www.adityaanik.com
কর্পোরেট ভূগোল
আদিত্য অনীক
সারা গায়ে এলো চুলের গন্ধ বুকে উর্মিমালার ঝড়
ছিলা ছেঁড়া ধনুক মেয়ের নিয়তি কেঁপে উঠে থরথর
আপন শরীরে মেয়ে আপনা বৈরী।
বাবা নাম মুছে গেছে বহুদিন আগে অভাবের সংসারে
মাও চলে গেল ক’দিন আগে বুকের ক্যান্সারে ।
মতিঝিলে কর্পোরেট ফ্লোরে ফ্লোরে ঘুরে মেয়ে সবখানে
কোথায় যে একটা চাকরি মিলবে কে জানে ?
পালিশ পিতলে লেখা নাম, চেয়ারম্যান ওমর মুরসালিন
ভিক্ষার মত করে মেয়ে বলে প্লিজ, একটা চাকরি দিন।
চাকরি কি গাছের পাতা ? লেখাপড়া জান কিছূ ? কী পাশ ?
ন্যাশনাল ভার্সিটি থেকে বি এ অনার্স । ইসলামের ইতিহাস।
ইতিহাস-ফিতিহাসে হবে না ? ভুগোলটা কাজে লাগাও।
সন্ধ্যার পরে এসো। অফিসে বিরক্ত করো না, এখন যাও।
গভীর রাতে কাতর মেয়ে বলল স্যার, হবে তো আমার ?
হবে। তবে বোর্ডে আমি ছাড়াও ডাইরেক্টর আছেন পাঁচ জন,
চাকরি পেতে হলে তাদেরও সুপারিশ পাওয়া খুব প্রয়োজন।
মেয়ে দাতে দাত চেপে একে একে সবার কাছে গেল,
তারা কেউ ইতিহাস জানে না, ভূগোলটা বুঝে ভাল।
ইন্টারভিউ বোর্ডে তারা ভূগোলে নেই শুধু ইতিহাস জানে
পাল্লা দিয়ে বিদ্ধ করে মেয়েকে একে একে কঠিন প্রশ্নবাণে।
সাত খোপ কবুতরখোর মানুষগুলো বোর্ডে বিড়াল নিষ্ঠাবান
ভূগোল কাহিনি বাকিরা জেনে যাবে ভেবে সবাই সাবধান।
পরদিন চেয়ারম্যান ওমর মুরসালিন ম্লানমুখে বললেন,
বোর্ডে সবাই তো মুখ বুজে থাকলেন।
হলো না তোমার।
আমার একার পক্ষে কিছু ছিল না করার।
পাথর স্তব্ধ মেয়ে। মাথা তুলে চেয়ারম্যান বললেন আবার,
এক কাজ কর । আমার বন্ধু চেয়ারম্যান মোতালেব সরকার
তার কোম্পানি আরো বড়। অনেক চাকরি হাতে আছে তার।
ফোনে বলে দিচ্ছি। তার কাছে যাও। হয়ে যাবে আমার বিশ্বাস
কালো হয়ে এল দিনের আলো। ঘন হয়ে গেল মেয়ের নিশ্বাস।
ভারী বাতাস বুকে টেনে নেবার চেষ্টা করতে করতে প্রানপণ
আর্ত কন্ঠে বলল মেয়ে, ঐ কোম্পানিতে ডাইরেক্টর কয়জন ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।