বাংলাদেশে অবস্থান করে নিজের দেশের বিরুদ্ধে কখনো এমন হীন মন্তব্য করা সম্ভব হতো না । দেশ থেকে বের হয়েছি মাত্র তিন বছর কিন্তু অভিজ্ঞতা এতই তিক্ত যে নিজেকে বাঙ্গালী হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা পায় । আমি জানি দেশের দেশপ্রেমিকরা আমার প্রতি খুব ই ক্ষীপ্ত হচ্ছেন লেখাটি পড়ে কিন্তু করার কিছুই নেই পরিস্থিতির স্বিকার ।
দুবাইতে অবস্থান করছি । পরিসংখ্যান মতে এখানে ১০২ দেশের মানুষ বসবাস করে ।
বেশির ভাগ জাতি আমাদেরকে হীন ভাবে । আমি জানি বাংলাদেশ ভারত ছাড়া প্রতিবেশী অনেক দেশ থেকে উন্নত যেমন পাকিস্তান,শ্রীলংকা । কিন্তু কেউ এসব দেশের নাগরিককে ঘৃণা করেনা জানিনা আমরা কি দোষ করেছি । কেন জানি ওরা বাঙ্গালীদের পিছুই লেগেছে ।
তাদের চোখে বাঙ্গালীরা যেমন ঃ ১. অশিক্ষিত ২. ভাষা না জানা ৩. বিদেশী ভাষায় কথা বলার সময় নিজস্ব আঞ্ছলিকতার ব্যবহার ৪. কর্তব্য কর্মে অবহেলা ৫. নোংরা ৬. আনস্মার্ট ৭. অসৃজনশীল ৮. অস্বাভাবিক আচরণ ৯. প্রতারক ১০. অসৎকর্মে সহযোগী ১১. দালাল ইত্যাদি ইত্যাদি......
এবার একটু পরিষ্কার করে বলি, এস এস সি পাস করে এসে ক্লীনিং/গ্যারেজে কাজ করে কারণ তাদের শিক্ষাটা অনর্থক ।
জাতির কথা কি বলব বাংলা ভাষাটাই পঙ্গু । অন্য দেশের কোন লোকই এরকম জগন্য আঞ্ছলিক ভাষায় কথা বলেনা । কিছু কঠিন বাংলা বর্ণ দেখুন ( অ,ও,ঔ,ই,উ,জ,ঝ,য ,স,শ,ষ,ব,ভ,র,ড়,চ,ছ ) এই বর্ণগুলো উচ্চারণ করতে প্রায় ভুল হয়ে যায় । ইন্ডিয়া,ফিলিপিন বা অন্য কোন দেশের লোকের সামনে একটি শব্দ ও ভুল বলতে পারবেন না সাথে সাথে তারা ভুল ধরে দেবে এবং শুদ্ধ শব্দটি বলে দেবে । কোন ব্যক্তি নতুন বিদেশে আসলে যখন অন্য দেশের লোকের সংস্পর্শে আসে তারা বেশি বুঝতে গিয়ে zero কে jero বলে ।
এসময় বিদেশিরা সহজেই আমাদের শিক্ষাকে/দেশকে হেয় করে । অন্য দেশের লোককে কখনো আঞ্ছলিক ভাষায় কথা বলতে শুনিনি । কারো বাংলা নাম জসিম( উচ্চারণে যসিম বললে) হলে বিদেশীরা লিখে joshim অথবা zoshim এখানে ভুলটা কার ? আমাদের চলাফেরা কেমন দেখুন লুঙ্গি পরে মসজিদে যাওয়া,সুপারমার্কেটে যাওয়া ভিনদেশীদের চোখে একধম বেমানান, আসলেই ঠিক এটা কি শোভা পায় । লুঙ্গি এই পোশাকটা শুধুমাত্র বাসার ভিতরে পরার জন্যই যথেষ্ট এটা পরে বাইরে কেন যাব,একটা নোংরা প্যান্ট পরলেও কেউ কিছু মনে করেনা ।
কোন ছেলে বেকার হলে,পড়াশুনা না করলে বা যোগ্যতার অভাবে কিছু করতে না পারলে তখন ম-বাবারা চিন্তা করে বিদেশ পাঠানোর ব্যাপারে ।
বিদেশ আসা দরকার শিক্ষিতদের,চালাকদের কারণ অনেক বেশী কম্পিটিটিভ জব মার্কেট কে চ্যালেঞ্জ করার জন্য । কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য ও বাংলাদেশীদেরকে অনেক সময় অযোগ্য করা হয় কিন্তু সস্তা শ্রমের কারণে নিয়োগ পেয়ে যায় । যে বা যারা কোন অফিসিয়াল কাজে নিয়োজিত আছেন তাদের কেউই সুপারিশ ব্যতিত নিয়োগ পান নি । কারণ নিম্নমানের কাজ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে লোক নেওয়া হয় না । এজেন্টরা ফিলিপিন,ইন্ডিয়া,মিসর,লেবানন এবং ইউরোপ -আমেরিকা থেকে কাজের স্ট্যাটাস অনুযায়ী লোক নেই ।
এই পোস্ট পড়ে কেউ অপমানবোধ করবেন না এটিতো আমাদের মত ভুক্তভোগীদের অভাগা আত্মকাহিনী । অনেক বড় আকারে লিখার ইচ্চা থাকলেও সময়ের অভাবে পারছিনা । আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমরা চেষ্টা করলে এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে পারি । একবার দেখুনতো ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশীদের মধ্যে শারীরিক কোন পার্থক্য আছে কিনা । অবশ্যই একি রকম তবে কেন এই বৈষম্য ওরা কেন বলে বাঙ্গালীরা বে-আক্কেল,বোকা ।
দয়াকরে আপনাদের মন্তব্য দিন । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।