আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বোকার আত্নকাহিনী-০৩

আমি পৃথিবীর মঞ্চে অবাঞ্ছিত দর্শক, তবু কিছু কথা বলে যেতে চাই।

মাঝে মাঝে নিজেই শংকায় পড়ে যায় আমি আসলে কি? শয়তান নাকি ভগবান? নিজের অস্তিত নিজের কাছেই ধুয়াশা। নিজেই জানি না আমি কি? শুধু জানি আমি বোকা। তখন আমি ক্লাস ৭ এ পড়ি। কুরবানির ঈদ।

বাবা একটা বড় গরু কিনে এনেছেন। খুব রাগি গরু। সারাক্ষণ সবাই কে গুতা দিতে চাই। যাহোক আসল কথায় আসি। বাসায় একটা কাঠাল খাওয়া হয়েছে।

কাঠালের খোসা যাকে বুশরা বলা হয় সেটা দেখে মনে হল যায় গরুটাকে খাইয়ে আসি। গরুর কাছে গেলাম খব যত্ন করে খাওয়ালাম। তারপর গরুর গলায় হাত দিয়ে আদরও করলাম। গর আমাকে গুতা দিলো না। আমি তো খুশি।

যাক গরু আমার পোষ মেনেছে। বাবাকে ডেকে আনলাম দেখবার জন্য যে গরু আমাকে গুতা মারে না। যেই কাছে গেলাম গরু আমাকে গুতা দিয়ে ভূপাতিত করল। পশ্চাতদেশে ব্যাথা পেলাম। বাবা কিছু বলল না।

ঘরে ফেরার পর শুধু বলল গরু দেখেছ? আমি বললাম হ্যাঁ। বাবা বলল না দেখা হয় নাই, যাও আয়নার সামনে গিয়ে দারাও আসল গরু দেখতে পাবে। রাগে দুঃখে চোখ দিয়ে পানি আসল কিন্তু অপামান হবার পর উত্তর দেবার কোন পথ ই ছিল না। ক্লাস ৭ থেকে ৮ এ যখন উঠলাম তখন ৩ বিষয়ে ফেল। অথচ আমি ৫এ বৃত্তি পেয়েছিলাম।

কি সুন্দর জীবনের গতিপথ। পিতৃদেব বললেন তোমার কাছে এরচেয়ে বেশ আর কি বা প্রত্যাশা করা যায়? আমি উত্তর দিতে পারি নাই। তাতে যে আমার খুব ক্ষতি হল তা না। ১ম সাময়িকিতে ৪২০ এবং ২য় সাময়িকিতে ৫৫৬ পেয়েছিলাম। পিতৃদেব বললেন বাজান এইতো চালায় যাও, দেখ এলাকার বিখ্যাত হতে পারো কিনা।

এবার বাবার দুঃখ দেখে মনে হল আমার কিছু করার আছে। ফাইনালে দেখালাম ৮৯৬ পেয়ে। পিতা অনেকক্ষ্ণ চুপ থেকে, ভেবে-চিন্তে বললেন স্কুলের মান অনেক নিছে নেমে গেছে। আবারও অপমান। তবে অহংকার কম ছিল না।

বন্ধুরা সবাই মেয়েদের স্কুলের দাড়াত। তাদের একটা করে হিল্লে হয়ে গিয়েছিলো। আমার হয় নাই। কারণ সোজা...... আমার চিন্তা ছিল আমি কি ফেলনা? মেয়েরা যেদিন আমার স্কুলের সামনে আসবে তখন আমার হিল্লে হবে। কিন্তু কোন রমণী আসেনি আর আমার ভাগ্যর ছিকেও ছিড়ে নাই।

আমি একা বোকাই রয়ে গেলাম। এলাকায় আমি স্বঘোষিত নায়ক। খুব ভাল ক্রিকেট খেলতাম। নামাজও পড়তাম। এলাকার মুরুব্বিরা বলতেন সোনার ছেলে।

আমার তো অহংকার পা মাটিতে পড়তো না। সত্য বলছি মেয়ে মানুষ যে আমাকে আকৃষ্ট করতো না তা নয়। একটা মেয়েকে পছন্দ করতাম। নাম সালেহা। আশা ছিল মেয়েটা আমাকে অফার করবে।

আমার আশা পূরণ হয় নাই। কিছুদিন পরে জানলাম আমার এক বন্ধুর সাথে সম্পর্ক করেছে। কষ্ট পেলাম মেনেও নিলাম। মনে মনে বললাম প্রেম করে বোকারা। যাহোক কয়েকদিন পর সেই বন্ধুটি এসে জানাল এক দারুন কথা।

সালেহা নাকি আমাকে ভালবাসত। অপেক্ষায় ছিল কবে আমি অফার করব। এখন আর সময় নেই। সে আরও বলেছে আমি নাকি ভাল স্বামী হতে পারব কিন্তু ভাল প্রেমিক হতে পারব না। আবারও দুঃখ পেলাম কিন্তু খুশি হয়েছিলাম ভাল স্বামী হতে পারব।

কিন্তু কত বোকা আমি আমার তো কখনও বউ জুটবে না। বোকাকে কেই বা বিয়ে করে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।