আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেয়ারবাজার ধ্বংসের নেপথ্য নায়করা



সিন্ডিকেটের পকেটে যাওয়া প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা পুঁজিবাজারে ফিরে না আসায় সরকারের নীতিনির্ধারকদের সদিচ্ছা সত্ত্বেও কোনো উদ্যোগ কাজে আসছে না। উল্টো দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি ততোই বাজার ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। লাইফ সাপোর্ট দিয়েও বাজারকে ধরে রাখা যাচ্ছে না। ঠিক কবে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে, তা কেউ জানে না। একটি শক্তিশালী চক্রের কবলে বন্দী পুঁজিবাজার।

বাজারবিশ্লেষক, বিনিয়োগকারী ও বাজার-সংশ্লিষ্টরা পুঁজিবাজার ধ্বংসের এই নেপথ্য নায়কদের বিচার দাবি করেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের একশ্রেণীর শীর্ষস্থানীয় নেতা পেছনে থেকে ক্রীড়নকের ভূসিকা পালন করছেন। তাদের অতি মুনাফার লোভে বাজার একসময় অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়ে। এরপর সময়মতো বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে সুযোগ বুঝে কেটে পড়ে ওই চক্র। ফলে বাজার তার স্বাভাবিক গতি হারায়।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বাজার স্বাভাবিকে সরকারের উদ্যোগ যখন কাজে আসার পথে, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যখন আস্থা ফিরে পাচ্ছিলেন ঠিক ওই সময় চক্রটি তাদের বেনামে থাকা শেয়ারের বড় অংশ ছেড়ে দিয়ে বাজারকে পতনের মুখে ঠেলে দেয়। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, তদন্ত হলে ওই সদস্যদের নাম বেরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু বাজার দীর্ঘ মন্দার দিকে গেলে তারা নানা ছলছুতোয় রেহাই পেয়ে যাবেন। ফলে চক্রটির হাত থেকে পুঁজিবাজারের জিম্মিদশা কাটেনি। ব্যর্থ হতে চলেছে বাজার স্বাভাবিক করতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ।

একই চক্র ১৯৯৬ সালে শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনাও ঘটায়। তবে তাদের এবারকার কৌশল ছিয়ানব্বইকেও হার মানায়। সরকারের একটি বিশেষ সংস্থার প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুজন শীর্ষ ব্যক্তিত্ব এবং বিএনপি ঘরানার একজন ব্যবসায়ী একচেটিয়াভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন। কৃত্রিম উপায়ে দর বাড়িয়ে নামে-বেনামে থাকা শেয়ার তারা বিক্রি করেছেন। তাদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে একজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্যের।

ওই চক্রের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমানভাবে তাল মিলিয়েছেন ডিএসইর সাবেক এক সভাপতি এবং বর্তমান কিছু কর্মকর্তা, যার বাড়ি ফেনী জেলায়। এ ছাড়া রয়েছেন ডিএসইর বর্তমান কিছু কর্মকর্তা, যারা রক্ষকের জায়গায় থেকে ভক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন সুচারুভাবে। আছেন চাঁদপুরের এক ব্যবসায়ীও, যিনি চক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য। চক্র বিভিন্ন গ্রুপে, সাব-গ্রুপে ভাগ হয়ে বাজারকে জুয়ার বাজারে পরিণত করে বিনিয়োগকারীদের পথে বসিয়ে দিয়েছেন। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বাজার পতনে সরকারি দলের এক প্রভাবশালী এমপিরও দায় কম নেই।

সমভাবে সুযোগ কাজে লাগিয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপ। গ্রুপটি কোনো নিয়ম না মেনে কেপিসিএল এবং ওসিএল নামের দুটি কোম্পানির মাধ্যমে প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা তুলে নেয়। বাজার থেকে লুটে নেওয়া টাকা চক্রের সদস্যরা দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয় বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, এবারের কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় না আনা গেলে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। উৎস:বাংলাদেশ প্রতিদিন


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.