আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হৃদরোগ প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস

বাতি ঘরের আলোয় সবাই আলোকিত হউক হৃদরোগ অর্থ হৃদপিন্ডের রোগ। এই হৃদপিন্ডটা ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকবো। আমাদের আশপাশের প্রিয় মানুষগুলো কেউ না এই হার্টের রোগে ভুগছে। অথচ একটু সচেতন হলে আমরা এই রোগ এড়িয়ে দিব্যি ভালো থাকতে পারি। পৃথিবীতে যতো মৃত্যু হয় তার ৩০% হয় শুধুমাত্র হৃদপিন্ডের রক্তসংবহন রোগে।

এ রোগের ক্ষেত্রে কিছু কিছু ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় রয়েছে। যেমন, ক) ওজনাধিক্য খ) উচ্চ রক্তচাপ গ) ডায়াবেটিস ঘ) ধূমপান ঙ) জর্দা, সাদাপাতা, খয়ের সেবন চ) আর সর্বোপরি খাবার-দাবার বা খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস। খাবারের সাথে সব রোগই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমাদের অসচেতনতা, অজ্ঞতা আর খাবার রান্না প্রক্রিয়া সবই এই ধরনের রোগের কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে জানা গেছে, হৃদরোগের কারণে যেসব মৃত্যু হয় এর অধিকাংশ উন্নয়নশীল ও নিম্ন আয়ের দেশের মানুষের।

অনেকেই মনে করেন, ক্ষীণকায় শরীরে কখনো হৃদরোগ হবে না। এজন্য খাওয়া-দাওয়ায় কোনো নিয়ন্ত্রণ আনেন না। অথচ বাইরে সরু হলে কী হবে এদের রক্তনালীতে চর্বি জমে বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে। তবে মেদবহুল দেহে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। আমাদের শরীরে ক্যালরি প্রয়োজন এটা সত্য, তবে সে ক্যালরি ২ বা ৩ বারে গ্রহণ না করে ৫/৬ বারে গ্রহণ করলে তা শরীরে মেদ হয়ে জমবে না।

অনেকে বলেন, ডায়েটিং করছেন। সকালে কিছু খান না। অথচ দুপুরে যে খাবার খাচ্ছেন তা প্রচুর পরিমাণে খেতে হচ্ছে। কারণ, ক্ষুধাকেতো নিবৃত্ত করতে হবে। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যে চর্বি এবং শর্করা জাতীয় খাবার যেনো পরিমাণে কম খাওয়া হয়।

অনেকের ধারণা, যেহেতু তিনি ডায়াবেটিক রোগী না সেহেতু কেনো চিনি কম খাবেন বা তিন বেলা ভাত খাবেন না। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে এই শর্করা জাতীয় খাবার দ্রুত গ্লুকোজে পরিণত হয় আর বেশি পরিমাণ গ্লুকোজ চর্বিতে রূপান্তরিত হয়। বেশি তেল বা চর্বি জাতীয় খাবার শরীরের শুধু রক্তনালী বা হার্ট নয় লিভার, কিডনিসহ শরীরের প্রতিটি অঙ্গে বাজেভাবে প্রভাব ফেলে। অনেক রোগী হাই বস্নাড প্রেসার বা ডায়াবেটিস পারিবারিকভাবে পেয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে খাবার নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে প্রাথমিকভাবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

আপনার খাদ্য তালিকায় অাঁশ জাতীয় খাবার বেশি রাখার ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ফলমূল বিশেষ করে আমড়া, পেয়ারা, জাম্বুরা, লেবু, কামরাঙ্গা, আমলকি এগুলো বেশি করে খাবেন। এ সকল ফলের অাঁশ শরীরে রক্তের চর্বিকে জমতে দেয় না। পাশাপাশি শাক-সবজি ও ফলমূলে যে এন্টিঅঙ্েিডন্ট, বিটা ক্যারোটিন থাকে তা রক্তের এলডিএল-এর অঙ্েিডশনে বাধা দেয়। এই এলডিএল-ই এথেরোসক্লোরেসিসের জন্য দায়ী।

এন্টিঅঙ্েিডন্ট রক্তে এইচডিএল-এর পরিমাণ বাড়ায়। মনে রাখবেন- রক্তে এইচডিএল-এর পরিমাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা হার্টের ভালো কোলেস্টেরল। মূলত এইচডিএল বাড়ে হাঁটার সাথে সাথে। হাঁটার পাশাপাশি এইচডিএল বাড়ানোর জন্য সামুদ্রিক মাছ আর বেশি করে শাক-সবজি খাবারের ব্যাপারে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

পাশাপাশি ধূমপান, জর্দা, সাদাপাতা ইত্যাদি কেউ খেলে সেক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন বা ওষুধ সেবনে কোনো লাভ হবে না। হৃদরোগের সবচেয়ে বড়ো শত্রু হচ্ছে চর্বি। এখানে সম্পৃক্ত চর্বির কথা বলা হচ্ছে। যা কীনা পনির, মাখন, ঘি, নারকেল, পামতেল, ননীযুক্ত দুধ, চিংড়ি মাছ, ডিমের কুসুম, চর্বিযুক্ত মাংস ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। চিকিৎসকরা ইদানিং বলে থাকেন যে ভেজিটেবল ওয়েল হার্টের জন্য ভালো যাতে ওমেগা ৩,৬ থাকে।

যা আপনার হার্টকে ভালো রাখতে সাহায্য করবে। একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন, এক্ষেত্রে রান্নার প্রসেসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রান্না যদি ডিপ ফ্রাই হয় তাহলে ভেজিটেবল ওয়েল দিয়ে রাঁধলেও লাভ হবে না। কেননা ডিপ ফ্রাইতে খাদ্যের ক্যালরি আড়াই গুণ বেড়ে যায়। যা কীনা পরে ফ্যাট হয়ে যায় এবং এ জাতীয় খাবার ওজন বাড়ায়।

মনে রাখতে হবে যে খাদ্যে বেশি লবণ হিডেন কিলার। অতিরিক্ত লবণ বা খাবারের সাথে কাঁচা লবণ হাই বস্নাড প্রেসার ও হৃদপি-ের রক্ত সংবহননালীর যথেষ্ট ক্ষতি করে। তাই হৃদরোগসহ অন্যান্য রোগ থেকে দূরে থাকার জন্য কিছু পরামর্শ: ক) পরিমিত আহার গ্রহণ করুন খ) রিচ ফুড, ভাজা খাবার, কোমল পানি কম খান। গ) প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শাক-সবজি আর ফলমূল রাখুন। ঘ) খাবারের পর পরই শুয়ে পড়বেন না।

ঙ) ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন। চ) প্রচুর পানি পান করুন। ছ) ডায়াবেটিস আর বস্নাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখুন। জ) খাবারের সাথে কাঁচা লবণ খাবেন না। ঝ) ধূমপান, জর্দা, খয়ের, সাদাপাতা ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত খাকুন।

ঞ) ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখুন। ট) প্রচুর হাঁটুন। মনে রাখবেন- হাঁটাই হচ্ছে সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম। সূত্র : Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.