© এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের। তাই লেখকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোন প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ব্যবহার না করার অনুরোধ রইল... ১. অনেকদিন কোন কিছু লিখিনা আমি। এত দীর্ঘ সময় সেলফ-ব্লকড হয়ে থাকিনি কখনো। প্রথম প্রথম মন খারাপ হতো খুব, এখন আর তাও হয়না। আসল কথা হলো, একটা সময় সব সয়ে যায়।
হ্যাঁ, সবই সয়ে যায়! আগে প্রায় প্রতিদিনই পিসিতে বসে গট-গট করে কিছু একটা লিখে ফেলতাম। প্রতিদিনের সেসব অখাদ্য জমা হতো "মাই ডকুমেন্টস"-এ। তার কিছু কিছু জোর করে গলাধঃকরণ করানোর প্রচেষ্টায় শেয়ার করতাম ফেসবুক কিংবা ব্লগ সাইটে। পাঠক আমার কয়েকজন চেনা-অচেনা বন্ধু, কখনো বা আমি নিজেই!!
কবিতা লিখলেই যদি কবি হওয়া যায়, সে অর্থে আমিও কবি। জ্বলজ্যান্ত-রক্ত মাংসের কবিতা পেয়ে গেছি, আমার সব অপেক্ষার অবসান হয়ে গেছে, হয়তো তাই এলোমেলো শব্দগুলো আর কবিতা হয়ে ওঠেনা আর।
হয়তো আর উঠবেও না কোনদিন। হ্যাঁ, আমার আর কোন অপেক্ষা নেই, কোন প্রাপ্তির প্রত্যাশা নেই। চব্বিশ বসন্তের অপেক্ষার প্রহর ভেংগে দিয়েছে গভীর কালো চোখের 'একজন মায়াবতী'। মাঝে মাঝে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যাই খুব, তুমি কবিতার মতো, নাকি কবিতারা তোমার মত?? উত্তর জানা নেই আমার। শুধু এটুকু অনুভব করি, দুজনকেই ভালোবাসি খুব!!
একটা ভয়ও লাগে ইদানিং।
এলোমেলো, চেনা-অচেনা শব্দগুলো জোড়া দিয়ে কবিতার জাল বুনতে হয়। তোমার ক্ষেত্রেও অনেকটা তেমনি। নির্ঘুম রাত্রিগুলোতেও তোমার মুখচ্ছবি মনে করার চেষ্টা করি, এলোমেলো টুকরোগুলো জোড়া লাগিয়ে তোমার সুন্দরতম মুখ খানি আঁকতে চেষ্টা করি মনের ক্যানভাসে। কী অদ্ভূত, ছন্নছাড়া শব্দগুলোর মত তোমার মুখের টুকরোগুলোও জোড়া লাগাতে পারিনা!! তোমায় মনে করতে পারিনা। সব ধোঁয়াটে, ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের মত ভেসে বেড়ায় মনের আকাশ জুড়ে।
কবিতা লেখার মত তোমায় মনে করার চেষ্টাও চলে সারা রাত, নির্ঘুম। হঠাৎ করেই শুনতে পাই মসজিদ থেকে ভেসে আসা আযানের সকরুণ ধ্বনি! জীবনের ডায়েরীতে যোগ হয় আরো একটি ঘুমহীন রাত্রি। ভয়টা এখানেই, কবিতার মত তুমিয়ে যদি পর হয়ে যাও কোনদিন!!!
২. কাল সকালে বাড়ি যাবো ৮ মাস পর। আমার ভেতর কোন তাড়া নেই। একদিন থাকবো, তাড়া আছে।
অনেক কাজ জমে গেছে, এসে সারতে হবে। তাই যত সকালে রওয়ানা দেব, তত দ্রুত বাড়ি যেতে পারব। ততই দ্রুত ফিরতি ট্রেন ধরতে পারব। কিন্তু প্রস্তুতি নেয়া হয়নি। ব্যাগ গোছাতে ইচ্ছে করছেনা।
বাড়ি আমায় কখনো টানেনি, ভবিষ্যতে টানবে-এই সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এজন্য আমার কোন আক্ষেপও নেই। মাঝে মাঝে ভাবি, অমানুষ হয়ে যাচ্ছি নাকি দিন দিন??
৩. ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আজ একটু তাড়াতাড়ি। ঘুমিয়ে পড়েছি বললে ভুল হবে, শুয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু লাভ হয়নি, মাথার ভেতর একটা গানের কথা কিলবিল করে জ্বালাতন করছে।
জেমসের অনেক পুরোনো গান।
মাঝে মাঝে নিজেকে বড় একা লাগে
অতীতের সাথে হয় কথোপকথন
মাঝে মাঝে নিজেকে বড় শুন্য লাগে
দাঁড়িয়ে থাকা দূরের সাদা কাফন
ও... থেমে যায়, ভেঙ্গে যায়-জীবনের কোলাহল...
খুব প্রিয় গান আমার, কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো, পরের লাইনগুলো আর মনে করতে পারছিনা। মাথার ভেতর জেমসের ভুতও টুং-টাং করছে অবিরত। বুঝলাম, গানটা না শুনলে আর ঘুম হবেনা। মোবাইলে ঘাঁটলাম, গানটা নেই।
অগত্যা উপায় না দেখে বিছানা নেমে পিসি চালু করলাম। ভাল লাগছে অনেকদিন পর গানটা শুনতে। আহা...! কোথায় হারিয়ে গেল জেমস-হাসান-বাচ্চুর এসব দরদমাখা গান??
৪. আমার আজ মোটেও মন খারাপ না। কোন কারণও নেই মন খারাপ করার। রেজাল্ট খুব ভালো হয়েছে।
শেয়ার বাজার চাংগা হচ্ছে। অবশেষে নকিয়াও সস্তা দামের একটা ডুয়েল সিমওয়াল ফোন এনেছে, হেভি ডিউটি ব্যাটারী লাইফ সহ। কিনে ফেলব দ্রুত। সবচেয়ে বড় কথা হলো, তোমার স্পর্শ নিয়ে ৩টা এসএমএস এসেছে একটু আগে, আপাতত পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ এটিই। এতগুলো শুভ-সংবাদ নিয়ে মন খারাপের কোনই কারণ নেই।
তবু বুঝতে পারছি না, আমার কি মন খারাপ??
৫. একটু পর শুয়ে পড়ব আবার। সমস্যা হচ্ছে, জেমস বাবু মাথা থেকে নামবে কিনা তাতে আমি কিঞ্চিত সন্দিহান। ডলবি-ডিজিটাল সারাউন্ড সিস্টেমে জেমস গেয়ে যাচ্ছে আমার প্রিয় গান গুলো। একটু পর গানগুলো থামিয়ে দেব, নিভিয়ে দেব সব আলো। ভয় হচ্ছে, সবটুকু কোলাহল থামবে তো??? নাকি মাথার মধ্যে কেউ একজন টুং টাং করে বলতেই থাকবে, থেমে যায়... থেমে যায়... সব কোলাহল.... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।