পূজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! মূর্খরা সব শোনো, মনুষ এনেছে গ্রন্থ! 'গ্রন্থ' আনেনি মানুষ কোনো!
লালনের গান
শামসুর রাহমান
যখন তোমার বাহুর বাসরে
মগ্ন ছিলাম চন্দ্রিত তন্দ্রায়,
আলো-আঁধারির চকিত সীমায়
লালনের গান দূর হতে এলো ভেসে।
সে গানের ধ্বনি স্তব্ধ সায়রে
ফোটায় নিবিড় অজস্র শতদল।
ধুলোয় উধাও সে গানের কলি
গ্রামছাড়া পথে মনের মানুষ খোঁজে।
শৈশব গাঁথা জামতলা আর
কনক দুপুরে শ্রাবণ দিঘির ডুব,
ঘোরলাগা ভোর, অভিজ্ঞ সাঁঝ-
সবি আছে বুঝি স্মৃতির অভ্রে ডুবে।
কে আসে ঘাসের স্তব্ধ সবুজে
নীরবে নগ্ন শুভ্র চরণ পেলে?
সে যে সেই গান স্পন্দনে যার
আঁধারেও চির মনের মুকুল জ্বলে।
অবচেতনার গহন ধারায়
তারাময় মনে জাগে স্বপ্নের পলি।
একটি চাঁপার বিন্দুতে মেশে
সব দ্বন্দ্বের ঘূর্ণিত অবসান।
সে গানের সুর জীবনে ঝরায়
জুঁই চামেলী অরূপ সুরভী আজো
অন্তরাগের ধ্যানী বাসনায়
জ্বলে উঠে ক্ষীণ দীপ্ত চন্দ্রকলা।
কাল মন্থনে চেতনায় জাগে
অতিতের দ্বীপ স্মৃতির প্রবালে লাল।
বর্তমানের মুক্ত আঁধারে
ভবিষ্যতের দীপাবলি ওঠে ভেসে।
সে গানের ধ্বনি ফিরে ফিরে আসে
মর্ত্যজীবীর রঙিন ধূলোর পথে
তারই মাধুর্যে ঋতুতে ঋতুতে
রৌদ্রছায়ায় শান্ত বাগানে বাঁচি।
সে গান আমার বৈশাখী দিনে
যাত্রী-প্রাণের তৃষ্ণার সরোবর।
তারই টানে চলি বাঁকাচোরা পথে
লালনের গান স্মৃতির দোসর সে যে...।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।