"কালচার মিডিয়া" লিচুগাছের একমাত্র শাখা।
পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ ও শান্তির আশ্রয় হিসেবে মানুষ বারবার ফিরে আসে প্রিয়তমা স্ত্রীর কাছে, প্রিয় সন্তানদের মুখ দেখে কার না মন ভাল হয়ে যায়। কিন্তু সেই নারিকুল যখন ঘাতকদের রুপে হাজির হয় তখন সমাজ আর সুস্থ থাকেনা। সেরকম একটি ঘটনায় নির্মমভাবে প্রান হারায় সেনাবাহিনীর বেসামরিক কর্মকর্তা মার্টিন সরকার। স্ত্রীর ‘হত্যা-ষড়যন্ত্র’ থেকে তিন দফায় বেঁচে গিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর বেসামরিক কর্মকর্তা মার্টিন সরকার।
মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন নিজের প্রাণ। একই সঙ্গে দু’টি কন্যা সন্তানের ভবিষ্যৎ ও সুন্দর জীবনের কথা ভেবে স্ত্রী রুমা সরকারকে ক্ষমাও করেছিলেন একাধিকবার। কিন্তু হায়রে নিয়তি! ক্ষমার প্রতিদানে এমন নির্মম ট্র্যাজেডির শিকার হবেন মার্টিন- তা হয়তো কল্পনাও করেননি। কিন্তু তা-ই হয়েছে। ঘাতকরূপী স্ত্রী ও দুই কন্যার হাতেই তিনি খুন হয়েছেন।
গতকাল পুলিশের কাছে পিতাকে হত্যার লোমহর্ষক স্বীকারোক্তি দিয়েছে মার্টিনের দুই কন্যা জয়া (১৬) ও অদ্বিতা (১৪)। আরও তথ্য আদায়ের জন্য আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেল গেটে দু’দিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে। শাহ্ আলী থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে মার্টিনের দীর্ঘদিনের পারিবারিক কলহ ছিল। তার দুই মেয়ের সঙ্গে একাধিক যুবকের প্রেম ও মেলামেশার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মার্টিন। এসব কারণেই গত ১২ই জুন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও তাদের প্রেমিক মামুন একযোগে মার্টিন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়।
প্রথমে কৌশলে ভাতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। পরে অচেতন হয়ে পড়লে তারা একযোগে হাত-পা, মুখ চেপে ধরে ও গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ছুরি দিয়ে মার্টিনের পুরুষাঙ্গ বিচ্ছিন্ন করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। (এ যেন ঠিক ঢাবি শিক্ষক রুমানার নাক কামড়ে নেয়ার মত ঘটনা)এরপর মধ্যরাতে মামুন ও তার দুই সহযোগী মাইক্রোবাসযোগে মার্টিনের লাশ মিরপুর বেড়িবাঁধে ফেলে দেয়। পরের দিন সকালে শাহ্ আলী পুলিশ অজ্ঞাত পুরুষ হিসেবে মার্টিনের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এর একদিন পরে পত্রিকায় খবর পড়ে মার্টিনের কর্মস্থল সেনবাহিনীর ইন্সপেক্টরেট ইলেকট্রোনিক অ্যান্ড ইক্যুইপমেন্ট (আইই অ্যান্ড ই) ইউনিটের লোকজন মর্গে গিয়ে তার লাশ শনাক্ত করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান বলেন, ঘাতক স্ত্রী রুমা সরকার জিজ্ঞাসাবাদে স্বামীকে হত্যার আগে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছে। তবে সে অতিশয় ধূর্ত। খুনের কথা সরাসরি স্বীকার না করে বলে, ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে জয়া ও অদ্বিতার বন্ধুরা তার স্বামীকে হত্যা করেছে। তিন দিনের রিমান্ড শেষে আজ মার্টিনের স্ত্রী রুমাকে আদালতে হাজির করা হবে।
ওসি আনিসুর রহমান বলেন, রুমা ও মার্টিনের ১৮ বছর বিবাহিত জীবনের বেশির ভাগই সন্দেহ-অবিশ্বাস ও কলহের মধ্যে কেটেছে। মার্টিনের থেকে রুমা প্রায় ৬-৭ বছরের ছোট। এরা দু’জনে প্রেম করে বিয়ে করেছিল বলে পুলিশের কাছে তথ্য দিয়েছে। এদিকে মার্টিন হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট ইউনিট ওই পরিবারকেই প্রথম সন্দেহ করেছিল। পরে ওই সূত্র ধরেই পুলিশ মার্টিন হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে।
তদন্তের শুরুতেই মার্টিনের স্ত্রী রুমা সরকারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে পীরেরবাগ স্টাফ কোয়ার্টারের বাসা থেকে দুই মেয়ে জয়া ও অদ্বিতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, স্ত্রী রুমা স্বামীকে সব সময় সন্দেহের চোখে দেখতো। মনে করতো- অফিসের নাম করে বাইরে কোন মেয়ের সঙ্গে মেলামেশা করে। সেই অদৃশ্য মেয়ের পেছনেই সব টাকা-পয়সা খরচ করে।
স্ত্রীর এমন সন্দেহ বেশ পুরনো। ওই সন্দেহ পাত্তা দিতো না মার্টিন। বরং সংসারের প্রতি আরও বেখেয়ালি হয়ে ওঠে। হঠাৎ করেই ২-৩দিন বাসায় ফিরতো না। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে।
একপর্যায়ে রুমা ২০০৭ সালে মার্টিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় মিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। তবে মার্টিন দুই মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্ত্রীকে নিয়েই সংসার জোড়া লাগার চেষ্টা করেন। তাতেও মন গলেনি রুমার। স্বামীকে ফাঁদ পেতে হত্যার সুযোগ খুঁজতে থাকে।
এর কিছুদিন পর ভাতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দেয়। ওই বিষ মেশানো ভাত খেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে আশপাশের লোকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করেন মার্টিনকে। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে স্ত্রীর সঙ্গে চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। মিরপুর থানায় জিডি করেন।
সে যাত্রায় রুমা দুই মেয়ের কসম খেয়ে ভাল ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দেন। আবারও মন গলে মার্টিনের। দু’টি কন্যার কথা চিন্তা করে ক্ষমা করে দেন নিজের স্ত্রীর বিশ্বাসঘাতকতাকে।
চিরকাল নারীদের এমন মনভোলানো প্রলোভনে এভাবে কত পুরুষ হারিয়ে যাচ্ছে তার হিসেব হয়তো আমাদের নেই কারন পুরুষরা দিন দিন অবলা প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে। আসুন আমরা এর বিরুদ্দে সোচ্চার হয় প্রতিবাদী হয়।
আমরা চাই নারী পুরুষের মধ্য ঐক্য আর শান্তি।
সুত্র- View this link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।