মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উনার ছেলের(জয়ের) জন্মদিনে ছেলের জন্য মোরগ পোলাও রান্না করেছিলেন এমন একটা ছবি জয় তার ফেইসবুক ষ্ট্যাটাসে আপলোড করেছিলো । দূই ঘন্টায় দেখতে পেলাম ছবিটার জন্য নয় দশ হাজার লাইক । অনলাইনে তুমুল ঝড় উঠে গেছে । সেটা দেখে কত মানুষের ঘুম হারাম । কত মানুষের আফসোস শুরু হয়ে গেছে ।
"বিশ্বজিত, সাগর-রুনির ছেলে মাহির সরোয়ার মেঘকে পোলাও রান্না করে কে খাওয়াবে" সেই চিন্তায় পেয়ে গেল । এই আফসোসের সমাধান তো একটাই সেটাতো ক্লাস ওয়ান টু পড়ুয়া ছাত্রও জানে । ওর মা বাবা মারা গেছে সেজন্য তার প্রতি আমাদের সবার কম বেশী সমবেদনা আছে । যারা চলে গেছে তারাতো আর ফিরে আসবে না ।
ফেইসবুকে এমন সস্তা আফসোস যদি কোন সস্তা কমদামী মানুষের ষ্ট্যাটাস পড়ে জানতে পারতাম তবে কোন সমালোচনায় যেতাম না ।
কিন্তু একজন নামিদামী মানুষের ফেইসবুক প্রোফাইলে ষ্ট্যাটাস যদি এমন করে লেখা হয় পড়বার পরে চুপ করে থাকতে পারলাম না । ভাবখানা এমন যে বিএনপির সাশনামলে কোন দিন কেউ মারা যায়নি । কোন সন্তান এতিম হয়নি । কোন সন্তান তার বাবার কোলে থাকা অবস্থায় গুলি খেয়ে মারা যায় নি । এমন অনেক উদাহরন খুজলে পাওয়া যাবে ।
সেই দিকে যাবো না । যাদের বিচ্ছিন্ন ঘটনায় মৃত্য হয়েছিলো তাদের জন্য কত কত আফসোস আর যারা বেচেঁ আছে তাদের জীবন আরও একটু সুন্দর হউক সেটা চাইতে দোষ কোথায় ? যে লক্ষ লক্ষ গার্মমেন্টসের মহিলারা বছরে যদি দূই একবার পোলাও মাংস খেতে পারে তাদের সেই সুযোগটি যে হেফাজত আর জিএসপির কারনে বন্ধ হয়ে যেতে পারে সেটা নিয়ে মাখা বেথা নেই । তখনতো লক্ষ লক্ষ জন বঞ্চিত হবে । একজনের দূঃখে এত কান্নাকাটি । এটা কতটা যুক্তি সংগত ।
প্রধানমন্ত্রী ছাড়া বাংলাদেশে আর কোন রাজনীতিবিদের বাসায় তার ছেলের জন্মদিনে পোলাও রান্না হয় না । কারো পরিবারিক বা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে রাজনীতি করা উচিৎ না ।
ভাগ্যিস কেউ বলেন নি, দেখ রোজার মধ্যে রোজা না রেখে মোরগ পোলাও খেতে বেস্ত । ধর্মের প্রতি বিন্দু মাত্র শ্রুদ্ধা নাই । আমরা নাস্তিক বললে উনারা আবার মাইন্ড করে ।
কিংবা বলেনি যে, দেশের মানুষ না খেয়ে আছে আর উনারা মোরগ পোলাও খায় ।
ভাগ্যিস কেউ বলে বসেনি যে, যদি প্রধানমন্ত্রী আস্তিক হইত তবে ছেলের জন্য গরুর মাংসের পোলাও রান্না করত । ওরাতো গরু খায় না তাই মুরগী জবাই করে মোরগ পোলাও রান্না করতেছে । কুরবানীর ঈদে পাবলিকরে দেখানের জন্য গরু কুরবানী দেয় ।
কিংবা এই চিন্তাটা কারো মাথায় আসে নাই যে, যুদ্ধাপরাধীরা জেলখানায় একা একা বসে আছে কে ওদের জন্য পোলাও রান্না করে খাওয়াবে ? সত্যিই কি রাজনীতিবিদদের মন আমাদের জন্য এত কাঁদে; নাকি মূল উদ্দ্যেশ্য থাকে প্রতিপক্ষ্যকে ঘায়েল করা ।
যদি উনারা গঠনমূলক সমালোচনা করতেন তবে আমাদের পড়তে বা শুনতেও ভাল লাগে । কিন্তু এমন সমালোচনায় সমালোচকের ক্ষীণ মানসিকতার চিত্র স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠে । যা কিনা আমাদের দেশবাসীর কাম্য হতে পারেনা । দয়া করে মনোযোগ পোলাও থেকে ডাইভার্ট করে দেশের উন্নয়নের দিকে আনুন । বৃহত্তর চিন্তা করুন জনগনের সমর্থন পাওয়া যাবে ।
আগে সাধারন মানুষদের উদ্দ্যেশ্যে নেতা নেত্রীরা কিছু বললে মনোযোগ দিয়ে শুনত । এখনকার পাবলিককে কোন নেতা কিছু বললে পাবলিক প্রথমেই কথাটার দূইটা মানে খোঁজ করে । কারন পাবলিক জানে রাজনীতিবিদগন নিজেদের সুবিধার জন্য শুধু একে অন্যের দোষত্রুটি হাইলাইট করে । কিন্তু মজার ব্যপার হলো এসব ঘটনা রটনার প্রভাব এখন আর নিবর্াচনী প্রচারের কাজে কিংবা নিবর্াচনের ফলাফলের মধ্যমেও প্রতিফলিত হয় না ।
নিজের ছেলের জন্য মোরগ পোলাও রান্না করলে এমন যদি হয় সমালোচনা তবে আমরাও আশা করবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতে আর কোন দিন ছেলের জন্য মোরগ পোলাও রান্না করে কারো মনের দূঃখ কষ্ট বাড়িয়ে দিবেন না ।
আমার মতে অন্য কোন দলের নেতা নেত্রীদের মনে এতিমদের জন্য সহানুভূতি বেড়ে যায় এমন সব আইটেম না রান্না করাই ভাল । শুধু ডাল ভাত অথবা বড় কোন রেষ্টুরেন্ট থেকে অর্ডার করে আনলেইতো খাওয়া যেত । পোলাও রান্না করে মায়ের ভালবাসার অপচয় করার কি প্রয়োজন ছিলো ? উনাদের এসব সমালোচনা দেখার আগে আমাদের কেউ যদি মাইরা ফালাইত তবেই ভাল ছিলো । কিংবা নর্িবোধ হয়ে থাকতে পারতাম । আমারওতো মা আছে ।
আমার মা দূনিয়ার যে প্রান্তেই থাকুক না কেন দেশে চলে আসে এবং আমার জন্মদিনের দিন নিজের হাতেই পোলাও মাংস রান্না করে সামনে বসে খাওয়াবে এবং খাওয়ার পরে একটা গিফট সামনে হাজির করেন । বলতে দ্বিধা নেই বর্তমানে আমার ৫০ বৎসর বয়স । আমার মায়ের গত ৪৯ বৎসর আমার জন্মদিনের দিন নিজের হাত রান্না করে খাওয়ানোর এই অমূল্য ভালবাসার বহিঃপ্রকাশটাকে আজ আমি যেন অপমানিত হতে দেখলাম । সব মায়ের ভালবাসা এক রকম হয় না ; যদি হতো তবে এমন সমালোচনা আর মাতৃস্নেহের এত ক্ষীণ মূল্যায়ন জীবনে কোনদিন শুনতে হতো না ।
এতবড় নেত্রী নিজে মা হয়ে আরেক জন মায়ের তার যোগ্য সন্তানের প্রতি ভালবাসার এত অপমান করতে পারলো ?
Click This Link
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।