-
অনেকখানি অনিশ্চয়তার বেড়াজাল ডিঙিয়ে-
আরও একটি নিশ্ছিদ্র তন্দ্রাচ্ছান্ন রাত্রি পেরুলো।
প্রসন্ন মেজাজে বিছানায় গেলেও জানা ছিল না যে-
আগামী কালের সোনালী রোদ্দুর দেখতে পাব কি না?
স্বপ্নরা ছুটি নিয়ে চলে গেছে-
পরিশ্রমী উচ্চাভিলাষী লোকদের আঙিনায়।
জোছনার আলোর সাথে মিলেমিশে
নানা রঙ নিয়ে খেলা করে তাদের বিছানার চারপাশে।
সত্যি করে বলছি -
হতাশা নয়, ভালবাসা বুকে নিয়েই ইচ্ছে করে -
শুরু থেকে শুরু করি আমার জীবন।
এইটুকু মাত্র -একটাই ছোট্ট জীবন!
এতখানি নির্ভুল, এক্কেবারে নির্ভেজাল হয়ে
লাভ কতখানি?
কিবা এসে যায়? লোকে যদি বলে-
“না না, ওকে দিয়ে চলবে না;
ও বড্ড গোলমেলে”।
"
কেননা, ব্যাকরণসিদ্ধ জীবনের চেয়ে ঢের ভালো-
মার নিষেধ সত্বেও;
স্কুলের মোড়ের ঐ রাস্তায় দাঁড়িয়ে
বিস্কুটের গুড়া মাখা বারআনার কুলফি খাওয়া।
কিংবা,
বৈশাখী মেলায় ভীড় ঠেলে বারবার নাগরদোলায় চড়া।
এতদিন, বাইরের অফুটন্ত পানি না খেয়ে খেয়ে,
আমার পাকস্থলীটাই দুর্বল হয়ে গেছে।
তাই, এখন থেকে যখন তখন-
খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে,
চটপটি-ফুচকা, খাসীর চাপ, লুচি-পরোটা
আর মালাই মাইরা চা খেতে খেতে ভাবি, যে-
আমার ব্যাগে,
থার্মোমিটার, জ্বরের ঔষধ, মাফলার
আর ওরস্যালাইনের প্যাকেট-
কতখানি ওজনই না বাড়াতো!
পড়াশোনার বইয়ের স্তুপের মাঝে
মুখ থুবড়ে পড়ে থাকার সময় এর কথা ভাবতেই
বিষম হেঁচকি ওঠে।
অথচ, এখন -আমার মত স্থলজ উদ্ভিদ লোক;
ব্রজেন দাসের মত দিব্যি সাঁতার দিয়ে বেড়ায়-
উপন্যাস আর কাব্য গ্রন্থের অথৈ সাগরে।
আজকাল তাই পথ চলতে পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া
কোন চঞ্চল তরুনীর এক চিলতে হাসির বিনিময়ে
তাকে হাজার টাকার ফুল উপহার দিয়ে
কৈশোরের প্রথম প্রেমের স্মৃতিকে মুক্তি দিতে পারি-কত অনায়াসে!
অফিসের বড়কর্তার খেয়ালী ছন্দে~
বিনা কারণে নেচেছি অনেক!
এবার না হয় নিজের ভেতরকার অচেনা সুরের
পিছেই ছুটবো।
মিথ্যে অহংকারের ঐ ক্লোজড কলার চাকরীটা-
হারাবার লজ্জায়,
আমি কিঞ্চিত দুঃখিতও হবো না।
ঘরকুনো এই আমাকে যদি বলা হয়-
“বৃষ্টির কারণে তোমার খেলা পরিত্যাক্ত হলো”আমি বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে প্রকৃতির দিব্যি দিয়ে বলছি-
একেবারে যাযাবর হয়ে যাব।
দাঁড়ি মোছ কামানো বন্ধ করে
এই এত্ত বড় চুল রেখে দেব।
মন চায় ছুটে যেতে শিকড়ের সন্ধানে,
দৈনন্দিন ব্যাস্ততায় যে হাতছানি অদৃশ্য ছিল
তা যেন দৃঢ় ভাবে প্রতীয়মান হয়ে ওঠে চোখ বুজলেই।
ফিরব তাই মাটির গন্ধমাখা শৈশবে- আমার গ্রামে।
সর্ষে ক্ষেতের মাঝে দাঁড়িয়ে চোখ জুড়াবো যতক্ষন মন চায়।
বড় পুকুরে ছিপ দিয়ে মাছ ধরবো ভর দুপুর বেলায়।
শীতে কুয়াশার মেঘ সরাতে সরাতে পেট ভরে খাবো খেজুরের রস।
আর পৌরসভার পার্কে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুড়ি উড়াবো আকাশে।
ইচ্ছে হলেই ব্যাংক থেকে সব টাকা তুলে নিয়ে-
কুয়াকাটায় দেখবো অবাক বিস্ময়ে
আঁধার ঠেলে কেমন করে হয় সূর্যোদয়।
আবার দিন শেষে কি অভিমানে
ক্লান্ত সূর্য ঢলে পড়ে ঐ পশ্চিমে।
আর কক্সবাজারের বালুকাবেলায় আমার
কেবল ধীর পায়ে আর হাঁটা চলবে না।
একের পর এক ঢেঊ গলিয়ে নেমে যাবো গলা-পানিতে
না হয়; নোনা পানিতে জ্বালা ধরবে চোখে-
কাশিও হতে পারে।
তথাপি, শিশুর মত দাপাদাপি করে
একেবারে চোখ লাল করে
ফিরবো হোটেলের কামরায়।
তারপর প্রেমের গান শুনতে শুনতে , বেশ মৌজ করে
নেশার গ্লাসে চুমুক দেব বেশ সাহেবী কায়দায়!
বুকের ভেতরে জমানো অভিমান, হিংসা,ক্রোধ আর অন্ধকার-
সিগারেটের ধোঁয়ার সাথে মিশিয়ে
ছেড়ে দেব বাতাসে কুন্ডুলী পাকিয়ে ...
লোকে বলুক, “ ও বড় বাজে লোক "।
তাতে আমার বিন্দুমাত্র আফসোস হবে না ।
সত্যি করে বলছি-
শুধু যখন অন্তরটা ভীষণভাবে পাপবোধে আচ্ছন্ন হবে;
নিজেকে আত্নসমর্পন করবো প্রভুর কাছে।
হাঁটু গেড়ে বসে ক্ষমা ভিক্ষে করতে
আমার এতটুকুও সংশয় হবে না।
সময় গড়িয়ে ক্যালেন্ডারের পাতায়
পেরিয়েছে অনেকগুলো বছর ,
জং ধরেছে শরীরের কল-কব্জায়।
তবুও নতুন করে রক্তে টের পাই
সবুজ জীবনের উন্মাদনা।
তাই, যদি আমাকে আর একবার সুযোগ দেয়া হ্য়,
লোকে যে যা বলুক , কসম খেয়ে বলছি-
“একে বারে অন্য মানুষ হয়ে যাবো ‘আমি ’-
একদম অন্যরকম”...। ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।