অভ্র, যুগান্তকারী বাংলা লেখার সফটওয়ার। জটিল কিবোর্ড লেআউট মুখস্থ করতে না পেরে যারা বাংলা লেখাকে ভুলতে বসেছিলেন, বিদেশী ভাষায় চালিয়ে যাচ্ছিলেন বাংলা লেখা, তাদের জন্য, আমাদের সবার জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসে ফ্রি সফটওয়ার অভ্র। অভ্রর সহজবোধ্য লেখার উপায় ও ইউনিকোড ভিত্তিক ফন্টের কারণেই আজকের ব্লগিং জগতে বাংলার এই সদর্প পদচারণা। এই গ্রুপটিতে আমরা অভ্র নিয়ে কথা বলবো, অভ্রর এই সঙ্কট মুহূর্তে প্রিয় সামহয়ারইন ব্লগের ব্লগারদের কণ্ঠে ধ্বনিত হবে - "ভাষা হোক উন্মুক্ত"।
ও রে আমার উত্তইরা খেউরাল ক.......ই.........রে..... হে.....ই ........য়ো....
আ..বা. দিয়া গুটি ধর..........রে হেই........য়ো
দক্ষিণারা গুটি নিয়া গে....লো........রে হেই........য়ো
১৩ জানুয়ারি ২০১২ আগামি শুক্রবার পৌষের শেষ বিকালে জমিদার আমলের তালুক পরগনার সীমানায় ২শ বছরের ঐতিহ্যবাহী গুম গুটি খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
খেলাকে ঘিরে ফুলবাড়ীয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে উৎসবের আমেজ বিরাজ করেছে ।
খেলা শুরু হওয়ার স্থান :
ফুলবাড়িয়া ও ময়মনসিংহের মধ্যবর্তী খোলা ময়দান ময়মনসিংহ ফুলবাড়িয়া রোডের কিনার ঘেষে : দশমাইল ও লক্ষ্মীপুর বাজারের মধ্যবর্তী
শুরু হওয়ার সময় : বিকাল ৪.০০টা
গুম গুটি খেলার নেই কোন আয়োজক নেই পুরস্কার, তারপরও একই স্থানে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গুম গুটি খেলা। হাজার হাজার গুটি খেলোয়াড়ের মুখে জিততই আবা দিয়া গুটি ধররে ... হেইও শ্লোগানে মুখরিত হবে আকাশ বাতাস।
মুক্তাগাছা জমিদার রাজা শশীকান্তের সাথে ত্রিশালের বৈলরের হেম চন্দ্র রায় জমিদারের জমির পরিমাপ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। জমিদার আমলের শুরু থেকেই তালুকের প্রতি কাঠা জমির পরিমাপ ছিল ১০ শতাংশে পরগনার প্রতি কাঠা জমির পরিমাপ ছিল সাড়ে ৬ শতাংশে ।
একই জমিদারের ভূ খন্ডে দুই নীতির প্রতিবাদে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে ওঠে। জমির পরিমাপ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ মিমাংসা কল্পে লক্ষ্মীপুর গ্রামের বড়ই আটা নামক স্থানে যেখানে শুরু তালুক পরগনার সীমানা সেখানে এ গুটি খেলার আয়োজন করে । গুটি খেলার শর্ত ছিল গুটিটি যে দিকে যাবে তা হবে তালুক পরাজিত অংশের পরগনা । জমিদার আমলের সে গুটি খেলায় মুক্তাগাছা জমিদারের প্রজারা বিজয়ী হয় । আজও তালুক -পরগনার জমির পরিমাপ একইভাবে চলছে ।
১ মন ওজনের পিতলের গুটি ডাক ঢোলের তালে তালে নেচে গেয়ে তালুক-পরগনার সীমানায় নিয়ে আসার পর গুটির উপর জিততই আবা দিয়া গুটি ধররে এ ম্লোগান মুখে নিয়ে এক সাথে ঝাঁপিয়ে পড়বে হাজার হাজার মানুষ। গুটি খেলায় টানা হেচড়া সবই হয় কিন্তু হয়না কোন মারামারী ।
হাজার হাজার মানুষ নিয়ন্ত্রনে থাকে না কোন পুলিশ বা অন্য কোন আইন শৃঙ্খলারাকারী বাহিনী এ খেলায় আজ পর্যন্ত ঝগড়া বিবাদের কোন ঘটনা ঘটেনি।
তবে ছোট বেলা থেকে একটা বিষয় দেখে আসছি, গুটি খেলার হাজার হাজার খেলোয়ার নিয়ে এই স্রোতটা যে দিকে যায়, সেখানকার আবাদি জমিগুলো তছনছ করে দিয়ে যায়। এতে অনেক কৃষকেরই ক্ষতি হয়।
৩/৪ বছর আগে মানুষের পায়ের তলায় পিষ্ঠ হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল বলে এলাকাবাসী জানান । প্রতি বছর পৌষের শেষ বিকালের এ খেলাকে ঘিরে অতি প্রাচীনকাল থেকেই লক্ষ্মীপুর, বড়ই আটা, ভাটিপাড়া বালাশ্বর, শুভরিয়া, কালীবাজাইল, তেলিগ্রাম (এটা আমার গ্রাম), সারুটিয়া, গড়বাজাইল, বাসনা, দেওখোলা, কুকরাইল, বরুকা, জোরবাড়ীয়া, আন্ধারিয়া পাড়া, দাসবাড়ী, কাতলাসেন সহ আশে পাশের ১০/১২টি গ্রামে শুরু হয় উৎসবের আমেজ।
ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা পড়ে নতুন নতুন জামা কাপড় ,শতাধিক গরু জবাই হয় গ্রামের বিভিন্ন স্থানে । গুটি খেলা এক নজর দেখার জন্য দূরদূরান্তের আত্মীয় স্বজন ভীড় করে গ্রামে, চর্তুদিকে উচ্চ স্বরে মাইক বাজে । ঢাক ঢোলের বাজনার তালে তালে গ্রামের আবাল-বৃদ্ধবণিতা নেচে ওঠে।
ঐতিহ্যবাহী গুম গুটি খেলা এক নজর দেখার জন্য সকাল থেকে পার্শ্ববর্তী মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ সদর, ত্রিশাল, ভালুকা উপজেলা থেকে শত শত মানুষ ভীড় করে খেলা স্থলে । তালুক-পরগনার সীমানা লক্ষ্মীপুর গ্রামের বড়ই আটা নতুন ব্রীজ। যেখানে ২শ বছর আগে জমিদারের প্রজারা খেলে ছিল শক্তি পরিবার এ অদ্ভুদ খেলা । হাজার হাজার গুটি খেলোয়াড়ের ১ মন ওজনের গুটি টানা হেচড়ার পর হঠাৎ করেই গুটিটি হারিয়ে যায়, এ জন্য খেলাটির নাম করন করা হয়েছে গুম গুটি।
মুর্তজা হাসান খালেদ
গ্রাম : তেলীগ্রাম (বাল্লাপাড়া) পো.- তেলীগ্রাম বাজার
থানা : ফুলবাড়িয়া, জেলা : ময়মনসিংহ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।