আমি বাংলার...।
ঢাকা, মে ১১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির সমালোচনার পাশাপাশি নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষেও মত জানিয়েছেন সাবেক সেনাশাসক এইচএম এরশাদ। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংসদে আসন দেওয়ার প্রস্তাবও তুলে ধরেছেন তিনি।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, "তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাজনীতিবিদদের কপালে কলঙ্কের তিলক। আমাদের (রাজনীতিবিদ) অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না- এটা হতে পারে না।
"
তবে আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হওয়া উচিত বলে মনে করেন সাবেক এ সামরিক আইন প্রশাসক। তার যুক্তি, এটা না হলে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে।
তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নির্দিষ্ট করা না থাকলে তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন এরশাদ।
মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রধান বলেন, "আওয়ামী লীগ আর বিএনপি এক জন লোককে মনোনয়ন করবে- তা তো হতে পারে না। সব দল মিলে একটা লোককে মনোনয়ন করবে, এমন লোক কি দেশে আছে?"
বনানীতে নিজের দলীয় কার্যালয়ে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন এরশাদ।
তবে মঙ্গলবার দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এসব কথা বলেন তিনি।
বর্তমান ক্ষমতাসীন জোটে থাকলেও জোটগত নির্বাচনের বিরোধিতা করেন এরশাদ। তিনি বলেন, "এখন ক্ষমতার রাজনীতির কারণে জোটগত নির্বাচনের প্রবণতার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে দলীয় নীতি-আদর্শ অনেক সময় ঠিক থাকে না। "
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি অর্থাৎ প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে সংসদের আসন বণ্টন হলে জোটগত নির্বাচনের প্রবণতা দূর হবে বলে মনে করেন তিনি।
এরশাদ জাতীয় সংসদের আসন ৪০০ করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। তার প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রত্যেক দল তাদের প্রার্থীর তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দেবে।
প্রার্থীদের মধ্যে ৫০ শতাংশ হতে হবে সাধারণ প্রার্থী, ৩০ শতাংশ মহিলা, ১০ শতাংশ করে সংখ্যালঘু ও পেশাজীবী। পেশাজীবী কোটায় থাকবেন শিক্ষক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক নেতৃত্ব।
জাতীয় পার্টির এ প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে কোন দল কোন কোটায় কত আসন পাবে।
নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে কোন আসনে কোন দলের প্রার্থী প্রতিনিধিত্ব করবেন। সে ক্ষেত্রে দলের প্রাপ্ত ভোটাধিক্য প্রথম বিবেচনা হিসেবে গণ্য করা হবে।
এরশাদের আগে বামপন্থী বিভিন্ন দলও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে ৩০ দশমিক ৮১ ভাগ ভোট বিএনপি ১৪০ এর বদলে ৯৩টি আসনে পেতো। ৩০ দশমিক ০৮ ভাগ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ ৮৮টি আসন না পেয়ে ৯০টি আসন পেতো।
আর ১১ দশমিক ৯২ ভাগ ভোট পেয়ে জাতীয় পার্টি ৩৫ এর চেয়ে একটি আসন বেশি পেতো।
একইভাবে ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি ৪৮টি এবং ২০০১ সালে ২১টি আসন পেতো।
সংসদীয় আসন শূন্য হলে উপনির্বাচন না করে সংশ্লিষ্ট দলের প্রার্থী তালিকা থেকে নতুন প্রতিনিধি নির্বাচনের সুপারিশ করেছেন এরশাদ।
বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতির সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, এ থেকে উত্তরণের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। তা না হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তো কিছু করতে পারবেই না, এমনকি স্বাধীন নির্বাচন কমিশনও প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল এনে দিতে পারবে না।
সংসদে নারী আসনেও সরাসরি ভোটে নির্বাচনের সুপারিশ করেছেন এরশাদ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসইউএম/এমআই/১৫০০ ঘ.
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।