ইভটিজিংকে (নারীদের উত্ত্যক্ত করা) যৌন হয়রানি হিসেবে বিবেচনা করে আইনে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া যৌন হয়রানির উদ্দেশ্যে গোপনে অনুসরণ করার (স্টকিং) বিষয়টিও যৌন হয়রানির সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। ইভটিজিং প্রতিরোধে নির্দেশনা চেয়ে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত এ রায় দেন। গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. ঈমান আলী ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালত সূত্র জানায়, রায়ে বলা হয়, ইভটিজিং শব্দটি অপরাধের মাত্রা হালকা করে দেয়, এর পরিবর্তে সর্বস্তরে ‘যৌন হয়রানি’ শব্দটি ব্যবহার করতে হবে।
এ ধরনের নির্যাতন ও হয়রানি প্রতিরোধে তদারকি করতে প্রতি থানায় সেল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই কমিটিকে প্রতি মাসে একবার জেলা উন্নয়ন কমিটিতে এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও সাক্ষীর নিরাপত্তা বিধানে সরকারকে আইন প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন মামলা পরিচালনা করেন। আদালত প্রাঙ্গণে ফাহিমা নাসরিন সাংবাদিকদের বলেন, এ রায়ের ফলে ইভটিজিংয়ের শিকার নারীরা আইনের সুরক্ষা পেল।
রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্যাতিত নারীদের মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতি নিরূপণের কথাও বলা হয়েছে। আদালতের রায়ের নির্দেশনাগুলো আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে।
প্রস্তাবিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী)-এর যৌন নির্যাতনের স্থান হিসেবে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রকে সীমাবদ্ধ না রেখে সব সরকারি ও বেসরকারি স্থানকে আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মুঠোফোনে এসএমএস (ক্ষুদে বার্তা), ই-মেইল ও ফোন-মোবাইলের মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করাকেও অপরাধ হিসেবে গণ্য করাসহ এ বিষয়গুলোও আইনে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। সব সাইবার ক্যাফের নিবন্ধন ও ব্যবহারকারীর পরিচয় সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল জারিসহ কয়েক দফা অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দেন। এর ওপর চূড়ান্ত শুনানি-শেষে দু-দিনব্যাপী দেওয়া রায় গতকাল শেষ হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।