জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায়
সকল তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চ কর আরোপ জরুরি
বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ৪৩.৩% প্রাপ্ত বয়স্ক লোক তামাক ব্যবহার করে। জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতি রক্ষায় এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে ধূমপান ও তামাক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে সকল তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চ কর বৃদ্ধি করা জরুরি। জনস্বার্থে বাজেটে সকল তামাকজাত দ্রব্যে উপর উচ্চকর আরোপে সকল সদস্য সদস্যদের সক্রিয় সমর্থন জানানো উচিত। আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এবং নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তারা এই অভিমত জানান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-র নির্বাহী কমিটি সদস্য হেলাল আহমেদ, গ্রীন ভয়েজের হুমায়ন কবির সুমন, বাপা-র কোষাধ্যক্ষ মহিদুল ইসলাম, পরিবেশকর্মী অধ্যাপক মাহবুব, নিরাপদ ডেভেলাপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট-র পরিচালক, এ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা ও জীবন অপেক্ষা কোন কিছুই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১১ এবং অনুচ্ছেদ ১৮ (১) সমূহের এ মানুষের মৌলিক মানবাধিকার এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হানিকর মদ ও ভেজষের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের কথা বলা হয়েছে। আন্তজার্তিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-র আর্টিকেল-৬ নং ধারায় তামাক ব্যবহার হ্রাসে কর বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। নীতিনির্ধারনের ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, অর্থনীতির উপর তামাকের নেতিবাচক প্রভাবের কথা বিবেচনায় তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চহারে কর আরোপ করার অর্থ সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন।
বক্তারা বলেন, বিগত কয়েক বছরের অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেলেও তামাকজাত দ্রব্যের দাম সে অনুসারে বৃদ্ধি পায়নি বরং কমেছে।
সস্তায় তামাকজাত দ্রব্য প্রাপ্তির কারণে মানুষের মধ্যে তামাক ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তামাক ব্যবহারের প্রত্যক্ষ ফল হিসেবে প্রতিবছর বাংলাদেশে ৩০ বছরের বেশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৫৭,০০০ জন মৃত্যুবরণ করছে এবং প্রতি বছর ১২,০০,০০০ মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত প্রধান ৮টি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীর চিকিৎসা, অকালমুত্য, পঙ্গুত্বের কারণে বছরে দেশের অর্থনীতিতে ১১০০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
বক্তারা বলেন তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির মাধ্যমে আদায়কৃত অতিরিক্ত রাজস্ব সরকার প্রয়োজনে দরিদ্র লোকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ব্যয় করতে পারে। প্রায়শই কোম্পানিগুলো অনেক টাকা রাজস্ব দেয় বলে নিজেদের জাহির করতে চায়।
আমাদের মনে রাখা দরকার, কোম্পানিগুলো মূলত সংগৃহীত ভ্যাট রাজস্ব খাতে জমা দেয়, ভ্যাট পুরোটা জনগনের টাকা। কিছু অর্থ রাজস্ব খাতে দিয়ে, সরকারের উপর রোগ ও অসুস্থ্যতার বোঝা চাপিয়ে অনেক অনেক টাকা লাভ হিসেবে নিয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, প্রতিবছর তামাক কোম্পানিগুলো ভ্রান্ত প্রচারণা মাধ্যমে সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের বিভ্রান্ত করে তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির বিরোধীতা করে। নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের উপর কর বৃদ্ধি হলে ক্ষতিকর তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি উচিত। জনপ্রতিনিধিদের জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতি রক্ষায় সকল তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির সমর্থন জানাতে আহবান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, গ্রীনমাইন্ডের সভাপতি আমীর হাসান, খিলগাও সমাজ কল্যাণ সংস্থার হাফিজুর রহমান ময়না, বিআরসিটির পরিচালক মাহবুবুর রহমান, স্বভূমির নির্বাহী পরিচালক মোজাম্মেল হক, জাতীয় অধূমপায়ী ফোরামের মহিদুল ইসলাম, সাইকিলিষ্ট রাম কৃষ্ণমন্ডল,
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।