তবে তাই হোক, ক্লান্তিহীন তিল তিল আরোহনে সত্য হোক বিক্খুব্ধ এই জীবন _____
লিভার সিরোসিস একটি ঘাতক ব্যাধি। এ ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে রোগী ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। লিভার মানবদেহের সবচেয়ে বড় অঙ্গ এবং এর প্রধান কাজই হল বিপাকক্রিয়া সম্পন্ন করা। সুতরাং সিরোসিস রোগে লিভারের বিপাকক্রিয়ার ক্ষতি হয়। তাই এ রোগীদের উপযুক্ত খাদ্যের প্রয়োজন হয়।
লিভার সিরোসিসে রোগটি যদি বেশি অগ্রসরমান না হয় তাহলে উপযুক্ত খাদ্যের মাধ্যমে একে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। প্রোটিন এবং শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য প্রদাহজনিত লিভার রোগে অত্যন্ত উপকারী। এ অবস্থায় রোগটি যদি এগিয়ে যায় তবে আবার খাদ্য তালিকায় পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়।
প্রোটিন
প্রোটিনের মাত্রা অবশ্যই রোগীর রোগের খারাপ বা ভালো অবস্থান দেখে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। অনেক চিকিৎসক মনে করেন নাইট্রোজেনের সমতা রক্ষার জন্য প্রথমে প্রয়োজন অনুযায়ী ভালো মানের প্রোটিন দিতে হবে।
ক্ষেত্রবিশেষে এর মাত্রা কমাতে হবে যাতে হেপাটিক কমা না হয়। হেপাটিক কমার লক্ষণ দেখা দিলে প্রোটিন প্রতিদিন ৩৫ গ্রামের নিচে দিতে হবে।
তেল
লিভার সিরোসিসে তেলের শোষণ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে এজন্য কোন কোন রোগীকে খাদ্যের পরিবর্তন করে মধ্যম মানের চেইন সম্বলিত ট্রাইগি¬সারইড দেয়া হয়।
শ্বেতসার
রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরি দিতে হবে শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য থেকে। অর্থাৎ প্রোটিন খাদ্যশক্তির জন্য ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না।
প্রতি কেজি ওজনের জন্য ৩৫ থেকে ৫০ কিলোক্যালরি শ্বেতসার প্রয়োজন হয়। অনেক রোগীর ক্ষুধামান্দ্য ও বমি বমি ভাবের জন্য পর্যাপ্ত ক্যালরি গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে রোগীর পছন্দ ও ইচ্ছা অনুযায়ী যে খাবারটি খেতে চায় সেটি বিবেচনায় আনতে হবে। কোন কোন রোগীকে তিনবারে বড় মিল দেয়ার পরিবর্তে অল্প অল্প করে বারে বারে খাওয়াতে হয়।
ভিটামিন এবং খনিজ
অন্ত্রে খাদ্য শোষণে ব্যাঘাতের জন্য চর্বি থেকে প্রাপ্ত ভিটামিনস এবং বি-কমপে¬ক্স ভিটামিনস বিলিয়ারি এবং অ্যালকোহলিক সিরোসিসে শোষণে ব্যাঘাত ঘটে।
এছাড়াও রক্তে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংকের মাত্রা কমে যায়। কম প্রোটিন, জীবাণুনাশক থেরাপি, বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়া হওয়ার কারণে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রাও কমে যায়। সেক্ষেত্রে পটাশিয়াম সাপি¬মেন্ট গ্রহণ করতে হয়। লিভারে যেসব ভিটামিন জমা থাকে তার রিজার্ভ ঠিক রাখা এবং টিস্যুর ক্ষয়পূরণের জন্য ভিটামিন সাপি¬মেন্ট করতে হয় বিশেষ করে যদি রোগীর ক্ষুধামান্দ্য থাকে।
সোডিয়াম
শরীরে রস ও পেটে পানি থাকলে সোডিয়াম দেয়া সীমিত করতে হয়।
অতিরিক্ত জমা হওয়া পানি কার্যকরভাবে বের করার জন্য অনেক মাস ধরে বেশিমাত্রায় সোডিয়াম খাওয়া সীমিত করতে হয়। এই অবস্থায় মাত্র ৫০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম প্রতিদিন দিতে হয়। এজন্য দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধ খাওয়ার মধ্যে সীমিত থাকতে হয়। পরিমাণমতো প্রোটিন দেয়ার ক্ষেত্রেও সোডিয়ামের ব্যাপারটি লক্ষ্য রাখতে হয়।
পানি
অনেক চিকিৎসক এ রোগীদের আগেরদিন হওয়া প্রস্রাবের সমপরিমাণ পানি খেতে দেন।
তবে সোডিয়াম সীমিত করার ফলে যদি শরীরে রস এবং পেটে পানি না থাকে তবে পানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন নেই।
কনসিসটেন্সি
লিভার সিরোসিস যদি অনেকটা অগ্রসরমান হয় এবং খাদ্যনালীর ভেরিসেস থেকে রক্তক্ষরণের ভয় থাকে তবে আঁশযুক্ত খাবার কমাতে হবে। সেক্ষেত্রে তরল ও নরম খাবার বারবার দিতে হবে
সুত্র
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।