আমার ভাতিজা আর বিড়ালের ভাইবোন - ১
আমার ভাতিজা আর বিড়ালের ভাইবোন - ২
ভাইয়ার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে। ওর প্রেমিকা অর্থাৎ আমার হবু ভাবী খুব সুন্দর। আমি দেখেছি কারণ বিয়ের তারিখ ঠিক করার দিন আমিও ছিলাম কি না। আগামী মঙ্গলবার বিয়ে। এর মধ্যে বিড়ালের বাচ্চাগুলোর চোখ ফুটে গেছে।
খুব সুন্দর হয়েছে ওরা। সারা ঘরময় খেলা করে। ভাইয়াকে বলেছিলাম ভাবী বিড়াল পছন্দ করেন কি না। ভাইয়া বলেছে, "আরে, করে না মানে? ওদের বাড়িতেও তো একটা সুন্দর বিড়াল আছে, অবশ্য ওদেরটা হুলো বিড়াল। "
যাক বাবা, এ ব্যাপারে তাহলে নিশ্চিন্ত হওয়া গেল।
ভাবী এসে বিড়াল ফেলে দিবে না। আরে, এই দেখ, আমি বাচ্চাগুলোর নাম দিইনি। ভেবে চিন্তে বের করতে হবে। প্রত্যেকটা হতে হবে ইংলিশ নাম। নইলে হবে কী করে, মায়ের নাম যদি ইংলিশ হয়, তাদের নামও ইংলিশ হওয়া উচিৎ।
ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম, ও বলল,
--"বিড়ালের নামও খুঁজে পাচ্ছিস না। রেখে দে টমি, জনি আর রকি। "
-"আ হা হা হা। নামের কি ছিরি। তারচে ভালো এই রেখে দিই, রুবেল, ম্যাকগাইভার আর অমরিশ পুরী।
"
--"যা যা পারলে তাই রেখে দে। আমার কাছে আসবি না। "
আমি রেগে গেলাম কিন্তু কিছু বললাম না। আমার ঘরে এসে নাম ঠিক করতে থাকি। পেয়েছি।
খুব সুন্দর না, কিন্তু সুন্দর। ভাইয়ার কাছে গেলাম। বললাম,
-"জানো ভাইয়া, আমি খুব সুন্দর তিনটা নাম বের করেছি, শুনবে?"
--"না বাপু। আমার শোনার দরকার নেই। "
-"শোন না।
"
--"আচ্ছা বল্। "
-"শোন, বাদামীটার নাম ব্র্যানটন, সাদা-কালোটার নাম মিল্টন আর সাদাটার নাম নিউটন। কেমন হয়েছে নামগুলি?"
--"খুব সুন্দর, মানলাম। কিন্তু নামগুলো কিভাবে বের করলি?"
-"খুব সহজ। আমি দেখলাম যে মায়ের নাম ইংলিশ আর শেষের দুটি অক্ষর হচ্ছে O আর N।
তখন আমি বাদামীটার নাম রাখলাম ব্র্যানটন। এতেও শেষে O আর N আছে। তারপর আমি দেখলাম যে ব্র্যানটন নামের শেষে TON আছে। তাই ভাবলাম অন্যগুলোর নামও এরকম হবে। "
--"আর, তারপর তুই বাকী দুটোর নাম রাখলি মিল্টন আর নিউটন, তাই তো?"
-"হ্যাঁ, ঠিক।
বুদ্ধিটা কেমন?"
--"চমৎকার!"
আমি খুশিতে প্রায় লাফাতে লাফাতে ঘরে এলাম। এখন আমার কাজ হল বাচ্চাগুলোকে তাদের নাম শেখানো। সেটা মোটামুটি কঠিন একটা ব্যাপার। ভাবী আসবার আগে কাজ শেষ হবে বলে মনে হয় না। যাই হোক আজ থেকেই কাজে লেগে যাব।
সাইমনকে তার নাম শেখানো অত কঠিন হয়নি। তবে এবার এই তিনজনকে নাম শেখাতে কষ্ট হবে। কারণ এরা তিনজন। শেখানোর সময় যদি একজন আর একজনের নাম শেখে, তাহলেই হয়েছে। দেখি চেষ্টা করে, কি হয় কে জানে।
প্রথমে সাইমনকে ডাকলাম। ওমা, চারজনেই এসে হাজির। এখন কী হবে? চারজনেই যদি সাইমন নাম শেখে, তাহলে কী হবে? আমি মহা চিন্তায় পড়ে গেলাম।
--"রীপা, এই দিকে একটু আয় তো!"
উহ্! অসহ্য। এমন বিপদের সময় ভাইয়া ভ্যা ভ্যা করে চেঁচাচ্ছে।
আমিও চিৎকার করতে জানি, "আসতে পারব না ভাইয়া। তুমি ষাঁড়ের মত চেঁচিও না। "
অগত্যা ভাইয়া নিজেই এসে আমার ঘরে ঢুকল। আমি তখন গালে দুই হাত দিয়ে বসে আছি। আমার পায়ের চারপাশে বিড়ালগুলো ঘুর ঘুর করছে।
ভাইয়া অবাক। বলল,
--"কী হয়েছে। অমন হাঁড়ির তলার মত মুখ করে রেখেছিস কেন?"
আমি গম্ভীর স্বরে বললাম,
-"বিড়ালগুলোকে নাম শিখিয়ে দাও। আমি পারব না। "
--"এই ব্যাপার।
আচ্ছা, আমি শিখিয়ে দেব। এখন একটু আয়, আমার মাথায় দেখ উকুন আছে কি না। "
-"দেব দেব বললেই হল না, এখুনি শিখিয়ে দিতে হবে। "
--"আরে বাবা, একদিনে কি শেখানো যায় না কি। দেখিস তোর ভাবী আসবার আগেই নাম শিখিয়ে দেব।
"
এবার আমার মুখে হাসি ফুটল।
-"সত্যি!"
--"হ্যাঁ, সত্যি। এবার তুই আয় আমার মাথাটা একটু দেখে দে। "
-"এস, এখানে বস। "
ভাইয়া বসল।
আমি খুব মনোযোগ দিয়ে ওর মাথাটা দেখে মাত্র ছয়টা উকুন বের করলাম। থাক, এই যথেষ্ট।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।