শেষ বর্ষ রোল ৩০৬), ৩০৯ নম্বর কক্ষের জান্নাত (৩য় বর্ষ রোল ১০৯), ৩১১ নম্বর কক্ষের খুশি আক্তার, তাহমিনা, প্রজ্ঞা, সুমি, হীরা, আমেনা, রুমা, তাহমিনা, রুমকি, সনি ও তানিয়াসহ আরও কয়েকজন। এর মধ্যে ৫-৬ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে। তাদের একটি কক্ষে ধরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে মধ্যযুগীয় কায়দায় পেটানো হয়। এসব ছাত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললে বা এ খবর মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে ছাত্রীদের হল ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি নাসরিন সুলতানা ঝরা।
তাদের হলের বাইরেও যেতে দেয়া হচ্ছে না। নির্যাতিত একজন ছাত্রী ফোনে বলেন, আমাদের হলের বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। কলেজ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেত্রী নাসরিন সুলতানা ঝরা, ৪০৯ নম্বর কক্ষের ছাত্রলীগ কর্মী আইরিন, নিশাত, মণি, ৪০৪ নম্বর কক্ষের শায়লা, ৪১০ নম্বর কক্ষের শিমুলসহ ৩০-৩৫ জন ছাত্রীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করেন। পরীক্ষা থাকায় অনেকেই যথাসময়ে যেতে পারেননি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতেই ঝরার ক্যাডাররা ছাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ে ৩২ নম্বরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে রাখেন। ঝরার নির্দেশ অমান্য করায় সকাল ১০টার দিকে নাসরিন সুলতানা ঝরার নেতৃত্বে ৪০-৪৫ জন ছাত্রীদের কক্ষ থেকে নিয়ে চুলের মুঠি ধরে হকিস্টিক ও রড দিয়ে পেটায়। কয়েকজন ছাত্রী আহত হলে এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো হলে। আহত ছাত্রীদের ঝরা হুমকি দেয়- কেউ খবর প্রকাশ করলে হলছাড়া করা হবে। কলেজের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাদিরা পাঠান বলেন, মেয়েদের নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
তাদের হাত থেকে সাধারণ ছাত্রীরাও রেহাই পায়নি। তিনি বলেন, সাধারণ ছাত্রী ও ছাত্রলীগ মিলে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক ছাত্রীকে পিটিয়েছে। এখন তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। কেউ কথা বলতে পারছে না। আহত ছাত্রীদের চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে না।
কলেজের অধ্যক্ষ মেরিনা জাহান বলেন, একসঙ্গে থাকতে গেলে ভাই-বোনের মধ্যেও ঝগড়া হয়। আমি ঘটনা শোনার পরই হলে গেছি। হলে রাজনৈতিকভাবে কোন ধরনের সংঘর্ষ বা মারামরি হয়নি। আমি শুনেছি একটি মেয়ে আরেকটি মেয়েকে থাপ্পড় মেরেছে। এরচেয়ে বেশি কিছু হয়নি।
উল্লেখ্য, ছাত্রলীগ নেত্রী ঝরার নামে এর আগেও নানা কেলেঙ্কারির ঘটনা রয়েছে। সাধারণ ছাত্রীদের ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের বাসায় মনোরঞ্জন করাতে বাধ্য করায় গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ছাত্রলীগেরই দু’পক্ষের মধ্যে কলেজে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এছাড়া কলেজ এলাকায় ঝরার নামে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও বহিরাগতদের কাছে হল ভাড়া দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে প্রভাব খাটিয়ে কলেজের একটি গাড়িও ব্যবহার করেন ঝরা। ছাত্রীদের মারধর করার বিষয়ে নাসরিন সুলতানা ঝরা বলেন, কাউকে মারার প্রশ্নই ওঠে না।
আমি এ ধরনের কোন ঘটনার খবর জানি না। আপনার নেতৃত্বেই নাকি ছাত্রীদের মারধর করা হয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝরা বলেন, এসব ফালতু কথা। কাউকে মারধরের প্রশ্নই ওঠে না।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।