আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অতৃপ্ত পাগলামি

জীবন মানেই, অনিশ্চয়তায় গা ভাসিয়ে নিশ্চিন্তে পথ চলা।

মোহাম্মদপুর বাসস্টান্ডে দারিয়ে আছি প্রায় আধা ঘন্টা ধরে কিন্তু এখনো কোন বাস আসার খবর নেই। দেখতে দেখতে অনেক মানুষ জমা হয়ে গেছে বাসস্টান্ডে। এদিকে সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত হয়ে যাচ্ছে, আকাশের অবস্থাও খুব বেশি ভাল না, যখন তখন ঝর ব্রিষ্টি শুরু হয়ে যেতে পারে। যদিও এখনো গ্রীস্মকাল আসেনি তবুও কেন জানি অনেক বেশি ঝর ব্রিষ্টি হচ্ছে।

এদিকে লাস্ট সপ্তাহ চলছে ইউনিভারসিটিতে পরাশুনার চাপ ও কম না। তাই একটু বেশিই তারাহুরা করছিলাম। কিন্তু বাস যেন আজ মারা গেছে, আসছেই না। দারিয়ে আছি ঠিক বাস কাউন্টার এর পাশে, এমন ভাবে দারিয়েছি যেন আমার আগে কেউ টিকিট কাটতে না পারে। হঠাত করেই ফোন বেজে উঠল, আমি খুবি সাবধানতার সাথে ফোনটা ধরলাম, নতুন ফোন কিনেছি কিছুদিন আগে তাই একটু সাবধানে বের করি, পাছে কোনো চোর বা ছিন্তাইকারি দেখে ফেলে।

আজকাল চোর আর ছিন্তাইকারির পরিমান এতো বেশি হয়ে গেছে যে তারা এখন জাতিয় শত্রু। তিন চার দিন আগে ও আমার পাশের রুম থেকে এক্টা লাপ্টপ চুরি গেছে, চুরি হবার পর বেচারার সে কি কান্না। তার কোনো এক আত্তিয় বিদেশ থেকে পাঠিয়েছিল লাপ্টপ্টা। ওকে সেদিন সান্তনা দেবার জন্য কতকিছু যে বললাম তবুও বেচারার কান্না থাম্ল না। এখনো নাকি মাঝে মাঝে সে লাপ্টপ্টাকে স্বপ্নে দেখে।

স্বপ্নে লাপ্টপ্টা তাকে নানান রকম গান শুনিয়ে যায়। কত আজিব কিছিমের স্বপ্ন হয় মানুষের। ফোনে কথা বলতে বলতেই খেয়াল করলাম যে একটা মেয়ে এসে আমার ঠিক সামনে দারিয়ে গেছে। আমি হচকচিত হয়ে একটু পিছিয়ে গেলাম। মেয়েটা আমার জায়গাটা দখল করে নিয়ে কাউন্টারে বসা লোকটার সাথে ধমকের সুরে কথা বলা শুরু করলো।

মেয়েটার কথা শুনে মনে হচ্ছিলো দুনিয়ার সবচেয়ে দর্জাল মেয়ে সে। একটা মেয়েকে কখনই এত অমিষ্ট সুরে কথা বলতে দেখিনি আগে। বাসের জন্য তো আরো কত মানুষই অপেক্ষা করছে, এই মেয়েটার কেন এত মাথা ব্যাথা। আমার তখন মনে হচ্ছিল মেয়েটা হয়তো কোন রাজনৈতিক দলের নেত্রি হবে। তাছারা এতো সাহস নিয়ে কথা বলার মত খমতা কিভাবে আসে? মেয়েটার সাথে কাউন্টারম্যান এমন নিচু গলায় কথা বলছিল যে তার কথা আমি কিছুই শুনতে পেলাম না।

শুধু বুঝলাম সে রাস্তায় জ্যাম নিয়ে কিছু এক্টা বলছে। কিছুক্ষনের মাঝেই অনেক প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাস চলে আসলো, বাসটা মোটামটি ভরা। বাইরে থেকেই বোঝা যাচ্ছে ছিট খালি নেই। অনেকটা হতাশ হলাম। এতক্ষন দারিয়ে থাকার পরে আবার এখন বাসে দারিয়ে যেতে হবে।

টিকিট কেটে বাসে উঠলাম। তিল ধারনের মতো জায়গা নেই তবুও যাত্রী উঠেই যাছে। অনেক কষ্টে মহিলা ছিটগুলার পাশে একটু দাড়ানোর জায়গা পেলাম। বাসটা যখন চলতে শুরু করলো তখন খেয়াল করলাম ৩য় সাড়িতে সেই দর্জাল মেয়েটি বসে আছে। মেয়েটাকে দেখে মনে মনে আমার অনেক রাগ হলো।

আমি এতক্ষন দাঁড়িয়ে থেকেও ছিট পেলাম না অথচ মেয়েটা শুধুমাত্র মেয়ে হবার কারনেই মহিলা ছিটে বসতে পারলো। মনে হতে লাগলো কেন যে মেয়ে হয়ে জন্মালাম না। তাহলে অন্তত এত গরমের মদ্ধে বাসে দারিয়ে যেতে হতো না। আরো মনে হতে লাগলো মেয়েদের নানান জায়গায় নানান রকম সুবিধার কথা। বাস কিছুদুর এগিয়েছে, রাস্তায় জ্যাম এর কারনে থেমে আছে এখন।

এমন সময় আমার চোখ পরলো দর্জাল মেয়েটার চুলের দিকে, মেয়েটার চুল এতোই লম্বা যে বেনীটা একদম হাটুর কাছে চলে গেছে। আমার কেনো যেন লম্বা চুলের মেয়েদের অনেক ভাল লাগে। মনে হয় যাদের চুল লম্বা তাদের মন্টা অ অনেক লম্বা হয়। তারা অনেক কমল্মতি হয়। কিন্তু এই মেয়ের লম্বা চুলটা আমার বিরক্তির কারন হয়ে দারাচ্ছিলো।

বেনি বাধা চুলটা মাঝে মাঝেই আমার হাতের সাথে লাগতেছিল এবং আমি সুরসুরি অনুভব করছিলাম। এইবার ভাল করে খেয়াল করলাম, মেয়েটা দর্জাল স্বভাবের হলেও দেখতে কিন্তু খারাপ না। একটু শ্যামলা হলেও মুখের গরনে একটা অন্য রকম মায়া জরিয়ে আছে। ভাবতে শুরু করলাম এত মায়াবী চেহারার একটা মেয়ে কিভাবে এতো দর্জাল হতে পারে। ধানমন্ডি ১৫ নম্বর এ এসে বাস থামলো, মেয়েটার পাসের সিটে মাঝবয়সী একজন মহিলা বসে ছিলেন।

মহিলাটির ছিত থেকে উঠার প্রস্তুতি দেখে আমি খুবি খুশি হলাম। এখন অন্তত একটু বসে যেতে পারব। কিন্তু পরক্ষনেই মনে হলো যে এইটা এক্টা মহিলা ছিট। অন্য কোন মহিলাই এসে বসবেন এখানে। আবারো হতাশ হলাম।

কিন্তু বাসে তাকিয়ে দেখি আর কোন মহিলা আশে পাশে নেই। তারমানে যতক্ষন অন্ন কোন মহিলা না উঠেন ততক্ষন অন্তত বসা যাবে। এদিক ওদিক ২/১ বার তাকিয়ে বসে পরলাম মেয়েটার পাসের ছিটে। মেয়েটার পাশে বসাতে সে একটু জরোসরো হয়ে বসলো। মোহাম্মদপুর গিয়েছিলাম আসলে টিউশনি করতে।

সপ্তাহে ৩ দিন আসতে হয় এখানে। এত ভীর আর এত জ্যাম এর আগে কখনো দেখিনি। আজকে টিউশনির বেতন পেয়েছি তাই মনটা অনেক ভাল ছিল। প্রতিবার বেতন পাওয়ার পর স্টারে খেতে যাই। রাস্তায় যা পাই তাই কিনতে শুরু করি।

বন্ধুদের কে খাওয়াই। কিন্তু আজকে রাস্তার এই অবস্থা দেখে মেজাজটা এতই খারাপ হল যে সবকিছুই অশয্য লাগা শুরু হলো। তারপরেও আবার বসে আছি দর্জাল একটা মেয়ের পাসে। সবকিছু মিলিয়ে যেন দোজখ দেখে ফেললাম। বাসটা এতক্ষনে জিগাতলা বাসস্টান্ড পার হয়ে রাইফেলস স্কয়ারের সামনে আবার বিশাল একটা জ্যামে পড়েছে, খেয়াল করলাম বাইরে তুমুল বেগে ঝর শুরু হয়ে গেছে, সাথে চরম ব্রিস্টি।

যাই হোক অনেক গরমের পরে এই ঝরটার খুব দরকার ছিল। এখন অন্তত গরমের হাত থেকে একটু হলেও বাচা যাবে। বাসের অবস্থা খুব একটা ভাল না। পাশের কয়েকটা জানালা ভাঙ্গা, মনে হয় কিছুদিন আগে ঢাকা ইউনিভারসিটিতে ঘটে যাওয়া ভাংচুরের মধ্যে পড়েছিল হয়ত বাসটি। ইদানিং গাড়ি ভাংচুর করার জন্য কোন ইসু লাগে না, ইউনিভারসিটির পোলাপাইন সবসময় প্রস্তুত থাকে ভাংচুর করার জন্য, এইটা ওদের কাছে অনেকটা খেলার মতো, হয়ত অনেক আনন্দ পায় ওরা।

ভাঙ্গা জানালা দিয়ে ব্রিষ্টির পানি ছিটকে আসছিল ২/১ টা ফোটা আমার গায়ে এসেও পড়ল। আমার পাশে বসা দর্জাল মেয়েটার গায়ে অনেক পানি লাগছে, তাই মেয়েটা আমার দিকে একটু চেপে বসলো, আমার গায়ের সাথে মেয়েটির গা লেগে গেছে কেমন যেন শিহরিত হয়ে উঠল আমার গা। একটা আদিম অনুভুতি কাজ করতে লাগলো আমার মনে। যদি কোন মেয়ে এভাবে কোন পুরুষের গায়ে আশ্রয় নেয় তবে কোন পুরুষের সাধ্য আছে নিজেকে ঠিক রাখা। তবে আমার মনের মধ্যে একটা অজানা ভয় কাজ করতে লাগল।

এই মেয়ে কোন মলম পার্টি বা অজ্ঞান পার্টির কেউ নয় তো? সারা মাসের টিউশনির বেতন্ আমার পকেটে যদি নিয়ে যায়, সারামাস চলব কিভাবে? বাসা থেকে ত অনেক আগেই টাকা নেয়া বন্ধ করেছি, বাসা থেকেও টাকা নিতে পারব না। বন্ধু বান্ধব দের কাছে থেকে ধার করে চলতে হবে। অনেক রকম আজগুবি চিন্তাই মনের মধ্যে খেলা করে গেল। আমার খুবি অস্বস্তি লাগছিলো এই গায়ে গা মেলাণোর বাপারটা, আমি মুখ খুলে ভদ্রভাবে বললাম, excuse me আপু, আপনি কি একটু ঐ দিকে সরে বসবেন? প্রত্তুত্তরে খুবি মলায়েম কন্ঠে মেয়েটা বলল, ছিটের ঐ দিকটা ত পানিতে ভিজে গেছে, বসা যাচ্ছে না। মেয়েটা কে ত এতক্ষন দর্জাল মনে হচ্ছিল, কিন্তু এই কথা শোনার পর মনে হল আসলে মেয়েটা দর্জাল না।

মেয়েটা অনেক কমল্মতি। এতক্ষন একে নিয়ে কতকিছু যে ভেবে বসে আছি এটা ভেবেই গায়ে কাটা দিয়ে উঠল। আমি বললাম, আচ্ছা আপনি এইদিকে চেপে বসেন আমি দারিয়ে থাকি। মেয়েটি বলল, না না, আপনি দারাবেন কেন? আমিই চেপে বসছি। মেয়েটি তার আগের জায়গায় বসলো একটু সরে গিয়ে।

ততক্ষনে ব্রিষ্টি কমে গেছে, আখন আর পানি ছিটকে আসছে না, তাই তার সরে বস্তে সমস্যা হল না। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপু কোথায় যাবেন?মেয়েটি উত্তর করল, আজিমপুর, আপনি কোথায় যাবেন? আমি বললাম, আমিও আজিম্পুর যাব। আমি হঠাত করেই নির্বোধের মত প্রশ্ন করে বসলাম, আপনি কি সিঙ্গেল? কথাটি বলার পরেই মনে হলো, কি নির্বোধ আমি, এখনকার যুগে এই ধারি একটা মেয়ে সিঙ্গেল থাকবে এইটা আমি কিভাবে চিন্তা করলাম, যেখানে স্কুল পড়ুয়া মেয়েদেরও ২/৩ টা করে বয়ফ্রেন্ড থাকে সেখানে এই মেয়েটার বয়ফ্রন্ড না থেকেই পারে না। কথাটি বলার পরে নিজের জিহবাটা কেটে ফেলতে ইচ্ছা করছিল, যেন ভবিষ্যতে এমন নির্বোধের মত কথা আর না বলতে হয়। মেয়েটা বিচলিত না হয়ে সুন্দ্রভাবেই উত্তর করলো, একটা রিলেশন ছিল কিশুদিন আগে ব্রেকাপ হয়ে গেছে।

বাস চলছিল কচ্ছপের গতিতে, সাইন্সল্যাব থেকে আজিম্পুর পৌছাতে আধা ঘন্টারও বেশি সময় লাগল। এই সময়টা কেন জানি অনেক তারাতারি চলে গেল। মেয়েটার সাথে কথা বলতে বলতে আসছিলাম তাই হয়তো আইনেস্টাইনের আপেক্ষিকতার সুত্র মেনেই সময় দ্রুত চলে যাচ্ছিল। অনেক রকমের কথাই হল মেয়েটার সাথে। মেয়েটার সম্পরকে প্রায় সবকিছুই জেনে নিলাম আমি।

মেয়েটা আমার থেকে তিন বসরের সিনিয়ার, ইডেন কলেজে ফোর্থ ইয়ারে পড়ে সে, থাকে আজিম্পুরে একটা মহিলা হোস্টেলে। মেয়েটার বাবা নেই, আর্থিক অনটনের সংসার, মোহাম্মদপুরে একটা প্রাইভেট ফার্মে পার্ট টাইম চাকুরী করে সে নিজের খরচ চালায়। তার অফিসের সহকর্মিদের প্রতি সে খুবি বিরক্ত, তারা নাকি নানা ভাবে মেয়েটাকে নানান রকম কুপ্রস্তাব দেয়। এই থেকে ছেলে জাতির প্রতিই তার এক্তা ঘ্রিনা জন্মে গেছে। বাস আজিম্পুর বাসস্টান্ডে পৌছে গেছে, মেয়েটি নামবে এখানে।

বাস পলাশী পর্যন্ত যাবে, তাই আমার পলাশীতেই নামার কথা, কারন ওখান থেকে আমার হল মাত্র দুই মিনিটের রাস্তা। কিন্তু কি যেন মনে করে আমি মেয়েটার পিছে পিছে আজিম্পুরেই নেমে গেলাম। মেয়েটা আমাকে বলল, কি বাপার হলে যাবেন না? পলাশীতে নামলেই পারতেন। আমি বললাম সমস্যা নেই, পলাশি এখান থেকে খুব বেশী দূরে না। ব্রিষ্টি শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই, তবে রাস্তার জায়গায় জায়গায় পানি জমে আছে এখনো।

আকাশে মেঘের ছিটেফুটাও নেই, পরিস্কার আকাশে দেখা যাচ্ছে লাখ লাখ তারা, সাথে আছে পুর্ব কোনায় সদ্ব্য উদিত পুরনিমার চাদ। চাদ দেখলেই মানুষের মনে নানান রকম রোমান্টিক কবিতা চলে আসে। কিন্তু আমার মনে চলে আসলো সুকান্তের পুর্নিমার চাদ যেন ঝলসানো রুটি এই কবিতাটি। বুঝতে পারলাম এতক্ষন জ্যামে আটকে থেকে শরীর থেকে অনেক শক্তি চলে গেছে, আর আজ সারাদিনে পেটের পুজাও ভাল ভাবে হয়নি। তাই পেটটা আখন রাক্ষসের ভুমিকায় অবতির্ন হতে চাইছে।

হলে গিয়ে ডাইনিং এর পচা খাবার খেতে হবে এখন, এই ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেল। বন্ধু বান্ধবরাও হয়ত এতক্ষনে খেয়ে ফেলেছে, তাই বাইরে খেতে যেতে চাইলেও একা একা যেতে হবে। হঠাত করে একটা অদ্ভুত চিন্তা মাথায় চলে আসলো, মেয়েটিকে আমার সাথে খেতে বললে কেমন হয়, বলেই দেখি না, যদি রাজি হয়েই যায়। আমি বুঝেতে পারছিলাম এইটা একটা বড় রকমের পাগলামি ছারা অন্ন্যকিছু হবে না তবুও মেয়েটিকে বলেই বসলাম, আপু আমি আজকে টিউশনির বেতন পেয়েছি, আমি আপনাকে কিছু খাউয়াতে চাই, চলুন আমরা একসাথে ডিনার করি। এই কথা শনার পর মেয়েটা হতভম্বের মত কিছুক্ষন নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।

বাসের মধ্যে কএক মিনিটের পরিচয়ে কেউ এভাবে খাউয়ার অফার করতে পারে এমনটি হয়তো সে ভাবেনি কখনো আগে। কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থেকে মেয়েটি বলল, আপনি টাকা পেয়েছেন ভাল কথা তো আমাকে খাউয়াতে চাইছেন কেন? আমি তো আপনার কেউ নই। আপনি আপনার বন্ধুদের নিয়ে খান। আমি বললাম, দেখেন আপু, আমি জানি আপনার সাথে আমার পরিচয় মাত্র কএক মিনিটের, কিন্তু আপনাকে আমার অনেক ভাল লেগে গেছে, কেনো লেগেছে জানি না। আর আমার যাকে ভাল লাগে তাকে আমি খাউয়াই।

মেয়েটা কিছুতেই রাজি হয় না, কিন্তু এদিকে আমিও নাছরবান্দা, একবার কোন পাগলামি মাথায় ঢুকলে সেটা না করা পর্যন্ত আমি শান্তি পাই না। মেয়েটা হয়ত আমাকে পাগল ভাবছে, ভাবছে আমি অনেক টাংকিবাজ, সিনিয়রদের সাথেও টাংকি মারায় কম না, ভাবুক তাতে আমার কিছু যায় আসে না। অনেক্ষন জোরাজোরি করার পর মেয়টা রাজি হল, বলল, আশে পাশে কোনো রেস্টুরেন্ট হলে সে যেতে রাজি আছে। এখন চিন্তায় পরে গেলাম, এই এলাকায় ত আশে পাশে তেমন কোন ভাল রেস্টুরেন্ত নেই, হয় আমাকে যেতে হবে চাঙ্খারপুল অথবা ধান্মন্ডির দিকে। হঠাত মাথায় আসল মেডিকেল মোড়ে পেনাং এর পাশের চাইনিজটা একদম খারাপ না, অখানেই যাউয়া যাক।

রিক্সা ঠিক করতে গিয়ে পরলাম আর বিপাকে, এম্নিতেই রিক্সা কম তারপরেও রিক্সাওয়ালারা দুইটা ছেলে মেয়েকে একসাথে দেখলেই দ্বিগুন ভারা চেয়ে বসে থাকে। অনেক কষ্টে একটা রিক্সা যোগার করে চল্লাম পেনাঙ্গের দিকে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে বের হলাম। খাবার সময় বার বার মনে হছিল মেয়েটার ফোন নম্বর চাই। কিন্তু কোনভাবেই মেয়েটাকে বলতে পারছিলাম না।

সমস্ত লজ্জা ভেঙ্গে মেয়েটার সাথে এতদুর চলে আসলাম অথচ ফোন নম্বর চাইতে এতই লজ্জা লাগসিল যে আমার পুর দেহই কেমন জেন আরষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। মেয়েটাও হয়ত তার ফোন নম্বর আমাকে দিতে চাইছিল কিন্তু আমি না চাউয়াতে সে ও দিচ্ছিল না হয়ত। রাত কম হয়নি, মহিলা হস্টেল বন্ধ হবার সময় ঘনিয়ে আসছে, মেয়েটা তারহুরা করে একটা রিক্সায় উঠে পরল। দ্রুত বেগে চলে গেল রিক্সা। গতি দেখে মনে হলো রিক্সাওয়ালা হয়ত কোন রেসিং কার এর সাথে প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

ভাবলাম, মেয়েটা একটা বার আমাকে ধন্যবাদও দিল না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।