আজ ৭ মার্চ, দিনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে পরিচিতি লাভ করেছে এক রক্তস্নাত দিন হিসেবে। ১৯৬৫ সালের ৭ মার্চ ছিল রোববার। বর্ণবাদের বিষবাষ্পে উত্তাল সারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্টিন লুথার কিং-এর অহিংস আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ জনতা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে সেলমা থেকে এগিয়ে চলেছে প্রাদেশিক রাজধানী মন্টোগোমারীর দিকে। এমনি সময় প্রতিপক্ষ শ্বেতাঙ্গ আর পুলিশ বর্বরোচিত হামলা চালায় এই মিছিলের ওপর।
রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ। আর ৭ মার্চ ১৯৬৫ দিনটি পরিচিতি পায় 'ব্লাডি সানডে' বা রক্তস্নাত রোববার হিসেবে। তবে যে ভাষণের জন্য মার্টিন লুথার কিং চির স্মরণীয় হয়ে আছেন, তা উচ্চারিত হয় ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন শহরে। এ দিন মিছিলের নগরীতে পরিণত হয় ওয়াশিংটন। কিং-এর সহকর্মী, বেকার যুবক, স্বাধীনতাকামী সাধারণ জনতা, ধর্মীয় নেতা, শ্রমিক নেতা এবং কৃষ্ণাঙ্গ নেতাদের নেতৃত্বে মানুষের ঢল নামে ওয়াশিংটন স্মৃতিসৌধ লিংকন স্কোয়ার পর্যন্ত।
বব ডিলন আর জন বয়েজের বিপ্লবী গানের সুরে উত্তাল জনসমুদ্রে একে একে বক্তব্য রাখলেন অন্য নেতারা। সর্বশেষে এলো মার্টিন লুথার কিং-এর পালা। প্রথমে সন্তোষ প্রকাশ করলেন স্বাধীনতার জন্য আয়োজিত মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সমাবেশে যোগদানের সুযোগ পাওয়ার জন্য। তুলে ধরলেন শ্বেতাঙ্গদের বৈষম্যমূলক আচরণ আর কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর নির্যাতন ও বঞ্চনার কথা। বললেন ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কোনো প্রাপ্তি নেই, যতক্ষণ নিগ্রোরা পুলিশের বর্ণনাতীত নির্যাতনের শিকার হবে।
ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কোনো প্রাপ্তি নেই, যতক্ষণ ভ্রমণক্লান্ত নিগ্রোরা শহরের হোটেল বা মোটেলে বিশ্রামের অধিকার পাবে। ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের প্রাপ্তি নেই, যতক্ষণ আমাদের শিশুরা 'কেবলমাত্র শ্বেতাঙ্গদের জন্য' লেখা সাইনবোর্ড দেখবে। আমি জানি, তোমরা কেউ এসেছ দূর-দূরান্ত থেকে। কেউ জেলের কুঠরী থেকে। কেউ পুলিশের টর্চার সেল থেকে।
তোমরা যার যার ঘরে ফিরে যাও। কিন্তু কাদা পানিতে ডুব দিয়ে থেক না। হয়তো আজ বা আগামীকাল আমাদের জন্য সংকটময় হবে। তবুও আমি স্বপ্ন দেখি, এই স্বপ্নগাথা আছে আমেরিকার অস্তিত্বে। আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন এই জাতি জাগ্রত হবে এবং মানুষের এই বিশ্বাসের মূল্যায়ন করবে, সব মানুষ জন্মসূত্রে সমান।
১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা ১ মিনিটে জেমসং আর্ল রে নামের এক আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান এই কৃষাঙ্গ মহানায়ক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।