১৩ দিন আগে পিরোজপুর শহর থেকে একসঙ্গে এই দুই তরুণীর অন্তর্ধাণ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। তারা দুজন সমকামী এবং বিয়ে করেছেন বলেও কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম খবর প্রকাশ করলে তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেইসবুকে ব্যাপক আলোচনা হয়।
তবে পিরোজপুর সদর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলছেন, সম্ভবত সমকামিতার আড়ালে এটি নারী পাচারের ঘটনা।
পিরোজপুর পৌরসভার নিজ বাসা থেকে শীলা নিখোঁজ হওয়ার পর ২০ জুলাই তার বাবা কৃষ্ণকান্ত শীল সদর থানায় অপহরণ ও নারী পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, অপহরণের পর সানজিদা তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন শীলার বাবার কাছে।
এরপর গত মঙ্গলবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদীয়া হাউজিংয়ের একটি বাসা থেকে শীলাকে উদ্ধার করে র্যাব। এ সময় সানজিদাকেও আটক করা হয়।
আটকের পর সানজিদা দাবি করেন, তিনি ও শীলা সমকামী এবং ‘বিয়ে’ করেছেন। র্যাবের কাছে বলা তার এই বক্তব্য ধরেই ফেইসবুকে আলোচনা শুরু হয়।
বুধবার বিকালে শীলা ও সানজিদাকে পিরোজপুর নেয়া হলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আলী মাসুদের কাছে জবানবন্দি দেন তারা।
আদালতের আদেশের পর রাতে সানজিদাকে কারাগারে পাঠায় পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশ। শীলাকে তুলে দেয়া হয় পরিবারের কাছে।
পিরোজপুর সদর থানার ওসি রাজ্জাক মোল্লা বলেন, “প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, দুই তরুণীর সম্পর্কের আড়ালে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের বিষয় জড়িত। তদন্ত শেষে মূল রহস্য উন্মোচিত হবে। ”
সানজিদার বিরুদ্ধে সদর থানায় আরো একটি অপহরণের মামলা ছাড়াও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে শীলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি খুবই অসুস্থ। এ ব্যাপারে এখন কিছু বলতে পারব না। ”
সানজিদার বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায়। তার বাবা চাঁদপুরে চাকরি করেন। তবে পিরোজপুর শহরে ভাড়া থেকে কলেজে পড়েন তিনি।
শীলার মা কনক রাণী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুই মাস আগে সানজিদা তাদের বাসার পাশেই একটি রুম ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সে শীলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে।
শীলার বাবার করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদল কৃষ্ণ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সানজিদা তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়ার পর তিনি নিজে শীলার বাবা সেজে তার সঙ্গে কথা বলেন এবং ফাঁদে ফেলার জন্য দেড় লাখ টাকায় সমঝোতা করেন।
পরে মঙ্গলবার র্যাবের সহায়তায় রাজধানী থেকে তাদের উদ্ধার করেন বলে জানান এসআই বাদল।
তদন্ত কর্মকর্তা আরো জানান, শীলার ইচ্ছাতেই তার বাবা-মায়ের কাছে ফেরত দেয় আদালত।
এসআই জীবন জানান, গত রমজানেও এক তরুণীকে অপহরণের অভিযোগে সানজিদার বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা হয়েছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।