আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'ভার্চুয়াল থাপ্পর' : জয়ের চাবিকাঠি

মৌনকুহর

বিশ্ব মানচিত্রে আমরা স্বাধীন বলে পরিচিত হচ্ছি গত চল্লিশ বছর ধরে| কিন্তু যতটুকু স্বপ্ন নিয়ে, যতটুকু প্রাপ্তির আশায় বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষেরা, উত্সর্গ করেছিলেন জীবন, সেই মহান আত্মত্যাগীদের স্বপ্ন কতটুকু পূরণ হয়েছে আজ? এই প্রশ্নটা ইদানিং খুব জনপ্রিয় হয়ে গেছে| যেকোন সভা কিংবা অনুষ্ঠানে বক্তাদের একজন না একজন কথা প্রসঙ্গে প্রশ্নটা তুলবেনই| এর সাথে ইদানিং যোগ হয়েছেন একদন সংগীতজ্ঞ, যারা একের পর এক গান তৈরি করে চলেছেন, 'হা-হুতাশ' মার্কা গান| "হায় হায় রে... এত ত্যাগের ফসল কই... মনের দুঃখ রাখি কই" মার্কা সব গান| মাথায় তুলে নাচার মত কোন কাজ কি তাঁরা করছেন? আমি বলব এঁরা এই যুগের 'পাক হানাদার'| না, একাত্তরের পাক জানোয়ারদের মত ভয়ংকর এঁরা নন, বাংলাদেশকে এঁরা সত্যই ভালবাসেন| কিন্তু তাঁদের ভালবাসার বহিঃপ্রকাশটা যথার্থ হচ্ছে না| এঁরা হতাশার গান যতটা গান, আশার কথা ততটা শোনান না| কেন শোনান না? কারণ, তার জন্য পর্যাপ্ত আত্মবিশ্বাস তাঁরা পান না| তাঁদের কাজটুকু তাঁরা করেছেন, জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন, এনে দিয়েছেন স্বাধীনতা| স্বপ্নটুকু বাস্তবায়নের ভার স্বভাবতই এসে বর্তায় আমাদের এই প্রজন্মের উপর| কিন্তু আমাদের নিয়ে তাঁদের ভাবনা, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের বিভীষিকা যারা দেখেনি, এ যুগের সেই 'ডিজিটাল প্রজন্ম' কেমনে পারবে ঐসব! নাহ, এদের দিয়ে হবে না| এখানেই আমি দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের দেখা পাই| সেই মহা পন্ডিতদের কাছে আমার সশ্রদ্ধ প্রশ্ন, একাত্তরে কয়জন বাঙালি সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন ছিল? একাত্তরে কয়জন বাঙালি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুযোগ পেত? একাত্তরে কয়জন বাঙালিকে বাইরের বিশ্ব এক নামে চিনত? একাত্তরে কোন বাঙালি ছিল এভারেস্টজয়ী? আরে বাবা, ল্যাংড়া-বধির-অন্ধের মত প্রতিবন্ধীরা পর্যন্ত নাকি একাত্তরে সম্মুখ সমরে অংশ নিয়েছিলেন| আমরা কি তাদের চেয়েও দুর্বল? তাদের চেয়েও অক্ষম? আমরা কোন দিক থেকে পিছিয়ে সেই সময়ের বাঙালিদের থেকে? আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, কারণ, বিধাতা তখনও আমাদের দুনিয়ায় পাঠাননি| সেটা কি আমাদের দোষ না অযোগ্যতা? আসুন না, দেশাত্মবোধ আর আত্মবিশ্বাসের বলে বলিয়ান হয়ে আরেকবার জেগে উঠি আমরা? আসুন না, যার যার জায়গা থেকে নিজের সাধ্যমত যতটুকু করার ত়া করি? দেশের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ-ই তো আমরা| চাইলে কোন জিনিসটা অসম্ভব আমদের পক্ষে? ১৬ কোটি মানুষের দেশে প্রত্যেকে যদি অল্প অল্প করেও কিছু না কিছু করি দেশের জন্য, ত়া দিয়েই তো আকাশ ছোঁয়া সম্ভব! আমাদের 'ডিজিটাল প্রজন্ম' বলে ব্যঙ্গ করে যারা হাসির খোরাক যোগান, আসুন না কাজের দ্বারা নিজেদের প্রমান করে তাঁদের সেই হাসিমুখে বসিয়ে দিই ভীষন জোরালো একটা 'ভার্চুয়াল থাপ্পর'? তখন তাঁরা বুঝবেন, এই 'ডিজিটাল প্রজন্ম' কী জিনিস, মুরোদ তাদের কতটুকু! এই ভার্চুয়াল থাপ্পর যদি তাঁদের দিতে পারি আমরা, তাতে অমঙ্গল নেই| কারণ, তাতে মঙ্গল আমদের এই প্রিয় জন্মভূমির, মঙ্গল আমাদের বাংলাদেশের| বাংলাদেশ তো আমাদের সবারই মা... দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে.... আপনি তাতে শামিল হবেন না?? --মৌনকুহর

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.