আগের সেই হৈ হুল্লোড়, প্রাণচাঞ্চল্য নেই বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে। কেমন যেন মন মরা ভাব সবার মধ্যে। আগের আট দশটা সিরিজের অনুশীলন আর গতকালের বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে কেমন যেন ফারাক। আর এই ফারাকের মূলেই যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে লজ্জাজনক পরাজয় তা স্পষ্টই দেখা গেছে। তারপরও শোকের সে পাথর সরিয়ে নতুন করেই যেন শুরু করার একটা তাড়না বাংলাদেশ দলের সবার মধ্যে।
আর এই শুরুর পথে বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি সিডন্স সবচাইতে বড় টনিক হিসেবে দেখছেন চট্টগ্রামের দর্শকদের সমর্থনকে। আগের রাতে চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে নেমে যে সংবর্ধনা পেয়েছেন সিডন্স এবং তার শিষ্যরা তা অভিভূত করেছে বাংলাদেশ দলের কোচকে। চট্টগ্রামের মানুষের এই ভালবাসাকে পুঁজি করে এগিয়ে যেতে চান সিডন্স। কিন্তু এই এগিয়ে যাওয়ার পথের সৈনিকদের মনের অবস্থা কেমন তাও জানালেন দলের কোচ।
এমন একটা বাজে পারফরম্যান্সের পর কার মনই বা ভাল থাকে।
দলের সকলে চেষ্টা করছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুঃসহ সে স্মৃতিকে পেছনে ফেলে সবকিছু নতুন করে শুরু করতে। চট্টগ্রামের ভিন্ন মাঠ, ভিন্ন পরিবেশ সবকিছু মিলিয়ে এখন নতুন করে শুরু করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। দলের ক্রিকেটাররা যে প্রতিজ্ঞা করেছিল জাতির প্রতি এখনো সে প্রতিজ্ঞাতেই রয়েছে। এক কথায় অতীতকে পেছনে ফেলে ভালর দিকে মুখ করে আছে ক্রিকেটাররা।
ঢাকায় ওয়েস্টইন্ডিজের কাছে ৫৮ রানে অল আউট হওয়ার পর গতকালই প্রথম মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ দল।
আর প্রথম দিনেই দলের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে বেশি কাজ করলেন কোচ। নেটের বাইরে বসে একেবারে কাছে থেকে ভুলগুলো ধরার চেষ্টা করছিলেন সিডন্স। যে ভুলগুলো পুড়িয়ে মেরেছে বাংলাদেশকে। একে একে ব্যাটসম্যানদের ডেকে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ক্রিকেটারদের মধ্যেও ছিল যে ভুলের পথে পা দিয়েছিল আগের ম্যাচে তা থেকে বেরিয়ে আসার তাড়না।
কারণ ঐ একটা ম্যাচই বাংলাদেশের সব অর্জনকে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে।
ঢাকার ম্যাচের পর সমর্থকদের ক্ষুব্ধ মনোভাবটাকেও স্বাভাবিক বলেই মনে করেন সিডন্স। দলের এমন পরাজয়ে সব দেশের দর্শকদেরই প্রতিক্রিয়া এমন হয়। তবে চট্টগ্রামের দর্শকদের প্রশংসা করে সিডন্স বলেন এখানকার দর্শকরা বেশ ভাল। আশা করছি আগের মতই সমর্থন পাব আমরা এখানে।
চট্টগ্রামের মাঠে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন লোকাল বয় তামিম। তাকে নিয়েও আশাবাদী সিডন্স। এই মাঠে আগের ম্যাচে তামিম ভাল ব্যাট করেছে। এছাড়া নিজের মাঠে তামিম ভাল করবে তেমন প্রত্যাশাতো থাকবেই। সে প্রত্যাশার চাপে ভেঙে পড়বেনা তামিম কিংবা তার সতীর্থরা তেমনই আশা করেন সিডন্স।
তাছাড়া গত দেড়/দুই বছরতো আমরা ভাল ক্রিকেট খেলছি। একটা খারাপ দিন গেছে বলে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে তেমন মানতে নারাজ সিডন্স।
গতকাল জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলনে নামা বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে বেশি কাজ করলেন কোচ সিডন্স। নেট থেকে বেরিয়ে আসার পরও ইমরুল-মুশফিকদের পরীক্ষা দিতে হল। অনুশীলনের শুরু থেকেই তামিমকে দেখা গেল সতীর্থদের সাথে কথাবার্তা বলে সময় কাটাতে।
শেষ পর্যন্ত তামিমকেও ব্যাট করতে নামতে হল। বলতে গেলে বাংলাদেশের গতকালে অনুশীলনটা ছিল ব্যাটিংময়। কারণ এই ব্যাটিংই যে, আগের ম্যাচে সবচাইতে বড় লজ্জাটা দিয়েছে।
চট্টগ্রামে দুটি ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে। আর এই দুই ম্যাচে স্বাগতিকদের প্রতিপক্ষ যথাক্রমে ইংল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ড।
১১ মার্চ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ হিসেবে দুই দলকে সমীহ করছেন বাংলাদেশ দলের কোচ। আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়া ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যে সিডন্স শীষ্যরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে লড়বে সেটা ঘোষণাই করে দিয়েছেন সিডন্স। আর এছাড়া তো বিকল্প কিছু নেই তার দলের সামনে।
কোয়ার্টার ফাইনালের সম্ভাবনা জিইয়ে রাখতে হলে এই দুটি ম্যাচে জয়ের কোন বিকল্প নেই বাংলাদেশ দলের।
আর তা বুঝতে পারেন কোচ সিডন্স। চট্টগ্রামের ম্যাচ দুটি জিততে তার শীষ্যরা সবকিছু উজাড় করে দিতেও প্রস্তুত বলে জানান সিডন্স। আগামী আরো চারদিন চট্টগ্রামে অনুশীলনের সুযোগ পাচ্ছে সাকিবরা। এরপর শুক্রবার হবে আসল পরীক্ষা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হারের ধকল কতটা কাটিয়ে উঠতে পারে সাকিবরা সেটা দেখার প্রত্যাশায় চট্টগ্রামের দর্শকরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।