আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বোকার স্বর্গ

আর কিছু কমু না! আমরা আসলেই একটি বোকার স্বর্গে বসবাস করছি। এখানে আমি 'আমরা' শব্দটি দিয়ে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে বুঝাচ্ছি। আমাদের পূঁজি করে কত মানুষ কত ব্যবসা করে যাচ্ছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। এই যেমন ধরুন- কেউ আমাদেরকে নিয়ে আদম ব্যবসা করছে, কেউ করছে নারী ব্যবসা, কেউ শিশু, কেউবা আবার আমাদের নিয়ে ভোট ব্যবসা করেন। এই বিভিন্ন ব্যবসায়ের পন্য হতে হতে মাঝে মাঝে আমরা যে মানুষ তাই ভুলে যাই।

তবে আমরা যে মানুষ তা মনে পড়ে যখন কিছু মানবিধার সংগঠন আমাদের সেই বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের দিকে অঙ্গুলী নির্দেশ করে দেখিয়ে দেন তখন। আমাদের মহান দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদরা প্রায়ই বলেন যে, "অমুক দলের ষড়যন্ত্র দেশের জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। অমুক দলের একনায়কতান্ত্রীক স্বৈরাচারী মনোভাবের সরকারকে জনগণ ক্ষমতা থেকে উৎখাত করবে"। কিংবা, "অমুক দল এই দেশের স্বাধীনতা বিরোধী, তাদের পক্ষে জনগণ কখনোই রায় দেবে না"। তখন স্বাভাবিকভাবেই আমি একটু দ্বিধায় পড়ে যাই।

কেন না, আমি নিজেও এদেশের একজন বৈধ নাগরিক। আমি কি চাই, তাতো তারা জানার কথা ন । কেননা, তারা আমার কাছে কোন দিন আমার মতামত জানতে আসেন নি। তাহলে তারা বললেন কিভাবে যে, জনগণ অন্য দলকে চায় না, তাদেরকেই চায়? আচ্ছা, তার পরেও ধরে নিলাম যে তারা যেহেতু গোটা দেশটাকে চালাচ্ছেন এবং তাদের ব্যাপক কাজ, তাই তারা জনে জনে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে হয়তো পারেন নি। হয়তো অন্য কোন উপায়ে তারা সেই খবরটি নিয়েছেন যে, সংখ্যাগরিষ্ট জনগণ কি চায়।

কিন্তু জনগণের এই 'তাদেরকে চাওয়া'টা যেভাবে তারা উপলব্ধি করতে পেরেছেন সেভাবে যদি তারা আরো কিছু বিষয় উপলব্ধি করার চেষ্টা করতেন তাহলে এ জাতি হয়তো একটি অনাকাঙ্খিত এবং সম্ভাব্য দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেত । বর্তমান সরকার যে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করলেন তার পক্ষে যে দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষের মত ছিল না সেটি কেন তিনি বা তারা উপলব্ধি করতে পারলেন না? আমরা যা চাই তারা বলেন, আমরা নাকি তা চাই না। আর আমরা যা চাই না তারা বলেন ,আমরা নাকি সেটাই চাই। আমাদের প্রকৃত চাওয়াটা কোনদিন পূরণ হওয়াতো দূরের কথা, সেটা যে কোন দিন মুখ ফোটে বলতে পারবো তারও কোন সম্ভাবনা হয়তো এ জীবনে আর নাই । তারা যখন যা বলবেন সেটাই আমাদের মতামত বলেই আমাদের স্বীকার করতে হবে।

আর যদি তা না করি তাহলে আমাদেরও হয়তো কোন সময় গুম হয়ে যেতে হবে অথবা ছাত্র নামধারী দলীয় ক্যাডার বাহিনীর হাতে ছুরিকাঘাতে অকালে প্রাণ দিতে হবে। আর যদি প্রতিবাদ করতে যাই তাহলেতো আর কথাই নাই। যে প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হবে তার জীবন নিয়ে ফিরে আসার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। শুনেছি ভিন্নমত পোষণকারীদের দমন করতে সরকার কি কি আধুনিক সব যন্ত্রপাতি এনেছেন বিদেশ থেকে। যে স্প্রে না কি বিদেশে পশুদের দমন করতে ব্যবহার করা হয় সেই অস্ত্র দিয়েই নাকি কিছুদিন আগে এমপিও ভুক্তির দাবীতে অনশনরত শিক্ষকদের দমন করা হয়েছে।

আরো শুনেছি রাশিয়া থেকেও নাকি অত্যাধুনিক কি কি সব মারণাস্ত্র আনা হচ্ছে। কি জানি বাবা, দেশের মানুষ এতো বোকা কেন? তাদেরকে এত করে বুঝানোর পরও তারা কেন বুঝতে পারে না যে, তাদের যাবতীয় ভাল-মন্দের খবরা-খবর রাখার জন্য সরকারের বিশেষ বাহিনী রয়েছে। এবং সরকার তার সেই তথাকথিত বাহিনীর তথ্যের উপর ভিত্তি করে নিজেই সেই সিদ্ধান্ত নেবেন যে কোনটাতে জনগণের ভাল হবে আর কোনটাতে মন্দ। এখানে তোমাদের কিছু বলার থাকবে না বা থাকতে পারে না। তোমরা জনগণরা খুব মিথ্যাবাদী এবং প্রচণ্ড লোভী।

তোমাদের কিছুতেই বিশ্বাস করা যায় না। আর তোমরা কিছুটা বোকাও বটে। তাই তোমাদের ভাল-মন্দের সিদ্ধান্ত কিছুতেই তোমরা নিজেরা নিতে পার না। তোমরা শুধু ভোট দিতে পার। আবার সেখানেও তোমরা মাঝে মধ্যে মারাত্মক ভুল করে বস।

তোমরা ভুল মানুষকে বা ভুল দলকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাও। তাই এমন ভুলের পুনরাবৃত্তি যাতে আর না হয় তার জন্যই এই ব্যবস্থা। বুঝেছ বোকার দল? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।