কাজ শুরুর আগেই পদ্মা সেতুর নির্মাণব্যয় দ্বিগুণ করা হলো। ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় প্রাক্কলন করে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয়েছে নকশা পরিবর্তন করে দ্বিতল সেতু নির্মাণ, দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি ও ভূমির মূল্য বৃদ্ধি। ২০১৫ সালের জুন মাসে এই সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার একনেকের চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংশোধন করার পর পদ্মা সেতুর নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি), জাপানের জাইকাসহ উন্নয়ন-সহযোগীদের কাছ থেকে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে পাওয়া যাবে ১৬ হাজার ২৪৯ কোটি ৫২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। আর বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেবে চার হাজার ২৫৭ কোটি ৬৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।
এর আগে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত একনেকের বৈঠকে অনুমোদিত এই প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার টাকা।
পরে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে সেতুর নকশার পরিবর্তন করে। নতুন করে ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়।
কেন প্রকল্পের ব্যয় দ্বিগুণ করা হলো—এ প্রশ্নের জবাবে বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, যেকোনো প্রকল্পের সম্ভাব্য সমীক্ষা করার পর ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর নকশা পরিবর্তনের কারণেও ব্যয়ে একটি বড় পরিবর্তন হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বানের পর নির্মাণব্যয় কমেও যেতে পারে।
তিনি আরও জানান, যত দ্রুত সম্ভব পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে। বাস্তবসম্মত সময়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।
সংশোধিত প্রকল্প অনুযায়ী ২০১৫ সালের জুন মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। সেতুটি নির্মাণ করতে এক হাজার ১২৪ দশমিক ৭৭ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।
আর নদীশাসন করা হবে ১৪ কিলোমিটার। এ ছাড়া টোল প্লাজা, সেবা অঞ্চল নির্মাণসহ ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক তৈরি করা হবে। ঢাকা-মাওয়া-খুলনা মহাসড়কের মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে হবে এই সেতু।
অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্প: বৈঠকে পদ্মা সেতুসহ সাতটি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা।
প্রকল্পগুলো হলো ১২৮ কোটি টাকার সুন্দরবন পরিবেশ ও জীবিকায়ন নিরাপত্তা প্রকল্প, ১০০ কোটি টাকার নার্সিং শিক্ষা সম্প্রসারণ ও মান উন্নয়ন প্রকল্প, ৭৮ কোটি টাকার চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ (সংশোধিত) প্রকল্প, এক হাজার ৭৮ কোটি টাকার চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্প, ৪২৫ কোটি টাকার স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এট দাশেরকান্দি ফর ট্রিটিং ডাইভার্টেড স্যুয়ারেজ ফর্ম হাতিরঝিল অ্যান্ড বেগুনবাড়ি প্রকল্প এবং ২০৪ কোটি টাকার বারৈয়ারহাট-হেয়াকো-রামগড় স্থলবন্দর সংযোগ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।