এত লেখালেখির কি আছে তাইতো বুঝলাম না!!
[আমার এই লেখাটি বহু আগের। আমার H.S.C পরীক্ষার ঠিক আগের “মা-দিবস” – এর সময়ে লেখাটি লিখেছিলাম। ভেবেছিলাম যে প্রথমআলোর ছুটিরদিনে পাঠাব। কিন্তু কেন যেন আর পাঠানো হয়নি। তাই ভাবলাম আজকের এই মা-দিবসে লেখাটি দিই।
]
যদি আমার লেখাটি ছাপা হয়ে থাকে তবে আমি এ ব্যপারে নিশ্চিত যে শিরোনামটি দ্বারা আমি সবার দৃষ্টি আকর্ষনে সক্ষম হয়েছি। “মা”- শব্দটি শুনলেই আমাদের চিন্তাচেতনায় কোমল, স্নিগ্ধ, স্নেহভরা একটি মুখ ভেসে ওঠে। সেখানে শিরোনাম হচ্ছে “একজন পঁচা মা”!! থমকে যাবার মতই ঘটনা বটে। কিন্তু ‘হ্যাঁ’ – আমার মা আসলেই পঁচা। আসুন আপনাদেরকে আমার পঁচা মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।
আমার মা আমাকে একদমই ভালবাসেন না। আমি যখনই ছাদে ক্রিকেট খেলতে যাই – মা বাঁধা দেন। ধরাবাধা সময়ের চেয়ে একটু বেশি টিভি দেখলে তিনি বাঁধা দেন। সন্ধার পরে কম্পিউটারে গেমস্ খেলতে বসলে আমাকে বাঁধা দেন। আমি যখনই সাইকেল নিয়ে রাস্তায় নামি – মা আবারো বাঁধা দেন।
আমার মায়ের ধারণা আমি সাইকেল নিয়ে রাস্তায় নামলেই চতুর্দিক হতে শতসহস্র ট্রাক-বাস আমাকে চাপা দিতে দৌঁড়ে আসবে। আমার কানে মা সারাক্ষণ র্যাপগানের মত বলতে থাকেন – “পড়তে বস, পড়তে বস”। আমার সামনে ইন্টার পরীক্ষা - প্রতি সেকেণ্ডে আমাকে মা তা মনে করিয়ে দেন। আমার নাকের উপর নয় হাত পানি, সামনে পুলসিরাত – ইত্যাদি ইত্যাদি।
আদনান সামির সাথে নামের মিল রক্ষার্থেই বোধহয় দিন দিন বেলুনের মত ফুলতেছি।
তারপরেও আমার মায়ের চোখে আমি রোগা-পটকা। দিনরাত আমাকে এটা-ওটা খাওয়ানো তার মহান দ্বায়িত্ব। কারণ না খেলে আমি পড়ব কি করে। পরীক্ষার আগে শুধু গপ্গপ্ করে খেতে হয় - আর পড়তে হয়।
আমি জানিনা আমার মা এত্ত পঁচা হল কি করে।
তবে আমি দোয়া করি আমার মা আজীবন এমন পঁচাই থাকুক। আর যাদের মা আমার মতই পঁচা –তাদেরকে আমার তরফ হতে অভিনন্দন। আমি জানি হয়তোবা আমার লেখাটি ছাপা হবেনা, হয়তোবা আমার পঁচা মা কখনো জানবেনও না যে আমি তাকে কত ভালবাসি। আমার মা যদি লেখাটি পড়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে এটা কি লিখেছিস, তাহলে আমি বলব যে লেখাটি আমি লিখিনি। পঁচা মায়েদের কিছু কিছু মিথ্যা বললে তারা নিশ্চয়ই কিছু মনে করেন না।
মা-দিবসে সব মায়েদের আমার এই লেখাটি উৎসর্গ করলাম। সব মায়েরা শত-সহস্র বছর বেঁচে থাকুক - আর তাদের ভালবাসার বর্ষন করতে থাকুক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।