ভারতীয় কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ছেলে রাহুল গান্ধীকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তর প্রদেশের পুলিশ।
রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আরো গ্রেপ্তার করেছে উত্তর প্রদেশ রাজ্য কংগ্রেসের প্রধান রিতা বহুগুণা যোশী, কংগ্রেস নেতা দ্বিগবিজয় সিং ও রাজবাব্বর।
উত্তর প্রদেশের নইদায় কৃষকদের একটি ধর্ণা কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ভাট্টা পারসাউলে এ গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলে স্থানীয়রা।
পুলিশের মিরাট রেঞ্জের ইন্সপেক্টর জেনারেল রজনীকান্ত মিত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, রাহুল গান্ধীকে দ-বিধির ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি টাটা গাড়ীতে করে রাহুল গান্ধীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা জানায়নি পুলিশ।
বস্তুত কৃষকদের এই ধর্ণাটি ছিলো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর সরকারের বিরুদ্ধে কৃষকদের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ।
গ্রেপ্তারকৃত রাজ্যকংগ্রেস সভানেত্রী রিতা বহুগুণা যোশী তাদের এই গ্রেপ্তারকে মায়াবতী সরকারের কাপুরুষোচিত কর্মকা- বলে অভিহিত করেছেন।
এদিকে রাজ্যকংগ্রেস এ গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, এ গ্রেপ্তার ও দমনমূলক কাজের মধ্য দিয়ে মায়াবতী নিজের কবর খুঁড়ছেন।
অপরদিকে রাজ্য সরকারের তরফে উত্তর প্রদেশ ক্যাবিনেট সচিব শংকর শেখর সিং লক্ষেèৗয়ে বলেছেন, ‘রাত আটটার দিকে জেলা প্রশাসনের কাছে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ভাট্টা পারসাউলে সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু তারা আইন-শৃঙ্খলা বিঘিœত করার পাঁয়তারা করায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সেটা তারা না মানায় কংগ্রেস নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্য সীমান্তের বাইরে নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
এর আগে কৃষকদের ধর্ণায় উপস্থিত হয়ে রাহুল গান্ধী তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের নারী-পুরুষদের ওপর যে সহিংসতা চালানো হয়েছে সেটা আমি দেখেছি। এখানে যা ঘটেছে একজন ভারতীয় হিসেবে তাতে আমি লজ্জাবোধ করছি। রাজ্য সরকার তার নিজের নাগরিকদের ওপর হামলে পড়েছে। আমি যে সহকারী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে ভ্রমণ করছিলাম তিনি আমাকে বলেছেন- যেন এখানে নকশালবাদের পত্তন হয়েছে। ’
রাহুল গান্ধী ধর্ণায় কৃষকদের সঙ্গে প্রায় ১২ ঘণ্টা বসেছিলেন।
তাদের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘আমি আপনাদের বলতে চাই যে, আপনাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। যতোক্ষণ পর্যন্ত না আপনাদের কাজ সম্পাদিত হয়েছে ততোক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দল কংগ্রেস আপনাদের ছেড়ে যাবে না। ’
তিনি এ ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার গ্রামবাসী সমবেত করতালিতে উল্লাসে ফেটে পড়ে।
ভাট্টা পারসাউল গ্রামটির কৃষকরা তাদের কাছ থেকে অধিগ্রহণকৃত জমির জন্য মায়াবতী সরকারের কাছে আরো বেশি ক্ষতিপূরণ দাবি করছিলেন।
কৃষকদের যুক্তি হলো- প্রতি বর্গ মিটারে সরকার তাদের মাত্র আটশ’ রুপি দিচ্ছে।
অথচ ডেভেলপাররা দিচ্ছে তিন হাজার দু’শ’ রুপি করে।
উল্লেখ্য, উত্তর প্রদেশে দলিত সম্প্রদায়ের নেত্রী মায়াবতীর সমাজবাদী দল ক্ষমতায়। বিভিন্ন কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সাথে মায়াবতীর আচরণ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সমালোচিত হয়ে আসছে।
জমি অধিগ্রহণ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে কৃষকরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।