আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কার্বন নিঃসরণ কমাতেই হবে



বিভিন্ন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ২০৩০ সালের মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলের জীবনযাত্রা ও চাষাবাদে এমন পরিবর্তন আসবে যে প্রায় দুই কোটি মানুষ পরিবেশ উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে। আর ২১০০ সালের আগেই, মতান্তরে এ শতাব্দীর পঞ্চাশ বা ষাটের দশকের দিকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যদি এক মিটারের মতো বেড়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশের এক-পঞ্চমাংশ এলাকা সম্পূর্ণ ডুবে যাবে। অথচ তখন বাংলাদেশের জনসংখ্যা ২৫-৩০ কোটিতে গিয়ে ঠেকবে। অবশিষ্ট ভূখণ্ডে সেই জনসংখ্যার মাথা গোঁজার ঠাঁই করতে যে পরিমাণ জমি লাগবে, তাতে কৃষিজমি খুব একটা অবশিষ্ট থাকবে না। খাদ্য নিরাপত্তার চিন্তা করাও তখন অর্থহীন হয়ে দাঁড়াবে।

অনাহার, অপুষ্টি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা দেশে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে, সেখানে সব রকম উন্নয়ন প্রচেষ্টাই মুখ থুবড়ে পড়বে। আমরা কি আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য তেমন এক বাংলাদেশ রেখে যেতে চাই? যদি তা না চাই, তাহলে আমাদেরই সবচেয়ে বেশি সোচ্চার হতে হবে এ ব্যাপারে। কারণ আমাদের কার্বন নিঃসরণ নয়, বিশ্বব্যাপী, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোর অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণই এ ধরনের জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী। সেই উন্নত দেশগুলো কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খুব একটা সমস্যার সম্মুখীন হবে না। বরং তাদের কেউ কেউ এর মাধ্যমে লাভবান হবে।

মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়ায় তাদের কারো কারো আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ বেড়ে যাবে। আর আমরা এককভাবে এই বৈশ্বিক সমস্যার কোনো সমাধানই করতে পারব না। তাই বিশ্ব নেতাদের, বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সম্মিলিত প্রতিবাদ জানাতে হবে। উন্নত দেশগুলোকে তাদের অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাধ্য করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে।

পরিবেশ উদ্বাস্তুদের জন্য যেসব উন্নত দেশের বিশাল এলাকা খালি পড়ে আছে, সেখানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। আর তা না হলে ভবিষ্যতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে, সে ব্যাপারে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা নিতে হবে। উন্নত বিশ্বের যুক্তিবাদী ও চিন্তাশীল মানবসমাজও উন্নয়নশীল ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল। কাজেই শিগগিরই এসব ব্যাপারে বিশ্ব নেতারা বিভিন্ন কার্যকর সমঝোতায় উপনীত হবেÑএটাই আমাদের প্রত্যাশা। কবি সুকান্তের মতো করেই বলতে চাই, অবশ্যই আমরা এই পৃথিবীকে আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য বাসযোগ্য করে রেখে যাব।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.