কলাগাছ কেটে তার উপর আঠা দিয়ে কাগজ লাগিয়ে তৈরি করা শহীদ মিনার আর ইট, লোহা, কনক্রিটের শহীদ মিনারের মাঝে কি কোন তফাত আছে?
গতকাল(২০.০২.২০১১) বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা নামের এক গ্রামে গিয়েছিলাম এক জরুরি কাজে। ফেরার পথে, রাস্তার পাশে দেখতে পেলাম এক অদ্ভুত দৃশ্য-ছোট ছোট কিছু ছেলে কলাগাছ কেটে কী যেন তৈ্রি করছে। কাছে গিয়ে বুঝলাম একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে শহীদ মিনার বানানো হচ্ছে। এসব শিশু পড়াশুনা করে বেসরকারি অনুদানে চলা খুপড়ির মত এক বিদ্যাপীঠে। ওরা নিজেরা কষ্ট করে কলাগাছ কেটে, নিজেদের মত করে ওদের স্কুলের সামনে বানিয়ে ফেলেছে এক শহীদ মিনার।
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে খালি পায়ে শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসবে বলেও ওরা জানালো। ছবিতে ছোট ছোট কারিগরদের কচি হাতে গড়া শহীদ মিনার দেখে কি বোঝা যায় কতটা নিষ্পাপ মমতা আর আবেগ মিশে আছে ঐ কলাগাছ আর কাগজের শহীদ মিনারে! ওদেরকে খুব আদর করে দিতে ইচ্ছা করলো; ভাষা আন্দোলনের মাসে, দেশের মাটিতে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি ‘সেলিব্রেটি’র কণ্ঠে উর্দু গান শুনে যত ক্ষোভ আর ঘৃণা জমে ছিল তার খানিকটা দূর হল ওদের নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে।
কচি কচি বাচ্চারা তো নরম কাঁদামাটির মত- ইচ্ছেমত তৈরি করা যায় যা খুশ! কাঁদামাটি দিয়ে গুলতি’র গুলি বানিয়ে যেমন পাখি মারা যায়, তেমন পূজা’র মূর্তিও বানানো যায়। যারা নিজেরা শহীদ মিনার বানিয়ে ফেলতে পারে এত সহজে তারা তো নিশ্চয়ই অনেক উর্বর কাঁদামাটি। নষ্ট হতে বসা এ দেশটাকে বাঁচাতে হলে সেই উর্বর কাঁদামাটিকে আমাদেরকেই ব্যবহার করতে হবে।
এ দায়িত্বটুকু আমাদেরকে নিতেই হবে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।