আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতি জাতির জন্য চরম লজ্জারঃ সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদের সম্পদের পরিমান ৩৫০কোটি টাকা

সামুতে অর্থহীন অশুদ্ধ বাংলা ও বাংলিশ শব্দ পরিহার করি
এদেশের রাজনীতি ও প্রশাসনে দুর্নীতি চলছে এ কথা আমাদের সকলেরই জানা। আমাদের দেশে প্রায় সব ক্ষেত্রেই দূর্ণীতি চলছে এমনকি ধর্মভিত্তিক কর্মকান্ডেও তবে সবচেয়ে বেশী দুর্নীতি হয় পুলিশ বিভাগে। দুর্নীতির নজরদারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী দেশে পুলিশ বিভাগকে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত মনে করে মানুষ। জরিপে অংশ নেয়া শতকরা ৭৯ জনই এ মত দেয়ায় বোঝা যায়, পুলিশের নেতিবাচক ভাবমূর্তি অপরিবর্তিত রয়েছে অথবা আরও খারাপ হয়েছে যেহেতু শতকরা ৪৬ জন মনে করে দেশে দুর্নীতি বেড়েছে এবং ১৮ জন মনে করে দুর্নীতি রয়েছে একই মাত্রায়। তবে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতি জাতির জন্য চরম লজ্জার।

পুলিশের সাবেক আইজি নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে ৩৫০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে নেমেছে দুদক। পুলিশের মহাপরিদর্শকের দায়িত্বে থাকার সময় নিজ গ্রামে প্রাসাদোপম বাড়ি নির্মাণ, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ৫টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, প্রায় ৫০০ বিঘা জমি ক্রয়, ৪০০ বিঘার ওপর মাছের খামার তৈরি ও ব্যবসাসহ নানাভাবে তিনি এ বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। নূর মোহাম্মদের নিজবাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি থানা এলাকার একজন চিকিৎসক নূর মোহাম্মদের অবৈধ অর্থসম্পদের বিষয়ে প্রায় ১০ পৃষ্ঠার একটি অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর দফতর, দুদক ও পুলিশের আইজিসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরের কাছে পাঠায়। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার বিষয়ে ঐ চিকিৎসকের দেয়া লিখিত অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুতর বিবেচনা করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। দুদক এ অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান করার জন্য নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় এবং বৃহস্পতিবার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করে।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার যেসব সম্পদ পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থানার চান্দপুর গ্রামের মীরেরপাড়ায় ২০ বিঘা জমির ওপর একটি রাজকীয় বাড়ি। এর মধ্যে রয়েছে রেলওয়ের ৪ বিঘা জমি, যার মূল্য ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। বাড়ির নির্মাণ ব্যয় ৩ কোটি টাকা। বাড়ি থেকে ১ মাইল পূর্বে ৪০০ বিঘা জমির ওপর ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি মাছের প্রকল্প। বাড়ি থেকে প্রকল্প পর্যন্ত যাওয়ার জন্য ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ২৫ ফুট প্রস্থের পাকা রাস্তা।

আইজিপি থাকা অবস্থায় সর্বশেষ এক বছরে কটিয়াদিতে ১৩ কোটি টাকায় জমি কিনেছেন ৪০০ বিঘা। বেইলী রোড ও মোহাম্মদপুরের পিসিকালচার হাউজিংয়ে ৯ কোটি টাকায় কিনেছেন ৫টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। অভিযোগে বলা হয়েছে, আইজিপি থাকাকালে ৬ মিন্টো রোডে সরকারি অনুমোদন ব্যতীত ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করেছেন। খুলনায় ৩৫০ বিঘা জমির ওপর ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছেন চিংড়ি প্রকল্প। ২০০৮ সালে পূর্বাচলের র্যানরিকা নামক প্রকল্পের মাধ্যমে প¬ট বরাদ্দ দেয়ার কথা বলে পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে নিয়েছেন ১০ কোটি টাকা।

পরে প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। পল¬বীতে ৯ কোটি টাকায় বানিয়েছেন জমির প্রকল্প। তার স্ত্রী পনম সমিতির চেয়ারম্যান থাকাকালে ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গাজীপুরের মাওয়ায় ২০ কোটি টাকায় কিনেছেন ৩০ বিঘা জমি। স্কাইওয়েজ কোম্পানির মালিক মানিক মিয়ার (বাড়ি ৩৯৬, রোড ৬, বারিধারা, ডিওএইচএস) সঙ্গে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প তৈরি করেছেন।

এছাড়া দুদকের কাছে নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে এতে তার বসতবাড়িতে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার আসবাবপত্রের কথা বলা হয়েছে। এসআই পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে ৪০-৫০ জনের কাছ থেকে মুর্শেদের মাধ্যমে নিয়েছেন অগ্রিম ৩ থেকে ৪ লাখ করে টাকা। এ টাকা এখন মুর্শেদের মাধ্যমেই ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে বলেও উলে¬খ করা হয়েছে। দুদকে দাখিলকৃত এক পুলিশ কর্মকর্তার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সরকারি অনুমোদন ছাড়া এবং রেলওয়ের আপত্তি সত্ত্বেও নিজ পকেট থেকে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে মানিকখালী বাজার থেকে নিজবাড়ি পর্যন্ত ১০৮০ মিটার রাস্তা তৈরি করেছেন তিনি। মীরেরপাড়ার বুলবুল মিয়াকে ৮ লাখ টাকা দিয়ে সহায়তা করেছেন।

বাড়ি তৈরির সময় ৪৩ বার তিনি পরিদর্শনে গিয়েছেন। এ সময় ভৈরব, কুলিয়ারচর, বাজিতপুর এবং কটিয়াদী থানা পুলিশ সড়ক ডিউটি করে। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়। এছাড়াও তিনি দায়িত্বে থাকাকালে বিমানবন্দরে এক বিদেশী মহিলার মোবাইল সেট চুরির অপরাধে এক সহকারী কমিশনারকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিতও হয়।

তার স্ত্রী ৭ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে মামলা করতে দেয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। নূর মোহাম্মদ তার মেয়ের বিয়েতে ১০০ ভরি স্বর্ণসহ ৪ কোটি টাকা খরচ করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.