সভাপতি- বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ, সম্পাদক ঢেউ, সভাপতি- জাতীয় সাহিত্য পরিষদ মুন্সীগঞ্জ শাখা
মৌলবাদীদের জীবনাচার
মানুষতো মানবিক মৌলবাদীরা আরণ্যক
ধর্মকে পুঁজি করে, ধার্মিকের বেশ ধরে অতিশয় প্রতারক
কোরানে আস্থা কম রাস্তা দেখায় নিজের লেখা হাদিসে
তারপরও ভোল পাল্টায় পরে বেকায়দায় যদি সে।
মানুষতো জ্ঞান পিপাসু মৌলবাদীরা নির্বোধ
জ্ঞানীর ভাব ধরে, জ্ঞানার্জনের পথ করে অবরোধ
জ্ঞানকেই যত ভয়, জ্ঞান হয় হাওয়ার নিষিদ্ধ গন্ধম
তারপরেও জ্ঞানের সুফল করছে কবুল হরদম।
মানুষতো অনুসন্ধিৎসু মৌলবাদীরা কূপমুণ্ডুক
কূয়াকে জগৎ ধরে রাখছে ভরে সব বুজরুক
বিজ্ঞানের যত বর্ণিল তত্ত্ব জটিল সব ফর্মুলা
কূয়াতেই আবিস্কার যদিও দাবিদার খোয়া গেছে সবগুলা।
মানুষতো বুঝে ভালবাসা মৌলবাদীরা বুঝে যৌনতা
নারীতো ঘরের পণ্য, অবগুণ্ঠিত করে সাজারে ঘরে মৌনতা
চার বউ এর সুন্নত চায়, ফরজ পড়ে রয় বাকীর খাতায়
দেখা গেলে নারীর মুখ, ভেস্ত দোজখ এক হয়ে যায়।
মানুষতো শান্তিকামী মৌলবাদীরা বুঝে বোমার ভাষা
বাঁচলে শহীদ মরলে গাজী, জীবন বাজী এক ভরসা
এক খুনেতে গুনাহ মাফ, দশ খুনেতে স্বর্গে লাফ
এ ধারণায় করতে চায় মর্ত হতে মালাউন সাফ।
মানুষতো মননশীল, মৌলবাদীরা যুক্তিহীন
মুক্তচিন্তা দুষ্টু চিন্তা, বিশ্বাসকে করছে মলিন
মনের জানালা রুদ্ধ করে, বগলদাবা করে অন্ধকার
একই চিন্তা একই ভাবনা বন্ধ করবে দ্বন্দ্ব সবার।
মানুষতো সৃজনশীল, মৌলবাদীরা সৃষ্টিনাশা
মগজ রেখে চরণ তলে চুক্ষু দেখে নির্দেশ আসা
নেতার নির্দেশ ফরজ সম, খতম করার চোখ ইশারায়
মুরতাদ নাস্তিকটার, কল্লা কাটার জোশ এসে যায়।
মানুষতো সভ্য হয়, মৌলবাদীরা হচ্ছে আদিম
চিন্তা চেতনায়, বৃত্ত বন্দি বৃত্তের বেড়ায় আলহীন লাটিম
ওদের বিজ্ঞান হয়েছে বিশ্বাস আর কলায় রয়েছে কাম
জীবন মানে শুভর সনে যুদ্ধ আর নারী সংগের আরাম।
মানুষতো কর্মমূখী, মৌলবাদীরা কর্মবিমূখ
কর্মতে কষ্ট অতি, কমলে কর্মের গতি বাড়ে সুখ
কর্মে ছোয়াব নাই, ইহুদী নাসারারাই কর্মে আসে
কর্মে যৌবন ক্ষয়, তাগদ লয়, নেকীর কর্ম সহবাসে।
ধর্মীয় বোমা
জেলায় জেলায় খইয়ের মতো ধর্ম ফোটে
বোমার ভাষায় সামীল হওয়ার দাওয়াত জোটে
মুখরা রমনী যেমন দাপট দেখায় কথার চোটে
বদমাশরাও মুর্হুমুহ শ্লোগান পায় দাঁড়ালে ভোটে
শীতের রাতে যেমন কথার মালা ওয়াজীর ঠোঁটে
আশেকানদের দু‘চোখ ভরে হুরপরীরা নেচে উঠে।
লোভাতুর উগ্ররাতো ক্ষমতা চায় ফাটিয়ে বোমা
মানুষের খুলি উড়িয়ে স্বপ্ন আঁকে মনোরমা
একটা কাজই করতো ওরা গিট খুলে পাজামা
এখন ওরা শান্তির মাঝেও বাঁজিয়ে দেয় দামামা
বারুদেই শান্তি খুঁজে- নেতা যখন ওসামা
মস্তিষ্কটায় অন্ধকার ভরে সভ্যতা রাখে শূন্য জমা।
বাংলাদেশকে অচ্ছুৎ ভেবে বানাতে চায় বাংলাস্তান
ধর্মটাকে কব্জায় রেখে অন্ধকারে করে অবস্থান
ধূমধূম বোম ফাটিয়ে দেশটাকে বানায় গোরস্থান
ধূয়ার মাঝেই হুর নাচিয়ে কল্পনায় যায় পরীস্থান
নহর থেকে শরাব নিয়ে কণ্ঠ ভিজিয়ে করবে প্রস্থান
বোমা ফাটিয়ে ধর্ম ছিটিয়ে ফেরত চায় পাকিস্তান।
লাল এখন গোলাপের নয় রক্তের
লাল বলতে এতকাল গোলাপকেই বুঝতাম
টকটকে লাল গোলাপে মুগ্ধ হতাম, নিমগ্ন হতাম
সুন্দরবন যদি গোলাপের বন হত
আমাজান যদি হত গোলাপের নদী
প্রশান্ত-আটলান্টিক হত গোলাপের সমুদ্র
হিমালয় আলপসের শৃঙ্গ হত গোলাপের
আকাশ যদি ছেয়ে থাকতো লাল লাল গোলাপে
এভাবেই লালে আকৃষ্ট হই গোলাপের জন্য।
বায়ান্নর ফেব্র“য়ারিতে একবার
গোলাপের লাল ছাপিয়ে এসেছিল রক্তের বন্যা
আবার বায়ান্ন বছর পর আরেক ফ্রেব্র“য়ারি
কেড়ে নিল গোলাপের লাল।
আরণ্যক নির্বোধদের বুদ্ধিহীন মস্তিষ্ক
হিংস্র চাপাতি হয়ে ধেয়ে আসে-
কেঁপে উঠে সক্রেটিস, কোপার্নিকাস, গ্যালিলিও
কেঁপে উঠে মুছা, কৃষ্ণ, বৌদ্ধ, যিশু
ধাবমান রক্তরাশি ডুবিয়ে দিবে নূহের নৌকা
ফিনকি দিয়ে আসা রক্তের আগ্নেয়গিরি
চাপা দিবে নিয়ইয়র্ক, প্যারিস, জেদ্দা
বইমেলা, বিশ্ববিদ্যালয়, পাবলিক লাইব্রেরি
রাজপথ, সংসদভবন, জলপাই রঙের ট্রাক
চোখের নিমিশে ভেসে যায় লাল স্রোতে।
গোলাপের লাল, গোধুলীর লাল, ভাটার অগ্নির লাল
লজ্জা আবিরের লাল, বেনারশীর লাল, কৃষ্ণচূড়ার লাল
ওষ্ঠের লাল, জিভের লাল, পতাকার লাল, ডাকবাক্সের লাল
মিশে যায় হুমায়ুন আজাদের ঝরে পরা রক্তের স্রোতে
সেই থেকে গোলাপের লালে দেখি রক্ত
গোলাপ এখন লেলিহান শিখা
গোলাপ থেকে এখন ঝরে রক্ত
এখন লাল বলতে বুঝি রক্ত; ছোপ ছোপ রক্ত
লাল এখন গোলাপের নয়, রক্তের।
পরাধীনতার গল্প
এক হতাশাগ্রস্থ বিষণœ যুবকের কাছে
তার পরাধীনতার গল্প শুনছিলাম-
“১৯৫৭ সালে তার পরাধীন পূর্বপুরুষ
স্বাধীনতা হারিয়েছিল ইংরেজদের কাছে”।
পরাধীনদের আবার স্বাধীনতা হারানো!
আমি হো হো করে হেসে উঠতে গিয়ে বিষম খাই;
ও কি আমারই পূর্বপুরুষদের কথা বলছে?
অবনতমুখী যুবক গল্প বাড়ায়-
“১৯৪৭ সালে তার পিতামহ পরাধীনতা
হারিয়েছিল পরাধীনতার কৃষ্ণগহ্বরে”।
পরাধীনদের আবার পরাধীনতা হারানো!
আমার বা পাশের তরুণী খিলখিলিয়ে উঠে;
আমার সন্দেহ দৃঢ় হয়-
ও কি আমার আমারই পিতামহের কথা বলছে?
বেদনার্ত যুবক বলে, “একাত্তরে আমার পিতা
তার পরাধীনতা হারায় স্বাধীনতার কাছে”।
আমরা বুঝতে পারি, আমাদের মহান
স্বাধীনতাকে নিয়ে ও ব্যঙ্গ করছে
আমরা দু‘জন একসাথে প্রতিবাদ করি- খামোশ!
অচেনা যুবক তার চোখ মোদে
খুব আস্তে অস্ফুট কণ্ঠে বলে,
“সাহস থাকলে বদর বাহিনীর প্রধানকে
একবার হুঙ্কার দিয়ে বলুনতো-
সাবধান হ মইত্যা রাজাকার”।
২৬/০৩/২০০৫
বার্ধক্যে বিশ্বাস
দুর্দমনীয় স্রোত আর হিংস্র ঢেউয়ের আঘাত
উত্তাল পদ্মা দ্রোহে নাম নিয়েছিল কৃত্তিনাশা
অস্থির উš§ত্ততায় বসাতো বিকট রাক্ষসে দাঁত
আজ দেখি বয়সের ভারে নূয়ে তার শান্ত হয়ে আসা।
বিগত যৌবনা নায়িকার সুঢৌল সেই উঁচু বুক
মোহনীয় পাছা দোলালে প্রাণে পড়তো চাবুক
বার্ধক্যের টানে ঝুলে গেছে বুক দেবে গেছ পাছা
নব্য উর্বশীদের বুক পাছার দাপটে হয়ে গেছে আগাছা।
বিশ্বাসীদেরও বয়স হয়েছে আড়াই লক্ষ বছর
বার্ধক্যের অঘোর পীড়ায় বধ হয়ে কাঁপছে থরথর
এই বুঝি প্রাণ যায় বেরিয়ে বিজ্ঞানের আলোয়
তবু মরার আগে মরতে চায় ঘটিয়ে প্রলয়।
বার্ধক্য আসে প্রাকৃতিক নিয়মের হাওয়ায় ভেসে
উঁকি দেয় বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড পেরিয়ে আমার দরজায় এসে
বয়সের ভারে আক্রান্ত আমার শীর্ণ বিশ্বাসের ডালায়
ভেঙ্গে দিয়ে গড়ে যুক্তি, বিশ্বাসেরা জানালা দিয়ে পালায়।
অর্থহীনভাবে বেঁচে আছি
অর্থহীনভাবে বেঁচে আছি, অর্থহীন এ বেঁচে থাকা
মৌলবাদীরা দাপিয়ে বেড়ায়, উড়িয়ে চাঁদতারা খচিত পতাকা।
১৬/১২/২০০৬
মোল্লার স্বর্গ
জানি যৌনতায় জন্মে জীবন
মৃত্যু মাটির মধ্যে মিশে
সরল সাবলিল সত্য সৃজন
রহস্যে রেখে রায়টের রিষে
মিথ্যায় মৌলবাদী মাদকতায় মাতোয়ারা
হিংসায় হননে হটকারীদের হাতড়া
আল্লার আদেশ আমলে আপত্তি
স্বার্থের সময় সকলই সম্মতি
দোজখের দোয়ার দূরে দেখে
মনোহর মলম মোল্লা মেখে
যুবতীর যৌবনের যামিনীর জমাদার
সাজতেই স্বর্গের সিঁড়ি সাবাড়।
হুমায়ুন আজাদ
শহরের সবচেয়ে হাইরাইজ ভবনের দিকে তাকালেই
আপনার কথা ভাবতে হয়
আকাশ বিদীর্ণ করে- এভাবেই মাথা উঁচু করে
দাঁড়িয়েছিলেন সুদৃঢ় কংক্রিটের ভিতের উপর
উইপোকা, ফ্যাঙ্গাস, গুবরে পোকা, শ্যাওলারা কতোবার
প্রলোভনের ঝাপি নিয়ে ফিরে গেছে
আপনার উদ্ভাসিত আলোর ঝিলিকে ঝলসিত হয়ে।
সুদৃশ্য ফরসা পতিতারা দামী হোটেল থেকে বেরোয়
ভোরের আলোয়
একই বোধে আমাদের অপবুদ্ধিজীবীরা বেরোয়
সুগন্ধা থেকে, সচিবালয় থেকে- সাহিত্যের মুখোশ পরে
পতিতারা বুদ্ধিজীবী, না বুদ্ধিজীবীরা পতিতা
বিতর্ক চলে ট্রান্স সাইবেরিয়ান রেলের মতো।
ইয়েস স্যার না বললে জাতীয় পুরস্কার মিলে না
অর্থ মিলে না, রাষ্ট্রীয় সম্মান মিলে না
ইয়েস উদ্দিনরাই আজ সবচেয়ে সুগন্ধী শুভ্র পালকটি
মাথায় নিয়ে উৎকট গন্ধ ছড়ায়
এতকালের বাংলার মুক্ত আকাশও
ঢেকে দিয়েছে মৌলবাদীরা, শকুনের পাখায়
পাকসার জমিন সাদবাদ শ্লোগান দিয়ে।
এখন এমন একটা সময় যখন
রাজনৈতিকরা অবতীর্ণ দুর্বৃত্তের ভূমিকায়।
এসবের বিরুদ্ধেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিলেন একজন-
তিনি আমাদের সক্রেটিস, হাইপেশিয়া, কোপার্নিকাস
জ্যোতির্ময় হুমায়ুন আজাদ।
জান্নাতুল ফেরদাউসে বঙ্গবন্ধু
নিশানা লক্ষ্য রেখে হেঁটে যাই। হাঁটার আমার
অভ্যাস নেই কস্মিনকালেও। ইতিহাসের পথের ধার
ধরেও হাটিনি এতোটা। ক্লান্তিতে গাড়োয়ানের অলস ষাঁড়
যেভাবে ধপাস করে বসে, কথা সেভাবে বসে পরার।
খুবই অবাক হই আকাশের সীমানা ছাড়িয়ে
অবলীলায় পার হচ্ছি। চিম্বুকের চূড়ায় দাঁড়িয়ে
হালকা কুয়াশা ঢাকা চরাচর আমার বিহ্বলতায়
একবার ক্লান্তিহীন হয়েছিলাম আকাশের ভালবাসায়।
সারারাত জেগে প্রিয়তমাকে নিয়ে লেখা চিঠির পূর্ণতা
যেভাবে দূর করে ক্লান্তি, দূর করে শূন্যতা।
সপ্তাহান্তে ক্লান্ত শরীরে স্তব্ধ রেস্তোরায়
চন্দ্রাবতীর সাথে দুঘণ্টার ভালবাসায়
বহুদিন ক্লান্তিহীন হয়েছিলাম, সে রকম ঝরঝরে
ক্লান্তিহীন অনন্তকালের পথ আসি পার করে।
হঠাৎ বামে তাকিয়ে প্রথমে ভেবেছিলাম সাদা ফুল
দোল খাচ্ছে পানিতে, স্পষ্ট তাকাতেই ভাঙ্গল ভুল
দেখি টগবগ করে ফুটছে পানি; আর এতো ফুল নয়
চাঁদ-তারা খচিত রাজাকারদের টুপি দুর্গন্ধময়
তার উপরে এক একটা কালসাপ আছে ফনা তুলে
সত্তর হাত পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে এক একটা ছোবলে
আমি ভাল মতো দেখতে চাই, কারা এতো নির্মমভাবে
শান্তি পাচ্ছে।
আমি ক্লান্তিহীন হয়ে উঠি, দেখে এভাবে
একাত্তরের ঘাতক দালালদের মুখগুলো বিভৎস বিকৃত
কদর্য মুখগুলো ডুবে ভাসে পরিত্রাণহীনভাবে অনবরত।
পৃথিবীতে কতোবার ক্লান্তিহীন হয়েছি- নৈসর্গিক সৌন্দর্যে;
ইতিহাস উপন্যাসে বীর সেনানীদের সৌর্য-বীর্যে
আমি সেরকম ক্লান্তিহীন হয়ে এগিয়ে যাই আবার
হঠাৎই চোখে পরে আগুনের হলকার মধ্যে তীব্র চিৎকার
এটাকি হাবিয়া দোজখ - নরকের শেষধাপ
পঁচাত্তরের খুনিদের মুখ দেখে ভাবি করেছে কি জঘণ্য পাপ
আমি ওদের বিকৃত মুখ দেখে ক্লান্তিহীন হয়ে যাই।
আমি এসব দেখতে চাই না। আমি আমার গন্তব্য পাই-
মহামতি লেনিন, মার্কস, এঙ্গেলসদের দেখি যুগলবন্দি
হাস্য বিনিময় করছেন আইনস্টাইন আর মাহাÍা গান্ধী
সক্রেটিস শিস্য প্লেটোকে করছেন জ্ঞান বিতরণ
নতুন কোন তত্ত্বের কথা ভাবছেন বোধ হয় নিউটন
ভাবতে ভাবতে সামনের সবচেয়ে উঁচু বেদির উপর
আমার দৃষ্টি আটকে যায়। পাইপ হাতে চিন্তাযুক্ত বঙ্গবন্ধুর
দিকে তাকিয়ে অভিভূত হই।
কত উঁচুতে সবাইকে ছাড়িয়ে!
তিনি কেন যেন বিষণœ এই জান্নাতুল ফেরদাউসে দাঁড়িয়ে
আমি বলতে চেয়েছিলাম, দয়া করে থাকবেন না বিষণœ
এই বাংলার মাটি যুদ্ধাপরাধীদের নয়, ওদের বিচার আসন্ন।
কিন্তু আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়, দেখলাম সবই স্বপ্নের ঘোরে
একটি সফল বাংলাদেশ রয়েছে তাঁর বিশাল হৃদয় জোরে।
আগস্টের কলঙ্কমোচন
আগস্টের জন্য আমার দুচোখ ঝাপসা হয় অশ্র“র প্লাবনে
আগস্টতো নীল বিষে নীলাম্বর; বিষাক্ত কণ্টকের আভরণে
আগস্টের আর্তনাদে অপ্রতিভ হই, থেমে যায় বাক
আগস্ট কেঁপে উঠেছিল, যখন বিপথগামীদের নেতা মোশতাক
কার্যকর কারা সিদ্ধান্ত নেয়, ইতিহাসের নিকৃষ্টতম সুযোগ
আগস্ট না-না করে উঠে, যেন এমাসে না-নামে মহা দূর্যোগ
জলপাই রঙের ট্যাাঙ্কের চিৎকারে আগস্ট কাঁপে থরথর করে
ভীত সন্ত্রস্ত আগস্ট মুর্ছা যায়, রক্তের বন্যায় মুখ থুবড়ে পড়ে
আগস্টের আহাজারীর মাঝেই অমানুুষদের পাশবিকতায় সে
কালিমালিপ্ত হয়। তেইশটি বর্ষায় আগস্ট বাংলাদেশে
এসেছে কলঙ্কমোচনের আশায়। সশস্ত্রের হাতে পুত্রের হত্যার
বিচারের আশায় যেভাবে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয় মাতার।
আগস্ট দেখেছে কিভাবে মহামানবের হত্যার বিচার রুখতে
আইন হয়েছে, সুরম্য সংসদকে অপবিত্র করে। ধুকতে ধুকতে
আগস্টের দীর্ঘশ্বাস দীর্ঘায়িত হয়, যাদের থাকার কথা কারাগারে
তাদের ক্ষমতায় দেখে, আগস্টের সময় গেছে হাহাকারে
ইনডেমনিটি বাতিল হলে সে আলো দেখে আশার
দীর্ঘ বাঁধা ও প্রক্রিয়ায় কার্যকরী হলে খুনীদের বিচার
আগস্ট কলঙ্কমুক্ত হয়; তার হাসিতে উদ্ভাসিত হয় দেশ
আগস্ট আশা করে, মহামানবদের হত্যার এই হবে শেষ।
লেখক: মুজিব রহমান
মায়াবী ডানা কাব্যগ্রন্থ হতে
প্রকাশক: বিশাকা প্রকাশনী
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।