আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেলু রাজাকারের ফাঁসি এবং জামায়াতি তান্ডব...

আমি একজন পাঠক এক. শুনছেন নি ভাই খবর একখান। একাত্তরের জানোয়ার দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু রাজাকারের ফাঁসি দিছে ট্রাইব্যুনাল। হেয় নাকি একাত্তরে পুড়িয়েছিল বাড়ি-ঘর। খুন করেছিল মানুষ। ধর্ষণ করেছিল অসংখ্য তরুণী-যুবতী-নারীকে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বী অনেক পরিবারকে ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করেছিল। দেশ স্বাধীন হইলে পর এলাকা ছাইড়া চলে গেছিল অন্য জায়গায়। হয়েছিল মুদির দোকানি। কিন্তু পাপ তো আর বাপ রে ছাড়ে না। এ কথা হেয় ভুলে গেছিল।

নিজের লেবাস পাল্টাইতে শুরু করছিল ওয়াজ নসিহত। ধর্মের লেবাস ধারণ করে নিজের অপকর্মকে আড়াল করার কতো না চেষ্টা করেছিল। মানুষকে ভুলাইয়া-বালাইয়া ধর্মীয় বক্তব্য রাখতে শুরু করে। আশির দশকে সে নিজের নাম পরিবর্তন করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে ধর্মীয় জ্ঞান বিতরণ করে মানুষের মন থেকে তার একাত্তরের ভূমিকা ভুলিয়ে দিতে কতো না চেষ্টা করেছে। ওয়াজের ফাঁকে ফাঁকে রাজনৈতিক বক্তব্যও দিয়েছে জামায়াতের পক্ষে।

নির্বাচনে মানুষকে দাঁড়পাল্লায় ভোট দেয়ার কথা বইলতো আর কইতো- দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে না বেহেস্ত এর টিকেট কনফার্ম। কিন্তু মানুষ কি আর এতো বোকা, একাত্তরে তার ভূমিকা সেটা মানুষ ৪২ বছর পরও মনে রাখছে। তাইতো ধর্মের দোহাই দিয়ে, ধর্মকে পুঁজি করে দিনের পর দিন ব্যবসা চালিয়ে গেছে যে দেলু রাজাকার আজ সে ফাঁসির আসামী। দুই. একাত্তরের ঘৃণ্য অপরাধের জন্য আদালতে তার বিরুদ্ধে আনীত ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটিই সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক দেলু রাজাকারের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পরই আদালত প্রাঙ্গন থেকে শুরু করে গোটা দেশে তো বটে, একেবারে পিরোজপুরের সাউদখালী যেখানে সাঈদীর বাড়ি সেখান পর্যন্ত আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের মনে।

খুশীতে মিষ্টি বিতরণ করেছেন সাধারণ নাগরিকরা। তিন. কিন্তু স্বাধীনতার ৪২ বছর পর বাঙালীর এই আনন্দ যেন সহ্য হচ্ছিল না একাত্তরের প্রেতাত্মাদের। কুখ্যাত রাজাকার সাঈদীর দল জামায়াত-শিবিরের। তারা একাত্তরের মতই ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ থেকে শুরু করে গণজাগরণ মঞ্চে কর্মী, আওয়ামীলীগ, যুবলীগের কর্মী ও সাধারণ মানুষের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

এতে সারাদেশে রাত একটা পর্যন্ত ৪০ এর অধিক লোক মারা গেছে। কিন্তু জামায়াতের এই হিংস্রতার মানে কি। আদালত রায় দিয়েছে, সেটা মেনে না নিয়ে তারা দেশব্যাপী বন্য হিংস্রতার আশ্রয় নিয়েছে। অথচ মজার বিষয় হচ্ছে, সাঈদীর নিজ জেলা পিরোজপুর কিংবা তার গ্রামের বাড়ি সাউদখালীর একটা মানুষ তো দূরের কথা একটা পোকা-মাকড়ও এর প্রতিবাদ করেনি। এমনকি বিন্দুমাত্র আগ্রহও দেখায়নি।

এখন বুঝে নিন কেমন ছিল তখনকার দেলু রাজাকার। যতই সে নাম পরিবর্তন করুক না কেন, সে যে এলাকার কুখ্যাত রাজাকার সেটা এলাকার মানুষ ভাল করেই জানে। একারণেই রায়ের পর দেশ জুড়ে ধর্মীয় উম্মাদনার মাধ্যমে জামায়াত-শিবির যে সহিংসতা শুরু করেছে তা অবিশ্বাস্য ও অকল্পনীয়। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- জামায়াত-শিবির একটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। এ জন্যই তো তারা নোয়াখালী এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে।

আগুণ দিয়েছে। এ ঘটনায় এক হিন্দু বৃদ্ধ মারা গেছেন। জামায়াত-শিবিরের এই অপতৎপরতা রুখতে হবে সম্মিলিতভাবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.