আমি বিধাতার রঙ্গে আঁকা এক অস্পষ্ট ছবি।
আপনার যে কোনো সম্পর্কের সমাপ্তিটা হতে পারে একটি খুব খারাপ আচরণের মাধ্যমে। যদিও তা খুব কাজের কাজ নয়। এটাও মনে রাখা দরকার সব সম্পর্ক জীবনের শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে না। সবচেয়ে ভালো হয় সম্পর্ক খুব জঘন্য অবস্থানে যাওয়ার আগেই তার সুরাহা করা।
ধরুন আপনি আপনার প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু ভাববেন না কাজটা খুব সহজ। সম্পর্ক শেষ হলেও আপনার প্রিয়জনের ভালোবাসা আপনার প্রতি আগের মতোই থাকতে পারে। তাই চেষ্টা করতে হবে এবং নিশ্চিত হতে হবে যেন আপনাদের সুন্দর সম্পর্কটি একটি বিশ্রী সংঘাতের মধ্য দিয়ে শেষ না হয়। আমরা এখানে বলব কীভাবে আপনি বিচ্ছেদের সময় খারাপ দৃশ্য তৈরি হওয়া এড়িয়ে চলতে পারেন।
ভাঙনটি হতে পারে চিঠি, এসএমএস বা ই-মেইলের মাধ্যমে
এটি করো জন্য ভালো কাজ হতে পারে, আবার কারো জন্য কালবৈশাখি ঝড়ের মতো হতে পারে। তবে সম্পর্ক ভাঙার অবস্থায় যিনি নিজের মনের কথা বলতে পারেন না বা ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারেন না তার জন্য চিঠি লেখা, এসএমএস বা ই-মেইল করার চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। কারণ এর মাধ্যমে তিনি তার অনুভূতির বিশদ বর্ণনা দিতে পারবেন। আবার যিনি বাগ-বিতণ্ডা বা সংঘাত এড়িয়ে চলতে চান, তার জন্যও এটি সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। কিছু লিখিত শব্দ যদিও সম্পর্ক ভেঙে ফেলার জন্য যথেষ্ঠ নয়, তবু অনেকের জন্য এটি খুব ভালো কাজ করেছে।
সামাজিক যোগাযোগের সাইটে সম্পর্কচ্ছেদ এড়িয়ে চলতে হবে
ফেইসবুক, টুইটার বা এমন সামাজিক যোগাযোগর বিভিন্ন সাইটে আপনি যখন আপনার স্টেটাস, ছবি বা কোনো ধরনের কমেন্ট পোস্ট করেন; তখন ভাববেন না এসব শুধু আপনারা দুজনে দেখছেন। আগে যেমন সবাই দেখত, এখনো সবাই দেখছে। আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনাদের সম্পর্কচ্ছেদ নিয়ে পরিচিত, কম-পরিচিত, ছোট-বড় সবাই হাসাহাসি করুক। সেজন্য এসব বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে এসব সাইট এড়িয়ে চলুন।
ধীরে কিন্তু দৃঢ়ভাবে এগোতে হবে
সম্পর্ক ভাঙার সবচেয়ে ভালো পথ হলো ধীরে এবং দৃঢ়ভাবে এগোনো।
এর অর্থ হলো সঙ্গীকে বোঝানো যে, আমাদের সম্পর্কটি আর আগের মতো কাজ করছে না। তবে এ ধারণার প্রতি অভ্যস্ত হওয়ার জন্য আপনার সঙ্গীকেও কিছু সময় দিতে হবে। তাহলে সম্পর্কচ্ছেদটি কারো জন্যই বড় ধরনের বেদনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে না।
সব অপরাধের দায় সঙ্গীর কাঁধে চাপাবেন না
যখন আপনি পুরোপুরিভাবে সম্পর্কচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তখন একতরফাভাবে সঙ্গীর ওপর দোষ চাপাবেন না। কথা বলা এবং চিন্তায় বাস্তববাদী হোন।
তাকে বলুন এ সম্পর্কচ্ছেদটি আমাদের দুজনের জন্যই ভালো হবে। এবং এর জন্য আপনারা দুজনই কমবেশি দায়ী।
বিচ্ছেদের কাজটি জনসম্মুখে করবেন না
আপনি যখন ধারণা করেছেন সম্পর্ক ভাঙবেন, তাহলে এ চিন্তাও করেছেন কীভাবে তা করবেন! তবে যাই ভাবুন না কেনো এটা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন যে, কাজটি যেন আপনাদের ব্যাক্তিগত গোপনীয়তা নষ্ট না করে বা তা যেন জনসম্মুখে না হয়। কারণ আপনি নিশ্চই চাইবেন না আপনাদের বাগ-বিত-া, বিশ্রী ঝগড়া অন্যরা উপভোগ করুক বা তারা এতে যুক্ত হোক। যে জায়গাটিতে আপনি নিয়মিত যাতায়াত করেন সেরকম জায়গায় এ কাজটি করা যাবে না।
কারণ এ ঘটনাটি পড়ে আপনার জন্য লজ্জার কারণ হবে।
আকস্মিক বা খামখেয়ালিভাবে কাজটি করবেন না
সম্পর্ক ভাঙ্গার কাজটি অফিসে যাওয়া বা বাজার করার মতো গতানুগতিক কাজের মতো করবেন না। আপনার সঙ্গী এবং আপনাদের সম্পর্ককে সম্মান করুন। পরিকল্পনা করুন কীভাবে আরো সামনে আগানো যায়।
মিথ্যা প্রতিজ্ঞা করবেন না
যদি আপনার সঙ্গী খুব আবেগপ্রবণও হয়ে থাকেন, তবু আপনি তার সঙ্গে কোনো মিথ্যা প্রতিজ্ঞা করবেন না।
‘আমি এ বিষয়ে আবার চিন্তা করব’; ‘আমরা হয়তো আবার কোনো একদিন আগের সম্পর্কে ফিরে যাব’- এ ধরনের কথা আপনি নিজে বিশ্বাস না করলে তাকে বলবেন না। বুঝতে চেষ্টা করুন বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসার সম্পর্কের মধ্যে পার্থক্য কী।
অধিকাংশ সম্পর্কই মানুষ কিছু গড়ার জন্য করেন, ভাঙার জন্য নয়। তারপরও কখনো কখনো আমাদের জীবনে ভাঙন আসে। এটি অনেক সময়ই অনাকাক্সিক্ষত।
কিন্তু অনেক সময়ই বিচ্ছেদ মানেই সব শেষ হয়ে যাওয়া নয়। তাই এটি যত ভালোভাবে করা যায়, ততই কল্যাণকর।
*পত্রিকা অবলম্বনে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।