মন্ত্রীসভায় অনুমোদন হওয়া জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালার খসড়ার ভিত্তিতে-নারীরা সম্পত্তিতে সম অধিকার পাইবো। তা নিয়া আর কারো জ্বালা ধরলো না গায়ে। ধরলো আগে ধর্মান্ধ ইসলামী নাম নিয়া রাজনীতি করা এক দঙ্গল লোকদের! এর লাইগা হেরা আবার হরতালও করবো। এর লাইগা আবার সংবাদ সম্মেলনও করি হালাইছে উনারা। কি আজব কথা দেহেন চে।
এহন কি আর হেই দিন আছে মিয়া, নিজে ভালা ভালা খাওন খাইবেন ফ্রি দাওয়াতে। নিজের ঘরের বোন আর বউগো কথাও একটু ভাবেন। নাকি হেরা আমনে-গো গোনার বাইরে! ভাইজান আম-জনতারাও যে মুসলমান। এই কথাডা ধর্মভিত্তিক দল ও সংগঠন এর নেতা-ফেতারা কি ভুইলা গেলেন! আর আমরা হইলাম গিয়া অসাম্প্রদায়িক একখান মায়া মোড়ানো দেশ। এত ভুলা হইলে তো, ধর্মীয়নেতা সমস্যা! আর যাই হোক ঘর থেকা নারীরা কামাই কইরা এহন পুরুষগোরেও খাওয়ায়।
এরপক্ষে লাখ লাখ পরমান আছে হুজুর গন! সব কইবেন তা কইবেন না, জানি!
উপরে যা কইলাম, আফসোস এইভাবে বলবার পারুম না। কারণ সেই সুযোগ কই! আমরা হইলাম গিয়া শেষ কাতারের লোক। আমরা কইলেই কি না কইলেই কি? এই প্রশ্ন খান যখন করি নিজেরেই নিজে। তহন শুধু ভাবি- কেউ না কেউ তো পড়বো। আমি ভুলই কইলাম।
কেউ তো আমারে শুদ্ধ কইরা দিবো। এই আশা করলাম। গরীবের আশা তো আবার বড় অয়। ধরতে পারেন হেই রহমই।
আমার বন্ধু থুক্কু বান্ধবী।
একখান ভালোমানের চাকুরী করে। বেশ ভালা বেতনও পায় হুনছি। আমারে খাওয়াইবো ঢাকার বিখ্যাত নান্নার বিরানী। রিকশায় যাইতে যাইতে আলাপ-চারিতার কিছু অংশ আমনে গো লাইগা তুইলা ধরি এই বিষয়ডায়- নারীর সম্পত্তিতে সম অধিকার পাইবো, আইন হইতাছে। তার কাছে এই কথাডা কইলাম।
তার কি প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলাম। সাথে সাথে তার উত্তর- আসলেই হবে তো! আমিও দেখেছি পত্রিকায়। আমি কইলাম- আলবৎ অইবো। কারণ সরকার নারীগো ভোট গুনা পাওনের লাইগা এই আইন পাশ করবোই। এই কথা কইয়াই আমি হাসি দিলাম ওর প্রতিক্রিয়া জানার লাইগ্যা।
আবার প্রশ্ন- তাহলে তো ভালোই হয়। কিন্তু পাশ হবে তো? আমি বললাম- বাহ রে! যেহেতু একটি জনগুরুত্বপুর্ন হবে এই আইনটি। যেহেতু নারীর ক্ষমতায়ন এর প্রশ্নে সবাই সহমত পোষণ করে। নারীর স্বাধীনতা এখন সবাই আশা করে। এই আইন এর বিরুদ্ধে কেউ মনে হয় না, বলবে কিছু।
তোমাগো লাইগা তো ভালোই। আগে আমরা ভাইরা বেশি পাইয়া যাইতাম। শুধু শুধু ছেলে হইবার কারণে। তোমাগোও যে দরকার সম্পত্তি। এই কথাডা আমরা হুনবার চাইতাম না।
এহন হুনন লাগবো। কি কও ভালাই তো অইবো, নাকি? ভাই আমিও চাই। আমি কি একখান পুরুষ না? কইয়া আবারও হাসলাম।
এরপর আমার সে বন্ধু থুক্কু বান্ধবী। বারবার খালি ভুল করি দেহেন চে।
আপনারা তো বন্ধু বললে তো আবার ছেলে বন্ধু ভাববেন। তাই তো বান্ধবী বলতে হয়। আচ্ছা এইটা ভালো হয় না- বন্ধুই বলি। হাজার হইলেও সম অধিকার এর সাথেই যেহেতু আছি। লিঙ্গভেদে বন্ধুত্বকে একই শব্দে রাখলাম।
যাই হোক সে বন্ধুটি বলে উঠলো-আমি একবার বিতর্কে অংশগ্রহণ করেছিলাম। আমি যৌতুকের পক্ষে ছিলাম এবং আমি প্রথম হয়েছিলাম। এই কথা শুইনা তো আমি পারি না রিকশা থেকে লাফ দেই। বলে উঠলাম- বলো কি? নারী হইয়া তুমি যৌতুকের পক্ষে বিতর্ক করছো। যা কইছো তা কি আবার সমর্থন করো নাকি? নাকি বিতর্কের খাতিরে বিতর্ক করা? বললো- হ্যাঁ আমি যা বলেছিলাম এবং আমি তা বিশ্বাস করি।
আমি বললাম- কেন?
এরপর ও যা বললো তার যুক্তি এরকম- হিন্দু অথবা মুসলিম নারীরা বিয়ের পর আসলে ঐভাবে পিতার কাছ থেকে এমনিতেও কিছু পায় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। এরপরও কারও পৈতৃক যদি সম্পত্তি থেকে থাকে। সেখানেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারীরা সম অধিকার খাটাতে পারেন না। ভাগ-বাটোয়ারার প্রশ্নে- বোন যদি হন দুইজন এবং ভাই একজন। তাহলে দুই ভাগের একভাগ ভাই একা পেয়ে যান।
দুই বোন হল ঐ বাকি একভাগ এর অর্ধেক অর্ধেক পেয়ে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রে ভাই বেশি হলে বোন কিছুই পান না ধরতে গেলে! আর সব স্বামীই যে ভালো ভাবে অর্থবান তা না হতেও পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের জন্য যৌতুক নিয়ে স্বামীর ঘরে যাওয়া ভালো এবং সঠিক। যদিও এর ব্যত্যয় এবং এ নিয়ে অনাচার ঘটায় কেউ কেউ। তবুও যৌতুক বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একজন মেয়ের স্বামীরই কাজে লাগে প্রয়োজনে।
সমস্যা তো সবারই হতে পারে। তাই না? বলেই আমার দিকে উত্তর এর অপেক্ষা সে বন্ধুটির। আমি হা হয়ে শুধু যুক্তিগুলো শুনলাম।
এরপর আমারও তার প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে এক কথায়ই। হ্যাঁ ঠিকই বলেছ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।