আগের পর্ব
সাইমনের তিনটা বাচ্চা হয়েছে। কতদিন অপেক্ষা করেছি। তিনটা বাচ্চার একটা হয়েছে বাদামী, সম্পূর্ণ সাইমনের মত, একটা হয়েছে সাদা-কালো, একেবারে ঐ বিড়ালটা মানে বাবার মত, আর একটা হয়েছে সাদা, মাথার দিক দিয়ে সামান্য কালো আর পিছনের ডান পায়ের হাঁটুতে গোল কালো রঙের ছোপ। তিনটা বাচ্চা নিয়ে সাইমন আমার বিছানা আর পড়ার টেবিলের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে। বাচ্চাগুলোর এখনও চোখ ফুটেনি, কি সুন্দর!
আমার পড়তেই ইচ্ছা করছে না।
ভাগ্যিস আজ শুক্রবার, না হলে আজ স্কুল কামাই যেত নির্ঘাত। আমার ইচ্ছা করছে সারাক্ষণ বিড়ালগুলিকে আদর করি। আবার দেখতে দেখতে মাঝে মাঝে হাসিও পাচ্ছে। সাদা রঙের বাচ্চাটা নড়াচড়া করে বেশি। কিছু দেখতে পায় না, হাঁটতে গেলেও টলতে থাকে, কিন্তু তবুও মনে হয় সব কিছু জানতে চায়।
এক সময় সাইমন হাই তুলতে গেছে, আর ঐ সাদা বাচ্চাটাও নড়াচড়া করতে করতে একেবারে সাইমনের হাঁ করা মুখে মাথা ঢুকিয়ে দিয়েছে। সাইমন হাই তুলে মুখ বন্ধ করতে গিয়েই বাঁধল বিপত্তি। শেষ মেশ আমিই মাথাটা বের করে দিলাম। আর বাচ্চাটাকে বললাম,
"দেখলি তো, বেশী নড়াচড়া করার ফল। এরকম অবস্থা আর একবার হলে আমি আর সাহায্য করব না, বুঝলি?"
ও মা! পিছন থেকে চমকে দিয়ে কে যেন বলল, "বুঝলাম।
"
তাকিয়ে দেখি ভাইয়া। আমি বললাম,
-"কী বুঝলে?"
--"বুঝলাম, তোর বরকে হতে হবে বিড়ালের ভক্ত। "
-"ঢং করো না, নিজে তো ভাবীর মুখ দেখালে না, আবার বড় বড় কথা। "
--"হ্যাঁ, তা ঠিক। তবে শিগগিরই তুই তোর ভাবীর মুখ দেখতে পাবি।
"
-"আচ্ছা, এই ব্যাপার। আমাকে না জানিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করেছ। আর তাকে বিয়ে করছ, তাই তো?"
--"তোর বড্ড বাড় বেড়েছে। বড়দের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তাও জানিস না। "
-"না ভাইয়া, জানি না, ভাবী এলে জানব।
"
--"আচ্ছা জানিস। কিন্তু তার আগে এই বিষয়ে কোন কথা না, বুঝলি?"
-"না, ঠিক মত বুঝলাম না। আরও একটু বুঝাতে হবে। "
--"কী বুঝাতে হবে?"
-"তোমার অভিভাবক কে হবে তা-ই বোঝাতে হবে। অবশ্য আমিই যদি তোমার অভিভাবক হই........."
--"চোপ! হতচ্ছাড়ী, বড় বেল্লিক হয়েছিস।
শোন, বড় চাচা আমার অভিভাবক হবেন, আর তিনিই ঐ মেয়ের সঙ্গে আমার বিয়ের কথা ঠিকঠাক করছেন। "
-"বটে! তার মানে প্রেমের ব্যাপারটা মিথ্যা না। এবং গত রাতে তুমি ফোনে মেয়েটার সাথেই কথা বলছিলে আর হাসছিলে, আর হাসছিলে আর বলছিলে। ঠিক না?"
--"মে-মে-মে-মেয়ে পেলি কোথায় এর মধ্যে। আমি কথা বলছিলাম আমার এক বন্ধুর সাথে।
"
-"আচ্ছা, খুব বোঝা হয়েছে। এবার তুমি না হয় ঘরে গিয়ে জামাইবাবু সাজো। নাকি আমিই সাজিয়ে দেব। "
ভাইয়া ততক্ষণে লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে। আমার কান ধরে বলল, "তুই বড্ড বেয়াদপ হয়ে গিয়েছিস।
এখন যা করছিলি তাই কর। "
ভাইয়া তার ঘরে চলে গেল। আমার আর বিড়ালের কর্মকান্ড দেখবার ইচ্ছা নেই। বাচ্চাগুলো নিশ্চিন্ত মনে খাচ্ছে। দুনিয়ার আর কোন চিন্তা এখনও ওদের মাথায় ঢুকেনি।
চলবে........... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।