মার্কিন প্রকৌশলীরা এবার একটি পরমাণুর সমান পুরুত্বের কার্বন ন্যানোটিউব থেকে কম্পিউটার তৈরি করেছেন। অতি ক্ষুদ্র বৈদ্যুতিক যন্ত্র তৈরির প্রয়াসে এটি একটি বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে কম্পিউটার হিসেবে যন্ত্রটি নিয়ে বিশেষ উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ এটির গতি সেই ১৯৫৫ সালের কম্পিউটারের চেয়ে বেশি নয়। নেচার সাময়িকীতে এ-সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
কার্বন ন্যানোটিউব বা সিএনটি হচ্ছে কার্বন পরমাণুর গোটানো এক স্তরের পাত। মানুষের একটি চুলের বিস্তারের মধ্যে এক লাখ সিএনটি অনায়াসে জায়গা হয়ে যায়। এই সিএনটি অত্যন্ত নমনীয় এবং ওজনের তুলনায় এদের দৃঢ়তা বা শক্তির অনুপাত অন্যান্য পদার্থের তুলনায় অনেক বেশি। সিলিকন একটি ভালো অর্ধপরিবাহী হলেও এটিকে সিএনটির মতো সরু পাতে রূপান্তর করা যায় না। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, সিএনটি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহে উন্নতি হবে, ট্রানজিস্টরের গতি বাড়বে এবং যন্ত্রের কর্মদক্ষতা বাড়বে এবং জায়গা অনেক কম লাগবে।
তবে আণুবীক্ষণিক সূক্ষ্মতার কারণে ন্যানোটিউবের যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ তৈরির কাজটি কঠিন। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অধ্যাপক শুভাশিস মিত্র এই সিএনটি কম্পিউটার তৈরির গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, মানুষ এখন সিএনটির যন্ত্রপাতির নতুন যুগ সম্পর্কে ভাবতে শুরু করেছে। পরিপূর্ণ ডিজিটাল ব্যবস্থায় সিএনটির ব্যবহার সম্পর্কে এবার একটি বাস্তব প্রমাণ উপস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। স্ট্যানফোর্ডের স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের গবেষণাগারে তৈরি কম্পিউটারটির আকার মাত্র কয়েক বর্গমিলিমিটার।
এটি ১৭৮টি ট্রানজিস্টরের (প্রতিটিতে ১০ থেকে ২০০টি ন্যানোটিউব রয়েছে) সাহায্যে মৌলিক গণনার মতো কাজ সম্পন্ন করতে পারে। তবে এই কম্পিউটারের গতি বর্তমান যুগের কম্পিউটারের তুলনায় কয়েক লাখ গুণ ধীর। কারণ এটির প্রসেসরের ক্ষমতা মাত্র এক কিলোহার্টজ। তবে গবেষকেরা বলছেন, তাঁরা সিএনটি ব্যবহার করে আরও গতিশীল কম্পিউটার তৈরি করতে পারবেন। এ জন্য প্রসেসরের সামর্থ্য বাড়াতে হবে।
স্ট্যানফোর্ডের কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ ও নকশাকার নরেশ শানবাগ বলেন, সিএনটি অর্ধপরিবাহী ব্যবহার করে শক্তিশালী কম্পিউটার তৈরি করতে আরও বহু বছর লাগতে পারে। তবে বর্তমান উদ্যোগকে প্রাথমিক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইবিএমের টমাস জে ওয়াটসন রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক সুপ্রতীক গুহ বলেন, সিএনটিকে এখন রাসায়নিক গবেষণাগার থেকে বাস্তব পরিবেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নতুন কম্পিউটারটির ট্রানজিস্টরগুলোকে আরও ছোট আকারের (আট মাইক্রোমিটার বা এক মিটারের ১০ লাখ ভাগের এক অংশ) মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এএফপি ও বিবিসি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।