স্বপ্ন দেখাটা অভ্যাস হয়ে গেছে, আকাশ-কুসুম তো বটেই
এপ্রিলে খুব বেশি মুভি দেখা হয় নাই। তার মধ্যে আবার কয়েকটা ছিল রিভিশন। নতুন দেখা মুভিগুলোর মধ্যে কয়েকটা নিয়ে অল্পস্বল্প কথা।
১. Confucius
আই.এম.ডি.বি. রেটিং: ৬.০/১০
আমার রেটিং: ৫.৫/১০
কনফুসিয়াসের নাম শুনেন নাই এরকম মানুষ মনে হয় খুব কমই পাওয়া যাবে। এরকম এক মনিষীকে নিয়ে মুভি অনেক প্রত্যাশা নিয়ে দেখতে বসেছিলাম।
অসাধারণ মিউজিক ও ক্যামেরার কাজে শুরুটাও ছিল দুর্দান্ত। শিষ্যদের কাছে ভীষন জনপ্রিয় পন্ডিত কনফুসিয়াস খুব সহজে শাসক শ্রেণীরও নজর কাড়েন। একসময় তিনি নিজেও জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। মুভির প্রথম এক ঘন্টায় তাই দেখা যায় মাত্রাতিরিক্ত যুদ্ধ। যুদ্ধ ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে স্পেশাল ইফেক্ট দেখে বোঝা যায় মুভির বাজেটে পয়সার কোন কমতি ছিল না।
ভেঙ্গে ছোট ছোট রাজ্যে পরিণত হওয়া রাজ্যগুলোকে একীভূত করার চেষ্টা চালান কনফুসিয়াস। কিন্তু তার সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। নির্বাসিত হন তিনি। পরের এক ঘন্টা তিনি শিষ্যদের নিয়ে ঘুরে বেড়ান এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে। খুবই বিরক্তিকর এক ঘন্টা।
একসময় পন্ডিত কনফুসিয়াসকে ভুলে শুধু দেখছিলাম বিরক্তিকর এক কনফুসিয়াস চরিত্রকে। মনে হচ্ছিলো কখন তার শিষ্যদের নিয়ে একটু বসবে, তাদের জ্ঞানদান করবে।
যে কনফুসিয়াসকে চিনে না এই মুভি দেখে সে শুধু ভুল ধারণাই পাবে। তার কাছে ইপ মান কে মনে হবে আরো বড়মাপের ব্যক্তি। অথচ দু হাজার বছর পরেও চীনে কনফুসিয়ান তত্ত্বের প্রভাব শুধু রাজনীতি ও সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে নয় , চাইনিজদের চিন্তাধারা ও আচার-আচরণেও আছে।
কেউ কেউ তো কনফুসিয়ান তত্ত্বকে চীনের ধর্মীয় চিন্তাধারা হিসেবে তুলে ধরেন।
তবে কাহিনী বা পরিচালনা যত দুর্বলই হোক, মুভির সেট তৈরিতে ছিল দক্ষতার ছাপ। খৃষ্টপূর্ব ৫-৪ শতাব্দীর আবহ ভালভাবেই পাওয়া যাবে এই মুভিতে।
২. The Green Hornet
আই.এম.ডি.বি. রেটিং: 6.২/১০
আমার রেটিং: ৪.০/১০
কৌতুক আর ভাঁড়ামির মধ্যে যে সূক্ষ্ণ ফারাক আছে সেটা বোধ হয় জানা নেই পরিচালক মিশেল গন্ড্রির-এর। না হলে এরকম স্থূল ভাঁড়ামি করে দর্শক হাসাতে চাইতেন না।
ভাবতে অবাক লাগে এই লোকের হাতেই তৈরি Eternal Sunshine of the Spotless Mind ।
নতুন এক কমিক হিরো মুভি Green Hornet। প্রধান চরিত্র ব্রিট অন্য সব সুপারহিরো মতোই পত্রিকার সাথে জড়িত। তার বাবা পত্রিকার মালিক। বাবার মৃত্যুর পর বাই ডিফল্ট সে মালিক বনে যায়।
তার সাথে দেখা হয় বাবার কর্মচারী কাটোর সাথে। কাটো ভীষণ ট্যালেন্টেড ও মার্শাল-আর্টপটু। এ ক্ষমতা দেখে ব্রিটের খায়েশ জাগে সুপারহিরো হবার। তাই মাস্ক লাগিয়ে দুইজন মাঠে নামে শয়তান বিতাড়ন অভিযানে। সেই সাথে “গ্রীন হর্নেট” পরিচয়ে নিজেই পত্রিকায় নিজের খবর ছাপতে শুরু করে।
আর চলতে থাকে ছ্যাবলামি। বাজে স্ক্রিপ্ট আর বাজে অভিনয় দুই মিলে কমপ্লিট ফিয়াস্কো। এর সিকুয়াল তৈরির আগে পরিচালক দশবার ভাববেন আশা করি।
ও,বলতে ভুলে গেছি, এখানে ভিলেইন হল ক্রিস্টোফ ওয়ালটজ । চিনতে পারছেন? ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডের সেই খাসা ভিলেইন।
আপনার হাতে যদি সময় কাটানোর মতো আর কিছুই না থাকে তাহলে ইভা রহমানের গান শুনেন, তাও এটা দেখার দরকার নাই। মেজাজ বিগড়ানোর সমূহ সম্ভাবনা আছে।
৩. Megamind
আই.এম.ডি.বি. রেটিং: ৭.৩/১০
আমার রেটিং: ৮.০/১০
গতবছর হাউ টু ট্রেইন ইয়োর ড্রাগন -এর পর ড্রিমওয়ার্কসের আরকটি হিট। সুপারহিরো/এনিমেশন মুভি হিসেবে কাহিনীর নতুনত্ব এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। গল্পের টুইস্ট একঘেয়েমির ধারেকাছেও ঘেঁষতে দেয় নাই।
মেগামাইন্ড হলো ভিনগ্রহ থেকে আসা এক জীব। তার বাবা মা ব্ল্যাক হোলে হারানোর আগে ছেলেকে পৃথিবী পাঠিয়ে দেয়। শিশু মেগামাইন্ডকে রক্ষা করার জন্য তার সাথে আসে মিনিয়ন। মেগামাইন্ড একসময় বুঝতে পারে তার নিয়তি হলো ভিলেইন হওয়া। সে সহজেই তার শহরের আরেক সুপারহিরো মেট্রোম্যানকে হারিয়ে দেয়।
তখনি অনুভব করে একজন হিরো ছাড়া তার কোন মূল্য নাই। নতুন হিরো বানাবার ধান্দায় ঘটনাচক্রে নিজেই হয়ে যায় হিরো!
গান নির্বাচন ও সেগুলোর টাইমিং ছিল ফাটাফাটি। ওজি অসবোর্ন, এসি/ডিসি, মাইকেল জ্যাকসন, গানস এন রোজেস এর গানগুলোর ব্যবহার মুভিটিকে চাঙ্গা করেছে। তাই মুভিটি দেখে না থাকলে দেখে ফেলেন।
৪. গেরিলা
আই.এম.ডি.বি. রেটিং: ৯.৮/১০
আমার রেটিং: ৮.০/১০
গেরিলা নিয়ে নতুন করে তেমন কিছু বলার নাই।
ইতোমধ্যে আপনারা এর শ-খানেক রিভিউ পেয়ে গেছেন আশা করি। ভুল-ভাল ধরতে চাইলে অসংখ্যই ধরা সম্ভব। কিন্তু আমি সেগুলো ওভারলুক করতে চাই। এরকম একটা মুভি তৈরির উদ্যোগের জন্য। যে জামাতের জন্য কিছু মানুষের মনে তৈরি হয়েছে ইসলাম বিদ্বেষ তাদের মুখোশ মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।