পৃথিবীতে যুদ্ধ শেষ, বন্ধ সৈনিকের রক্ত ঢালাঃ ভেবেছ তোমার জয়, তোমার প্রাপ্য এ জয়মালা; জানো না এখানে যুদ্ধ-শুরু দিনবদলের পালা। ।
আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং আমি খুলনা নিউমার্কেট এর সামনে বসে আড্ডা মারছিলাম । কথা হচ্ছিল বর্তমান সরকারের কার্যকলাপ নিয়ে। শুরু তে আমার বন্ধুটির প্রসঙ্গে কিছু কথা বলে নেই।
আমার বন্ধু একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের মেধাবী ছাএ। মধ্যবিত্ত শ্রেনীর আটপ্রোড়ে জীবন যাপনে অভ্যস্ত। ঝুটঝামেলা এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করে। রাজনৈতিক কোন সংশ্লিষ্ঠতা নাই, কোন মতাদর্শ ও নেই। পোষাক-আশাকে, চালচলনেও যথেষ্ঠ আধুনিক।
পাচঁ ওয়াক্ত নামাজ না পরলেও জুম্মার নামাজ মিস করে না। কিন্তু সে ধর্মভীরু আর দশজনের মতই।
এবার আসল কথায় আসি। কথা হচ্ছিল নারীনীতি নিয়ে। তার কথায়, সরকার নারীনীতি প্রনয়ন করে বিরাট ভুল করেছে, পবিএ কোরান কে অবমাননা করেছে, নারীনীতি অনুযায়ী নাকি নারী-পুরুষ সমান সম্পত্তি পাবে যা কোরান এর সম্পুর্ন পরিপন্থি।
তার কন্ঠেও ধ্বনিত হচ্ছিল ধর্মব্যবসায়ী আমিনীদের উদ্ভট তত্ত্ব। সত্যি সেলুকাস বিচিএ এ দেশ আর এদেশের মানুষ, দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি। আমার আধুনিক বন্ধুটির মস্তিস্ক প্রক্ষালন হয়ে গেছে, মধ্যযুগীও আমিনীদের দ্বারা, বুঝতে আর দেরি হল না। আমার বন্ধুটি আসলে জানেই না নারীনীতিতে কি বলা আছে, আর এই অজ্ঞতার সুযোগ নিচ্ছে ভন্ড, ধর্মব্যবসায়ী, ফেরেব্বাজ আমিনীরা । ভাবতে অবাক লাগে, আমিনীরা আজ শুধু কোমল মতি মাদ্দ্রাসা পড়ুয়া শিশুদেরই মগজ ধোলাই করছে না, আধুনিক একজন যুবকের ও মগজ ধোলাই করছে কত সহজে।
এই স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ইসলামের অপব্যক্ষার মাধ্যমে কত সহজে আমাদের কে প্রতারিত করছে, আমাদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে। দেশ যখন এগিয়ে চলছে উন্নয়নের পথে, এরা হরতাল করছে, কোমলমতি শিশুদের দিয়ে পিকেটিং করাচ্ছে,ব্যর্থ রাস্ট্র বানানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, আর প্রধান বিরোধীদল এদের কে নৈতিক সমর্থন দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার ফন্দি আটছে।
প্রস্তাবিত নারীনীতিতে সর্বমোট ৪৯টি ধারা আছে; যার মধ্যে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, নারী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, কন্যাশিশুর উন্নয়ন, নারীর কর্মসংস্থান, নারীর খাদ্যের নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে। ২৩ নম্বর ধারায় আছে, ‘জাতীয় অর্থনীতির সকল কর্মকাণ্ডে নারীর সক্রিয় ও সম-অধিকার নিশ্চিতকরণ’ ও ২৫ নম্বরে আছে, ‘নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন’। আমিনীরা এই দুইটি ধারাকে কোরান বিরোধী বলছে, আন্দোলন করছে সরকারের বিরূদ্ধে।
অথচ কোথাও বলা হয়নি নারী পুরুষ সমান সম্পদ ভাগাভাগি করবে, বলা হয়েছে প্রাপ্ত সম্পদের উপর পুর্ন নিয়ন্ত্রনের অধিকার থাকবে । নূন্যতম কান্ডজ্ঞান থাকলে ওরা এর বিরোধিতা করত না। ওরা আসলে জানেই না যে আইন আর নীতি এক জিনিস নয়। নারী উন্নয়ন নীতির ২৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো নারীকে শুধু নারী বলে জাতীয় অর্থনীতির কোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখা যাবে না অথবা তার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না। আর ২৫.২ ধারায় বলা হয়েছে, ‘উপার্জন, উত্তরাধিকার, ঋণ, ভূমি ও বাজারব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের ক্ষেত্রে নারীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রদান করা।
’ যার মানে দাঁড়ায়, নারী উল্লিখিত সব সূত্র থেকে যে সম্পদ পাবে, তাতে ইচ্ছা করলেই কেউ জোরপূর্বক ভাগ বসাতে পারবেন না। যা নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সংরক্ষিত হবে যা কোরান ও সুন্নাহর আলোকে সামঞ্জস্যপুর্ন। নারীদের সম অধিকার নিশ্চিত না করলে কখনই নারী সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয় সর্বপরি দেশের সামগ্রিক উন্নতি সম্ভব নয়।
অথচ প্রধান বিরোধী দলীয় নেতৃ একজন নারী হয়েও আমিনীদের সরকার বিরোধী আন্দোলনে সমর্থন দিচ্ছেন সুধু মাত্র রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির জন্য , যিনি সুধু নিজের ক্ষমতার কথা ভাবেন, সমগ্র বাংলাদেশে নারীদের কথা নয় । জংগীবাদ,রাজাকার তোষোন যার অতীত ইতিহাস, সে তো আমিনিদের সাথেই একঘাটে পানি খাবে এটাই স্বাভাবিক।
দেশের জনগন কে ঐক্যবদ্ধভাবে এইসব নির্লজ্জ, ভন্ড আমিনীদের দমন করতে হবে, তানা করতে পারলে আমিনী এবং তার দোসর রা বাংলাদেশ কে একটি জঙ্গীরাস্ট্র বানিয়ে ছাড়বে।
প্রগতিশীল জনগন কে সচেতন থাকতে হবে, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তির উত্থান ঘটতে দেব না। নইলে ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের কে ক্ষমা করবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।