(আমাদের বাসায় প্রথম বিড়াল আনা হয় যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি। এগুলো নিয়ে আগে অনেকগুলো পোস্ট দিয়েছি ব্লগে। ক্লাস সেভেনে থাকতে এই বিড়ালটাকে নিয়ে একটা গল্পও লিখে ফেলেছিলাম। ঐ সময় আবার নিজেকে বিরাট সাহিত্যিক মনে করতাম কি না। গল্পটা এখন পড়লে বুঝি খুবই হাস্যকর, আর একটু বিরক্তিকরও।
ব্লগে দিব কি দিব না চিন্তা করতে করতে দিয়েই ফেললাম, তাও আবার কোনরকম এডিটিং ছাড়াই। এখন আপনারাও একটু বিরক্ত হন। )
১.
আমাদের একটা পোষা বিড়াল আছে। সে একটা মেনি বিড়াল। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের পাড়ায় কোন হুলো বিড়াল নেই।
কিন্তু তাতে কি এসে যায়। মেনি বিড়াল আমার সাথে খুব খেলা করে। হুলো বিড়াল নেই বলে তার মনে খুব দুঃখ আছে বলে মনে হয় না। আমার বিড়ালটার নাম সাইমন। বাদামী রঙের বিড়াল এটা।
সাধারণত বাদামী রঙের বিড়ালের নাম রাখা হয় বাদামী কিংবা ব্রাউনি। কিন্তু আমাদের বিড়ালটার সে নাম রাখা হয়নি। আমার মনে হয় সাইমন নামটা বিড়ালেরও খুব পছন্দ। কারণ সাইমন বলে একটা ডাক দিলেই সে যেখানেই থাকুক দৌড়ে আসে।
যাক সে কথা, যা বলতে চাচ্ছিলাম তা হল, আমাদের পাড়ায় একবার একটা হুলো বিড়াল এল।
সাদা-কালো রঙের। আমি অবশ্য জানতাম না, সাদা-কালো রঙের হুলো হয়। তবে জানতে পারলাম সাইমনের বর্তমান মেজাজ দেখে। পাড়ায় আরও মেনি বিড়াল আছে, যাদের দিকে সাইমন ফিরেও তাকায় না। কিন্তু এই নবাগত বিড়ালটির প্রতি সাইমন খুবই আগ্রহ প্রকাশ করে।
প্রায়ই দেখি জানালায় বসে সাইমন ঐ বিড়ালটির দিকে তাকিয়ে আছে। সাইমনের জন্য আমরা একটা বিষয়ে পুরোপুরি স্বাধীনতা দিয়েছি, তা হল সে যখন খুশি বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে পারবে এবং আসতে পারবে। কিন্তু ঐ বিড়ালটা আসবার পর থেকে সাইমন বাড়ি থেকে বেরই হয় না। যেন আমরা তাকে একঘরে করেছি।
এ তো গেল প্রতিদিনের কথা, এখন বলি বর্তমান অর্থাৎ এই মুহূর্তের কথা।
আজ ঘুম থেকে উঠে দেখি সাইমন আমার পাশে নেই। আমি গেলাম জানালার পাশে। দেখি বাগানে সাইমন আর সেই সাদা-কালো বিড়টা। তারা যে কী করছে সেটা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। তা যাই হোক, এখন নাস্তা খাবার সময় সে ঠিকই আমার পায়ের কাছে এসে মিউ মিউ করছে একটু নাস্তার আশায়।
আমি ওর ব্রেকফাস্ট দিলাম। সে মহানন্দে খেয়ে আবার বাইরে চলে গেল। কোথায় গেল তা-ও আর বলে দিতে হবে না।
যাক গে, আমি নাস্তা খেয়ে স্কুলে যাবার জন্য তৈরী হলাম। স্কুলে যাবার আগে বাগানের দিকে একবার দৃষ্টি দিলাম।
যা দেখলাম, তাতে মনে হল তাকানোটা উচিৎ হয়নি আমার। বিড়ালেরও তো লজ্জা শরম বলতে কিছু আছে। স্কুলে গিয়ে ক্লাসে বিশেষ মনোযোগী হতে পারলাম না। সাইমনই যদি এর কারণ হয়, তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। স্কুল থেকে ফিরে দেখি সাইমন আমার বিছানায় লম্বা হয়ে ঘুমুচ্ছে।
মাঝে মাঝে একটু নড়াচড়া করছে, একেবারে মানুষের মত করে। আমি ওকে হাত বুলিয়ে আদর করে দিলাম। তারপর কাপড় চোপড় বদলে একটু নাস্তা খেয়ে ভাইয়ার ঘরে গেলাম। ভাইয়া বিছানায় শুয়ে আছে। জিজ্ঞাসা করলাম,
-"ভাইয়া, সাইমন সম্পর্কে কিছু বলতে পারো?"
--"কী আবার বলব?"
-"না মানে, কী করছে, না করছে।
"
--"তোর বিছানায় ঘুমুচ্ছে। "
-"আহ্! আমি কি সেই কথা বলেছি নাকি?"
--"তাহলে কী?"
-"কী আবার কিছুদিন পরেই দেখবে। "
--"কী দেখব?"
-"ছানা। "
--"কী? দুধের ছানা? তুই বলতে চাস কিছুদিন পর দেখব যে সাইমন দুধের ছানা বানিয়ে খাচ্ছে?"
-"আরে ধ্যাৎ! বোঝ না কেন? বিড়ালের ছানা। "
--"তাই বুঝি।
তা তুই জানলি কী করে?"
-"ধ্যাৎ! তুমি একটা পাগল। "
আমি আমার ঘরে চলে এলাম। সাইমন তখনও ঘুমুচ্ছে।
চলবে........... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।