আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন দায়িত্ববান শিক্ষক

একজন দায়িত্ববান শিক্ষক হঠাত করেই দেশ জুড়ে শিক্ষকদের অনৈতিক কর্ম কান্ড ভয়ংকর ভাবে বেড়ে গিয়েছে। এমন দিন নেই-যেদিন দেশের কোথাওনা কোথাও শিক্ষকদের অনৈতিক কাজের সংবাদ পড়তে নাহয়! ভাবতেই পারছিনা-আমরা কোথায় চলছি! শিক্ষক মানে শুধু কাসে বসে পাঠদান নয়। একজন সত্যিকারের দায়িত্ববান শিক্ষক তাঁর শিক্ষার্থীদের সকল বিষয়ে শিক্ষাদান করবেন, এটাই স্বাভাবিক। তাদের ব্যক্তিগত বিষয়েও পরামর্শ দেবেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্কুল-কলেজ পর্যায়ে শিক্ষকরা আর যাই হোক শিক্ষার্থীদের বিপথে ঠেলে দেন না।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এক শ্রেণীর শিক্ষক তাঁদের পদোন্নতি ও বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব পেতে যখন শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেন, তখন সেই শিক্ষক ওইসব শিক্ষার্থীকে কোন না কোন অবৈধ সুযোগ দিয়েই থাকেন। বিশেষ করে বর্তমানে ছাত্রনেতাদের আর কাস করতে হয় না। বেশি পড়তেও হয় না। শর্ট সাজেশন নিয়ে পরীক্ষা হলে গিয়ে কিছু লিখলেই ব্যাস। ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের দাপট ঠিক রাখতে ছাত্রদের হাতে যখন কতিপয় অসাধু শিক্ষক অস্ত্র তুলে দেন তখন ওই শিক্ষকের কাছে আর কী আশা করা যায়? একজন সম্মানীয় শিক্ষক যখন তাঁর সন্তান তুল্য ছাত্রীকে ধর্ষন করে-তখন সেই শিক্ষকের কাছে কি আশা করা যায়।

রাস্ট্রীয় প্রসাশনের কথা বাদই দিলাম-একজন অধ্যক্ষ যখন ছাত্রী ধর্ষনকারী কুলাংগার শিক্ষকের পক্ষালম্বন করে-তখন সেই শিক্ষকের কাছে কি আশা করা যায়! এমন শিক্ষকের সংখ্যাও কম নেই। এসব শিক্ষককে সামনে সালাম দিলেও ঘৃণাই করে শিক্ষার্থীরা। তবে আশার দিক হল, এখনো এমন কিছু শিক্ষক আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণ ও প্রশাসনিক দায়িত্বে তাঁদের স্থান না হলেও শিক্ষার্থীদের হূদয় জুড়ে ঠিকই জায়গা থাকে তাঁদের। তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাও থাকে। সত্যিকারের দায়িত্ববান শিক্ষকরা লাভ-লসের হিসেব করেন না।

তাঁরা শিক্ষার্থীদের ক্লাশে সে পাঠদানের পাশাপাশি তার নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়েই সচেতন থাকেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ শামসুজ্জোহা স্যার ছিলেন আমার আব্বার সহকর্মী। আব্বার মুখেই শুনেছিলাম শামসুজ্জোহা স্যারের গুণাবলীর কথা। আমরা সবাই জানি তিনি ছাত্রদের জন্য জীবন দিয়েছিলেন, তেমনি জীবিতাবস্থায় তিনি জীবন বাজি রেখে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। তিনি যখন হলের প্রভোস্ট ছিলেন তখন ওই হলের কোন ছাত্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি।

সশস্ত্র দু'দল ছাত্রের মাঝে সংগঠিত এক সংঘর্ষে তাঁকে জীবন বাজি রেখে তাদের শান্ত করতে অসাধারণ ভূমিকা রাখতে দেখেছেন। একবার দুই দল ছাত্রের মধ্যে যখন প্রচন্ড মারামারি, গোলাগুলী চলছিল তখন তিনি দু'দল ছাত্রের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, 'যদি কেউ গুলী করো তবে সেই গুলী যেন আগে আমার বুকে লাগে। ' অবশেষে উভয় দলের সমঝোতা হল, পরিবেশ শান্ত হল, সেই মানুষটি (প্রভোস্ট স্যার) হলের আবাসিক সকল ছাত্রের হৃদয়ে গেঁথে গেলেন। স্যার তখন থেকে শুধু শিক্ষকই ছিলেননা-শহিদ হবার আগে পর্যন্ত তিনি সকল মত ও পথের ছাত্রদের 'অবিভাবক' হয়েছিলেন। আমরা এমন শিক্ষকদের শ্রদ্ধা জানাই।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন শিক্ষক চাই। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.