ভিত
অন্ধকার ছিঁড়েখুঁড়ে আলোক আসে
বিজলির হাসি।
মনে হয় কারা যেন খুলছে জানালা
বৃষ্টির ভয়াবহ রাতে।
শিল্পীর তুলি বন্যায় ভেসে গেছে।
কঙ্কালের রূপটুকু ধরে রাখে
তমসায় ডুবে থাকা মুখ,
স্মৃতি যার দাঁড়াবার ভিত।
আর যদি দাঁড়িয়েই গেলো সেই কঙ্কাল
অন্ধকার ছিঁড়েখুঁড়ে আলোকস্তম্ভ
স্মৃতি তার চলবার ভিত।
তার পর, ভুল হলে
জ্যোত্স্নায় ডুবে গেলে কালো রূপসী
স্মৃতি তার আঁকবার ভিত?
প্রজাপতি
প্রজাপতি বসো তুমি শিল্পীর তুলিতে
আর কী ভাবো?
আঁকা হোক একখানা ছবি?
শিল্পী প্রেমিক নয়
তার চোখে ফুটে ওঠে দূরের ছবি
মূর্তির দেশ।
তখন গভীর রাত
সিংহ পেরিয়ে আসে প্রস্তর দেয়াল
মনে হয় ভেঙে যাবে রক্তের বাঁধ, অশ্রান্ত বৃষ্টিতে
ফিরে যদি এলে, প্রজাপতি
ডানা দুটি রেখে এলে কোন নীলিমায়?
কাকে দিলে রঙ?
শ্রাবণ গভীর রাত নীরবে পোহায়
শিশির লুকায় ঘাসে
পড়ে থাকে শিল্পীর রঙহীন তুলি।
রঙতুলি
শ্রাবণের বৃষ্টিতে তার সঙ্গে দেখা
স্তম্ভিত শিলার পাদদেশে।
তার পর, অনেক কুয়াশা ভেঙে নীল রাস্তা
এবং রাস্তার শেষে বিস্তৃত সমুদ্র, আরো নীল।
কিন্তু তুমি
আকাশের নিঃসীম শূন্যতা থেকে
বিচিত্র রঙ এনে দিয়ে গ্যাছো
আমাদের পালকের স্পন্দিত তুলিতে
আমাদের রক্তের শিখায়।
যাতে কখনোই আঁকা যাবে না
একটি উজ্জ্বল ময়ূরের ছবি।
কিংবা বাতাসে অদৃশ্য শব্দের ছবি।
শিল্প
গোগ্রাসে গিলেছি সব একে একে দৃশ্যমান সকল বস্তুই
কঠিন তরল আর যা যা বায়বীয় বস্তুর অতীত
আমাতে গিয়েছে অস্ত মিলেমিশে তাবত সূর্যেরা।
আজ যদি আসে বমি ব্যক্তিগত ব্যাথায়_ প্লীহায়
তবেই নিশ্চিত জানি ফুটে উঠবে একটি পৃথিবী।
শিল্পী
নিখিল বরফ চষে একটানা পায়ের লাঙলে
কাঁধে নিয়ে নিষিদ্ধ ফলের গাড়ি_ দুর্বল অক্ষম
ক্লান্ত বলদের মতো ঢলে পড়ে নিস্তব্ধ মাটিতে।
দৃষ্টি তার অনিমেষ শৈশবের মার্বেলের মতো
হারায় সুদূরে। আর স্বপ্নে দ্যাখে নিবিড় আঙুর
বন, উঁচু উঁচু পামগাছ, পর্বতের ছায়া
প্রাচীন সোনার ভেক শুধু ভাসে কুয়োর পানিতে
লাল লাল বুনো ঘোড়া, পিঠে নগ্ন ফলবতী নারী।
জন্ম ও মৃত্যুর ভাঙা ব্রিজ জোড়া দিতে আয়ু যায়
চুলের লাবন্য খসে পায় শাদা তুষারের রূপ
বেলা যায়, তবু সূর্য আলোময়_ চাঁদ জ্যোত্স্নাময়ী
এই বোধ ছায়া দেয়। অসীম গহ্বর থেকে আনে
ক্ষণ বেহালার গান।
প্রভুর নিকটে যায়, চেয়ে আনে কাফনের চাঁদা
হাড্ডিসার হাত পেতে।
কেননা সে প্রতিদিন মরে,
খুরে কাটা আপেলের মতো টুকরো টুকরো হয়ে
খুব অগোচরে। রাত্রির নির্জন দ্বীপে কুয়াশায়
ডুবে, রক্ত-মগজের অগ্নি জ্বেলে পোহায় শিল্পের
শীত অতীত, প্যাঁচার মতো গুপ্ত দিনের চেতনে।
চেয়েছিলো প্রভু, প্রভু, নরকের বাগানের মালী।
উড়ে গেছে প্রেম ছুঁয়ে আলেয়ার ফলবতী পাখি
এখন হৃদয় তার পরিত্যাক্ত আঁধার বন্দর
অচেনা পালক পড়ে থাকে স্তব্ধতায় অনুভূতিহীন।
জাদুঘরে রেখে দিও অবশিষ্ট আশ্চর্য কঙ্কাল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।