সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা অমনোযোগী হয়ে পড়ছি প্রাণিজগতের প্রতি। আস্তে আস্তে প্রাণীদের প্রতি নিষ্ঠুর হয়ে পড়ছি আমরা। পৃৃথিবীতে এই প্রাণিজগতই মানুষের পরম বন্ধু। অথচ এই বন্ধুদেরই আমরা ভুলতে বসেছি। হারিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী।
এমনি হারিয়ে যেতে বসা কয়েকটি প্রাণী-- সলেনডন, কাকাপো, কিউই, বাম্বলি বাঁদুড়, কাঠবিড়ালি আর হলদে চোখো পেঙ্গুইন।
সলেনডন
এই সলেনডন আসলে এক ধরনের ইঁদুর। এদের আবাসভূমি কিউবা। ইুঁদর হলেও, ওরা আবার দেখতে পাখির মতো। দাঁত খুবই ধারালো।
সেই দাঁত দিয়ে কলাগাছ কাটতে ওরা খুবই দক্ষ। ওদের স্বভাবই সবসময় খোশ মেজাজে থাকা। মাথা উচুঁ করে হাঁটতে বা দৌড়াতে খুব ভালোবাসে। আর সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল, ওরা কিন্তু মানুষের মতোই স্তন্যপায়ী!
ইঁদুরের এই প্রজাতিটি পৃথিবী থেকে এক রকম হারিয়ে গেছে বলেই ধারণা করা হয়। বিজ্ঞানীরা সর্বশেষ ওদের দেখা পেয়েছেন ২০০৩ সালে।
কাকাপো
টিয়াপাখি আবার দেখতে খরগোশের মতো হতে পারে? তার আবার বিড়ালের মতো গোঁফ থাকতে পারে? এমনি এক জাতের টিয়াপাখিও কিন্তু আছে। ওদের স্থানীয় নাম কাকাপো। দেখতে যেমন অন্যরকম, স্বভাবেও অন্য টিয়াপাখিদের চেয়ে আলাদা।
এই প্রজাতির টিয়ারা আবার নিশাচর, উড়তেও খুব একটা পছন্দ করে না। শুধু রাতের আঁধারে পাহাড়ের এক ঝোঁপ থেকে অন্য ঝোঁপে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে।
খাবার সংগ্রহও করে এভাবেই। ওদের ওজন জেনেও অবাক হবে। পৃথিবীর সবচেয়ে ভারি এ পাখিটির ওজন ৮ পাউন্ড। বাস মূলত নিউজিল্যান্ডে।
কিউই
কিউই নিউজিল্যান্ডের জাতীয় পাখি।
একটি দেশের জাতীয় পাখি হলে কী হবে, পাখিটি কিন্তু সত্যিই হুমকির মুখে। মজার ব্যাপার হল, ডানা থাকা সত্ত্বেও এ পাখিটি উড়তে পারে না। ওদের ডানাগুলো অত্যন্ত ছোট আর দুর্বল। তবে স্বভাবে ওরা খুবই মেজাজি। রীতিমতো ভয় করার মতো।
পাখিটির গায়ের লোমগুলো কুকুরের মতো। ঘ্রাণশক্তিও বেশ প্রখর। বাতাসে প্রশ্বাস নিয়েই ওরা অনুভব করতে পারে, আশেপাশে বিপদ আছে কি না? আর ওদের ডিমগুলোও বেশ ভারি, ওদের দেহের ওজনের প্রায় এক পঞ্চমাংশ!
কিউই যুগল সারা জীবনের জন্যই একসঙ্গে বসবাস করে। বাঁচে সাধারণত ত্রিশ বছর। আর গায়ে-গতরে মেয়েরাই সুঠাম-সবল হয়ে থাকে।
বাম্বলিবি বাঁদুড়
বাঁদড়রাও কিন্তু দেখতে সুন্দর হয়। সবচেয়ে সুন্দর বাঁদুড়টার নাম বাম্বলিবি বাঁদুড়। ওদের বসবাস থাইল্যান্ড।
দেখতে অনেকটা হামিংবার্ডের মতো বাঁদুড়টি দৈর্ঘ্যে হয় বড়জোর ৫ ইঞ্চি। চাইলে ওরা তোমার আঙুলেও ঝুলে থাকতে পারে।
ওদের প্রিয় খাবার পোকামাকড়খেকো ছোট ছোট মাকড়সা।
এচিডনা
বিশেষ প্রজাতির এই কাঠবিড়ালির বিশেষত্ব হল, ওরাই পৃথিবীর একমাত্র জোড়া ডিম পাড়া স্তন্যপায়ী। সারা শরীরজুড়ে কাঁটা থাকাতে, দেখতে সজারুর মতো মনে হয়।
এচিডনা নামের কাঠবিড়ালিদের নাক কিন্তু বেশ লম্বা। জিহ্বাও বেশ বড়।
আর এই জিহ্বা দিয়ে ওরা ব্যাঙের মতো পোকা ধরে ধরে খায়। স্বভাবে একটু লাজুকও বটে। সাধারণত কারও সঙ্গেই ঝগড়া করে না। তবে একটা আফশোষও কিন্তু আছে ওর। ওর কোনো দাঁতই নেই।
আর তাই চিবিয়ে কিছু খেতেও পারে না ওরা।
হলদে চোখো পেঙ্গুইন
পেঙ্গুইনরা তো এমনিতেই বেশ বিরল প্রজাতির প্রাণী। পেঙ্গুইনদের একটি প্রজাতি তাদের মধ্যে আরও বিপন্ন। ওরা হল হলদেচোখো পেঙ্গুইন।
এই পেঙ্গুইনরা কিন্তু কাজেকর্মে বেশ পটু।
পানির চারশ ফুট নিচেও ওরা স্বচ্ছন্দে সাঁতার কাটতে পারে। খাবার সংগ্রহ করতে পারে তীর থেকে বিশ কিলোমিটার দূর থেকেও। থাকেও দলবদ্ধ হয়ে। কিন্তু উপকূলবর্তী বন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলে ওদের আবাসভূমিও কমে যাচ্ছে।
লেখক: শিশুসাহিত্যিক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।