লেখাটি একজন ব্লগারের এই মুক্ত গণ-মাধ্যম-ভাবনার নতুন প্লাটফর্ম: স্রেফ শুভেচ্ছা পোস্টটি ধরে লেখা
এইসব অনুষ্ঠান-এ হাজির থাকা না থাকার সাথে সামাজিকতার সম্পর্ক নাই। অনুষ্ঠানে যোগ দিলেই যে, সামাজিক হয়ে যাবে তা না। অসামাজিকও হতে পারে। এসব অনুষ্ঠান-এ গেলেও অসামাজিক হতে পারে। মানে, বুঝা যাচ্ছে না।
ব্যক্তিগত ক্যাচাল মনে হচ্ছে।
কিন্তু আপনাকে তো আসলেই সামাজিকই মনে হচ্ছে। আপনি পোস্ট দিলেই তো কমেন্টের অভাব পড়ে না। কততো মানুষের সাথে আপনার সম্পর্ক হয়েছে। আমিও আপনার পোস্টের নিয়মিত পাঠক।
যদিও আমি বলা যায় একদমই পোস্ট টোস্ট দিই না। এমনিতেই নিয়মিত ব্লগে হাজির থাকার চেষ্টা করি। জরুরি পোস্টগুলো পড়ি। ভারচুয়ালি আপনার সামাজিক সম্পর্ক অসাধারণ আর ব্যাপক মনে হচ্ছে। সামাজিক সম্পর্কের ধরন-ধারণা তো এখন পাল্টে গেছে।
ডিজিটাল জামানা। তাহলে আপনি এতো ব্যক্তিগত খিস্তি মেরে নিজেকে ''অসামাজিক'' বলে ভান ভনিতা করার দরকার পড়ল কেন?
ব্লগই আপনার সবচেয়ে পছন্দের জিনিস। লিখেন ভাল। কিন্তু বলছেন ''জঞ্জাল' লিখি। এতোটা ভনিতা আর ন্যাকামি করার মধ্যে ঠিক আপনার নোংরা কপটতাই তো পরিষ্কার হয়ে পড়ে।
আর যদি জঞ্জালই মনে করেন- তবে আর ন্যাকামি করেন কেন?
বন্ধু আবার কিছু জিগরি বন্ধু বান্ধব
ভারি অদ্ভূত জিনিস।
''নাহ। নেট একটা লেখার জায়গা হলো? ওইটা কজন পড়ে? তার চেয়ে তোমার এই লেখা যদি প্রথম আলো-সমকাল-যুগান্তর- এমনকি নয়া-দিগন্তের মতো কোন পত্রিকায়ও ছাপা হতো তাহলে বুঝা যেত গুরুত্বপূর্ণ কিছু হচ্ছে। ''
আপনার এই জিগরি বন্ধু'র কথায় খুব অস্বাভাবিকতা দেখছি না। তার কথায় বেশ যুক্তি আছে।
যুক্তির শক্তি আছে। বাংলাদেশের মত এত বিশাল জনগোষ্ঠীর দেশে কজন মানুষ নেট ব্যবহার করে? এখনো সে তুলনায় ছাপা মাধ্যমেরই বেশি ব্যবহার। এবং বেশি কদর আর বেশি প্রভাবশালী। উনাকে তো বন্ধু হিসাবে ভালই দেখছি। আপনার এই পরিচিত শ্রদ্ধেয় বন্ধু তো আপনার জানি দোস্তও মনে হচ্ছে।
আপনার লেখাটা যেন আরও বহু মানুষ জন পড়েন সেই কথাই তো উনি বলছেন। আপনারই মঙ্গল চাইলেন। কল্যাণী পরামর্শ দিয়ে বললেন- পত্রপত্রিকায় ছাপা হলে সেটা গুরুত্বপূর্ণ হত। আপনি মনে হয় শুধু শুধু উনার প্রতি খেপে গেছেন। আপনারই মনে হয় কোথাও একটা গন্ডগোল হচ্ছে।
''মানুষের পৌত্তলিকতার শেষ নেই। প্রিণ্ট মিডিয়ার প্রতি এই অ-পৌত্তলিক মানুষের যে পৌত্তলিক আগ্রহ এবং আনুগত্য তাকে টলানো আপাতত আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। ''
এতটাই খেপে গেলেন!!!
আপনার ''পৌত্তলিক'' ধারণা নিয়ে আমার বড় মায়া হয়। আপনি দেখি এখনো পৌত্তলিক জিনিসটাই বুঝেন না। আপনি এ জিনিস দিয়ে উনাকে গালি দিলেন, তো সে গালি তো আপনার গালেই পড়ছে।
কারণ, উনার পৌত্তলিকতা খুবই সরল। উনারটা ধরা যায়। মূর্ত দৃশ্যমান জিনিসের প্রতি উনার পৌত্তলিকতা। আর আপনারটা অদৃশ্য। জটিল।
ভারচুয়াল- মানে, আছে বটে, তবে দেখা যায় না। এটা কিন্তু ভাই খুবই ভয়ঙ্কর। তাতে আপনার ওই বন্ধুকে এখন খুবই সহজ একটা মানুষ মনে হইল। যেখানে উল্টা আপনিই দেখি বড় জটিল। অসহজ।
কপটচারী।
আর এ যে যুক্তি দেখালেন-
''মুক্ত গণ-মাধ্যম-এর যে স্বাধীনতা তা আর কোথাও সম্ভব নয়। ব্লগ হলো মুক্ত গণ-মাধ্যম। এর মূল স্পিরিট হলো কোনরকম সম্পাদকীয় নীতির খড়গ ছাড়াই লেখালেখি করতে পারা। ''
আপনার এ যুক্তির কোন ভিত্তি নাই।
কারণ, পত্রিকার মতই এসব ভারচুয়াল ব্লগে যথেষ্ট হস্তক্ষেপের ব্যাপার আছে। কোথায় স্বাধীনতা। কিসের স্বাধীনতা টাধিনতার কথা বলছেন। সম্পাদকীয় যে স্পনসরশীপ আরোপ করা হয় এখানে এটাকে কোনভাবেই ''মূল স্পিরিট হলো কোনরকম সম্পাদকীয় নীতির খড়গ ছাড়া'' বলা যায় না। এখানে এত কথা বলার অবকাশ নিচ্ছি না।
না হয় বহু প্রমাণ হাজির করা যাবে- যাতে এটা স্পষ্ট হয়ে যাবে, কিরকম সম্পাদকীয় নীতির খড়গ এখানে চলে।
আর সম্পাদকীয় নীতিকে আপনি এত ভয় পাচ্ছেন কেন। এত বিমূর্ত প্রশ্ন কেন? এসব মাধ্যম থাকলে তার অথরিটি থাকবে। তার সম্পাদক থাকবে। তার সম্পাদকীয়ও থাকবে।
এবং সম্পাদকীয় খড়গও থাকবে। আপনি তাদের জায়গা ব্যবহার করবেন, তাদের খড়গও নেবেন। এটাই চলবে। কি করবেন। আপনার বেলাইও তাই হবে।
তাহলে এতসব তালিবালি বকার তো কোন মানে নাই।
আপনার এরকম ভারচুয়াল পৌত্তলিকতা থেকে সবার সাবধানতা কামনা করি।
আপনার বেহুদা ন্যাকামি আর অযৌক্তিক ভান-ভনিত-কপটতা থেকে সবার সতর্কতা প্রত্যাশা করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।