sorry vai
একুশ শতকের পৃথিবীতে সব ধর্ম আমার চোখে এসে
এক বিন্দুতে মিলে যায়,
সব সেৌন্দর্য ঐকতানে কোরাস গায় আমার বোধে
আর মেৌলিক বলগুলো কোন বিশেষ গবেষণা ছাড়াই
আমার স্পর্শে হয়ে উঠে অভিন্ন।
মন্দিরে বেদের পৃষ্ঠা উল্টাতেই চোখে পড়ে
চকচকে টাকার সরকারী ছাপ,
শত পৃষ্ঠার গ্রণ্থখানি মূহুর্তেই হয়ে উঠে
নগদ রুপির বান্ডিল,
আর দেখি সমস্ত ধর্মপ্রাণ জনতা পাঠ করে চলে
মণ্ত্রের বদলে অযুত, লক্ষ, নিযুত কোটির রামনাম।
এ যেন একুশ শতকের নতুন লগ্নে
কৃষ্ণের পূণর্জন্মের আর্থিক রুপ।
মসজিদে কোরআনের অক্ষরগুলোতে০ চকচক করে পয়সা,
মুসোল্লিদের গায়ে জ্বালা ধরায় টাকার অপার্থিব গন্ধ,
ভাবি, মোহম্মদের ঘোষণা উল্টে দিয়ে অর্থই বুঝি হয়ে উঠলো
শেষ পয়গম্বর।
গির্জার ক্রুসেডে যিশুর বদলে আমি দীর্ঘকায় ডলারকে দেখি
বিদ্ধ অবস্থায়,
এ এক ধা ধা লাগানো রুপান্তরিত, বিবর্তিত যিশু।
গৌতমের প্রতিকৃতির সামনে দাড়াতেই
সেটা হয়ে উঠে পতপতে ইয়েনদেহ।
অস্থির আমি ঘরে ফিরে
স্ত্রীর ঠোটে তৃষ্ণা মেটাতে উদ্যত হলেই
সে ঠোটে টের পাই কচকচে কাগুজে নোটের গণ্ধ।
আমার সন্তানের ভুবনভুলানো হাসির দিকে
একপলক তাকাতেই দেখি
দিরহামে অংকিত সৌদি বাদশার স্মিত হাস্যমুখ।
জসিম উদদিনের নক্সীকাথার মাঠ পড়তে গেলেই
অনুভব করি বাংলার সব কাথা আজ
দামি নোটের সলতের ফোড়নে আকা।
আইনস্টাইনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলি এই ভেবে যে
সবকিছু আর আপেক্ষিক নেই
অর্থ ধ্রুব, অর্থ পরম।
হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা তত্ত্ব নিশ্চিত হয়ে পড়ে
কেবল অর্থের বেলাতেই।
আর ডারউইনের তত্ত্বের শেষ পরিণতি হিসেবে
মানব প্রজাতিকে দেখি
একেকটা ডলার, ইয়েন কিংবা দিরহামে পরিণত হতে,
যোগ্যেরাই টিকে থাকবে
তবে এ যোগ্যতার মাপকাঠি আর পরিবেশ নয়,
রসায়ন নয়, নয় জটিল জীনতত্ত্ব,
এ যোগ্যতা কেবল অর্থ।
দু:খজনক হলে০ সত্য
এ শতকেই মার্ক্স আর লেনিন হাত মিলিয়ে ঘোষণা দেবে
সমাজতণ্ত্র আর ধনতন্ত্রের সুদীর্ঘ বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে
আমরা অচিরেই অর্থমানবের সমাজরুপে আবির্ভূত হব।
পিথাগোরাস কফিন ভেঙে বেরিয়ে এসে
ভুল সংশোধনী বাণীতে বলবেন,
সংখ্যা নয়, আজ থেকে বিশ্বকে ব্যাখ্যার
এক ০ অদ্বিতীয় অবলম্বন অর্থ।
সিগমুন্ড ফ্রয়েড০ তত্ত্ব পাল্টিয়ে অবদমিত বাসনাকে
প্রতিস্থাপন করবেন অর্থের দ্বারা।
অচিরেই নবজাতক প্যাকেটভর্তি মায়ের দুধ
নগদ অর্থে কিনতে পাবে শপিংমলে,
দু’টো টাকা হাতে ধরিয়ে সজল চোখে
কোন বোন ভাইকে বলবে,
আমায় একবার আপা ডাকবি?
এই শতকের কোন একদিন ভোর হবেনা,
রাত শিশিরসিক্ত ভোরকে জিম্মি করে বসবে
নগদ অর্থের দাবিতে,
ঐদিন থেকে ব্যাংক হবে একমাত্র ভোরদাতা।
মানুষ সকালের নাস্তায় ইউরো,
দুপুরের প্লেটে ইয়েন আর রাত্রীভোজনে ডলার খেয়ে
ঘুম যাবে টাকার স্বপ্নে।
এরপর কালিনিশি শেষরাতে ব্যাংকের দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে
সামনের জনকে বলবে,
দাদা একটু আগে যেতে দিন না,
আমাকে যে জলদি একটা ভোর কিনতে হবে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।