আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শূন্য ইডেনে কেকেআরের প্রথম জয়

ইসলামের পথে থাকতে চেষ্টা করি...।

আসুন ইডেন খালি রেখে শাহরুখের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই। সৌরভ নেই, আমরাও নেই'-এ ধরনের অসংখ্য এসএমএস আছড়ে পড়ছিল কলকাতার মানুষের মোবাইলগুলোতে। শেষ পর্যন্ত তাই হলো। ইডেনে নাইট রাইডার্সের প্রথম ম্যাচে প্রায় ৬৫ হাজার দর্শকের স্টেডিয়াম খালিই পড়ে রইল অর্ধেক।

যেন কলকাতার নিঃশব্দ বিপ্লব! খালি গ্যালারিতেও অবশ্য মন ভরানো ক্রিকেটই খেলেছে নতুন আদলে গড়া নাইট রাইডার্স। কুমার সাঙ্গাকারার ডেকান চার্জার্সকে তারা হারিয়েছে ৯ রানে। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে জ্যাক ক্যালিসের টানা দ্বিতীয় ফিফটিতে নাইট রাইডার্স করেছিল ৪ উইকেটে ১৬৩। আইপিএল ফোরের প্রথম ৬ ম্যাচে এটাই সর্বোচ্চ স্কোর। শেষ দিকে আরো ধীরগতির ও লো বাউন্সের উইকেট হয়ে পড়ায় ম্যাচের রাশটা ছিল গম্ভীরদের হাতেই।

তাই ডেকান ৮ উইকেটে ১৫৪ করলেও কখনোই আতঙ্ক হয়ে ওঠেনি শাহরুখের দলের জন্য। সৌরভ গাঙ্গুলী আগেই জানিয়েছিলেন এই ম্যাচটা দেখতে ইডেনে না আসার কথা। যে কারণে কিছুটা শঙ্কায় ছিলেন শাহরুখ খান। বিশেষ করে নিলামে সৌরভকে না কেনায় যখন কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল কলকাতায় শাহরুখের সিনেমা বর্জনের। তবে মাঠে কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি তাঁকে।

আয়োজকরাও বাঙালির আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বারবার বাজাচ্ছিল ৩৫ বছর আগে মুক্তি পাওয়া মিঠুন চক্রবর্তী আর বাপ্পি লাহিড়ীর ডিস্কো ড্যান্সার সিনেমার গান, 'ইয়াদ আ রাহা হে'। তাতে অবশ্য সৌরভের মুখটাই অনেকের 'ইয়াদ' (স্মরণ) হচ্ছিল বেশি করে। সেটা বুঝতে পেরেই ম্যাচ শেষে শাহরুখ বললেন, 'আমি চাই নাইট রাইডার্স আইপিএলের শিরোপা জিতুক কলকাতা আর সৌরভের জন্য। সৌরভকে মিস করছি। এখানে এসেছি কেবল কলকাতার মানুষের জন্য।

' সর্বকালের অন্যতম সেরা ওপেনার সুনীল গাভাস্কারের সঙ্গেও শীতল সম্পর্ক ছিল শাহরুখের। পরশু অবশ্য মাঠে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরতে দেখা গেল তাঁদের। তারপরও সৌরভকে না নেওয়ার সমালোচনা করতে ছাড়লেন না গাভাস্কার, 'নাইট রাইডার্সের হয়ে আগের আসরে সবচেয়ে বেশি রান ছিল সৌরভের। তাই সৌরভের জন্য গম্ভীর ও পাঠানকে কম টাকা দেয়া যেত। ' অবশ্য কেবল সৌরভের কারণেই নয়, বিশ্বকাপের আমেজ এখনো পুরোপুরি মিলিয়ে না যাওয়াতেই ৬৫ হাজার আসনের স্টেডিয়াম ভরেনি বলে মন্তব্য করেছে কয়েকটি কলকাতার দৈনিক।

তা ছাড়া টিকিটের দাম বাড়াটাও একটা বড় ব্যাপার। গতবার যেখানে সবচেয়ে কম দামের টিকিট ছিল ৩০০ রুপি এবার সেটা বেড়ে হয়েছে ৫০০ রুপি। এত বেশি টাকা খরচ করে সৌরভহীন ম্যাচ দেখতে চায়নি কলকাতার মানুষ। শাহরুখ-সৌরভের মতো একটা ঠাণ্ডা লড়াই ছিল জ্যাক ক্যালিস ও ডেল স্টেইনেরও। একই দেশের দুই তারকার দ্বৈরথে জিতেছেন ক্যালিসই।

স্টেইনের প্রথম বলটাই বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে ইনিংসের শুরু ক্যালিসের। তৃতীয় বলে কভার দিয়ে আরো একটা বাউন্ডারি মেরে সর্বকালের অন্যতম সেরা এ অলরাউন্ডার প্রথম ওভারে নেন ৮ রান। ইশান্ত শর্মা প্রথম তিন আসরে খেলেছেন নাইট রাইডার্সে। ডেকান কিনে নেওয়ায় এবার খেলতে হলো সেই নাইট রাইডার্সের বিপক্ষেই। তবে ম্যাচটা মনে রাখার মতো হয়নি তাঁর জন্য।

ওপেনার মানভিন্দর বিসলার ক্যাচ ছাড়ার পাশাপাশি ৩ ওভারে ৯ রান দিয়ে উইকেটহীনই ছিলেন ইশান্ত। উদ্বোধনী জুটিতে ৮.২ ওভারে ক্যালিস, বিসলা যোগ করেন ৫১ রান। অমিত মিশ্রর বলে ২১ বলে ১৯ করে বিসলা এলবিডাবি্লউ হয়ে ফেরার পর ওয়ানডাউনে আসেন প্রথম ম্যাচে ৬ নম্বরে নামা অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর। তাঁর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৯ রান যোগ করেন ক্যালিস। স্টেইন না পারলেও ক্যালিসকে ফেরান অবশ্য আরেক দক্ষিণ আফ্রিকান সতীর্থ জেপি ডুমিনি।

১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে পরের বলে আবারও উড়িয়ে মারতে গিয়ে শিখর ধাওয়ানকে ক্যাচ দেন ৪৫ বলে ৭ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৫৩ করা ম্যাচসেরা এ অলরাউন্ডার। গম্ভীর ১৮ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৯, কলকাতারই ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি ২১ বলে ২ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৩০, ইউসুফ পাঠান ১৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২২ করলে বড় স্কোরই পায় নাইট রাইডার্স। অমিত মিশ্র ১৯ রানে ২, স্টেইন ৩৩ রানে ১ আর ডুমিনি ২৩ রানে নেন ১ উইকেট। জবাবে ১৫ রানে দুই ওপেনার আর ১৪তম ওভারে ৮৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ডেকান চার্জার্স। তবে অস্ট্রেলিয়ান ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান ১৩ বলে ২৫, রবি তেজা ১০ বলে ১৪ আর অমিত মিশ্র ৫ বলে ১২ করায় ৮ উইকেটে ১৫৪ রানে থামে তাদের ইনিংস।

এ ছাড়া ভারত চিপলি ৪০ বলে ৪৮, কুমার সাঙ্গাকারা ১৫ বলে ১৬ আর ডুমিনি করেছিলেন ৮ বলে ৬ রান। টানা দুই ম্যাচ ইনিংস ওপেন করা তরুণ স্পিনার ইকবাল আবদুল্লাহ ২৪ রানে ৩, জয়দীপ উনাদকাত ৩৬ রানে ২ আর রজত ভাটিয়া নেন ২৯ রানে ২ উইকেট। দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট গৌতম গম্ভীর আশাবাদী, জয়ের এই ধারাটা ধরে রাখবে কেকেআর, 'টসের পর মনে হয়েছিল ১৫০ রানই এই উইকেটে অনেক বড় স্কোর। তাই ১৬৩ করায় অনেক নির্ভার হয়েই বল করেছে বোলাররা। ইডেন অসাধারণ ভেন্যু।

আমরা আরো ম্যাচ জিততে চাই এখানকার মানুষগুলোর জন্য। ভালো ক্রিকেট খেলতে সবাই মুখিয়ে আমরা। ' পিটিআই

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।