আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আওয়ামী লীগের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী: খাদ্যের দাম বাড়াতে কারসাজি করা হচ্ছে

আমার লেখালেখি এবং চিন্তাভাবনা নিয়েই আমার ব্লগ।

প্রথম আলো । বিশেষ প্রতিনিধি | তারিখ: ১৩-০২-২০১১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কুচক্রী মহল সরকারকে পদে পদে বাধা দিচ্ছে। দেশে বিপুল পরিমাণ খাদ্য মজুদ থাকার পরও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়াতে নানা কারসাজি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মতো ব্যবসা করতে ক্ষমতায় আসেনি, জনগণের সেবা করতে এসেছে।

তাই যেকোনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবিলা করার শক্তি ও আত্মবিশ্বাস সরকারের রয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিকেল পাঁচটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয় ছাড়াও সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পৌর ও উপনির্বাচনে ফল বিপর্যয়, দলের সাংগঠনিক সমন্বয়হীনতা, তৃণমূলে কোন্দল এবং প্রান্ত থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নতুনভাবে সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।

কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ নেতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামন্দার পর সারা বিশ্বে দ্রব্যমূল্য এত বেড়েছে, যা অতীতে কখনো হয়নি। এ কারণে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিয়েও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যমূল্য এত বেড়েছে যে ব্যবসায়ীরা আমদানিও করতে চাইছেন না। এতে অন্য কারসাজিও থাকতে পারে।

চাল মজুদ রেখে কৃত্রিম উপায়ে দাম বাড়ানোর চক্রান্ত হচ্ছে। এসব বিষয় তদন্ত হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা ব্যবসা করার জন্য ক্ষমতায় এসেছিল। ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি করে জনগণের অর্থ-সম্পদ লুট করে তারা নিজেরা সম্পদের মালিক হয়েছে। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে নানা মহলের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনমতের ভয়ে বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে প্রকাশ্য দাঁড়াতে পারছে না।

কিন্তু এত সহজে তারা এ বিচার হতে দেবে না। প্রধানমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি স্বাভাবিক রাখতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা যখন ক্ষমতা গ্রহণ করি, তখন মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ শতাংশ। মাত্র দুই বছরে তা ৬ শতাংশে নামিয়ে আনি। এখন কিছুটা বেড়ে ৭ শতাংশ হয়েছে। আমরা মানুষের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেছি।

এতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। আগে যে মানুষ দেড় হাজার টাকা বেতন পেত, সে এখন তিন হাজার টাকা পায়। আগে একজন খেটে খাওয়া মানুষ দৈনিক ৬০-৭০ টাকা আয় করলেও এখন দিনে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আয় করে। ’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষকে আমরা কষ্ট পেতে দেব না। তাই অনেক বেশি দামে খাদ্য আমদানি করে কম দামে বিতরণ করছি।

’ তিনি বলেন, প্রাইস কার্ড, রেশনিং, ভিজিএফ, ভিজিডি, ওএমএসসহ নানা পদ্ধতিতে স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে কম দামে খাদ্যশস্য বিতরণ করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ থেকে মঙ্গা শব্দ দূর করা হয়েছে। সেখানে মানুষের আজ আর হাহাকার নেই। পৌরসভা ও দুটি উপনির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম স্থানীয় নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয়েছে। এটাই গণতন্ত্রের বিজয়।

এ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের আমলেও নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। কে কয়টা আসনে বিজয়ী হলো সেটা না দেখে বর্তমান সরকার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিয়ে নজির সৃষ্টি করেছে। বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে অসংখ্য আসনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ নির্বাচনের পর অনেকে বলতে চেয়েছে, আওয়ামী লীগের সর্বনাশ হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে প্রায় ৩৬টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দু-তিনজন, আবার অনেক স্থানে আটজন প্রার্থী ছিলেন। এসব পৌরসভায় একজন করে প্রার্থী থাকলে সবগুলোতেই জিতত আওয়ামী লীগ।

সার্বিক হিসাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট মোটেই কমেনি। শুধু একাধিক প্রার্থীর কারণে অনেক স্থানে বিজয় হাতছাড়া হয়েছে। উপনির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, মাত্র ১২০০ ভোটে হবিগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হেরেছেন। এ সময় বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে ১২০০ ভোট কীভাবে কারচুপি বা জোর করে কেড়ে নিত, তা কেউ দেখতেও পেত না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.