মে মাসের মাঝামাঝি থেকে মধ্য আগস্ট। ইউরোপীয় ফুটবলের দুটি মৌসুমের মাঝখানের এই তিন মাস বিরতি আমাদের কাছে যেন এক নিরন্নের কাল। একটু রাত বাড়লেই তৃষিত চোখগুলো টেলিভিশনে আঁতিপাঁতি করে কিছু খোঁজে। একটা সবুজ আয়তক্ষেত্রে পায়ে পায়ে ওঠা ঝড় নেই। গ্যালারিতে নেই রং আর সাগর-গর্জন।
ডাগ-আউটে চিন্তাক্লিষ্ট কিংবা উচ্ছ্বসিত কোচ নেই। মেসি-রোনালদো-ফন পার্সি বা সুয়ারেজের অসাধারণ একেকটা গোলের স্মৃতি ঝাপসা। কবেকার উজ্জয়নী তীরে হারিয়ে ফেলা যেন জীবনের সব রোমাঞ্চ। এই তো আর মাত্র কটা দিন। দর্শকের কাছে আবার ফিরছে ফুটবলের নবান্ন।
৯ আগস্ট, ঈদের আগের রাত বা ঈদের রাতেই শুরু হয়ে যাচ্ছে জার্মান লিগ, বুন্দেসলিগা। যেখানে নতুন যুগ শুরু করবেন পেপ গার্দিওলা। ১৭ আগস্ট একই দিনে মাঠে গড়াবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও স্প্যানিশ লা লিগা। বিশ্ব ফুটবলের সর্বাধিক জনপ্রিয় এই লিগ দুটি এবার অনেক ভাঙা-গড়া ও উত্থান-পতনের। ২৭ বছর পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডাগ-আউটে ১৫০০ ম্যাচ শেষে ১৪,৯৮০টি চুইংগাম চিবিয়ে বিদায় নিয়েছেন একটি মুখ—স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন।
ইংলিশ লিগই এবার ফিরে পাচ্ছে পুরোনো এক চরিত্র—হোসে মরিনহো। সান্তিয়াগো বার্নাব্যু থেকে একরাশ মাতাল হাওয়া নিয়ে মরিনহো আবার যখন বসতি গাড়ছেন স্টামফোর্ড ব্রিজে, রিয়াল মাদ্রিদে রাজ্যপাট শুরু করছেন কার্লো আনচেলত্তি। কিন্তু সেখানে আরেকটি পরিবর্তন দৃশ্যমান। রিয়ালের ডাগ-আউটে আসছেন জিনেদিন জিদান। প্রধান কোচ নন, সহকারী।
কিন্তু সহকারী কোচের ভূমিকাতেই সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলারের অভিষেক দেখতে যেন তর সইছে না ফুটবল বিশ্বের।
এরই মধ্যে জার্সি-শর্টস পরে অনুশীলন মাঠে মহড়াও দিয়ে ফেলেছেন জিজু। লম্বা পায়ের অলস সৌন্দর্যে বল নিয়ে দেখিয়েছেন কিছু কারুকাজ। কাকাকে মাঠের এক পাশে ডেকে নিয়ে সেদিন কথা বললেন। সবকিছুই কোচিংয়ে তাঁর গভীর অভিনিবেশের ইঙ্গিত।
অবসরের পর ২০০৮ সালে জিদান বলেছিলেন, বাকি জীবনটা কাটাতে চান ফুটবলের সঙ্গেই। সেই জীবনে খেলাটার নিখাদ শুভেচ্ছাদূত হয়ে থাকার সুযোগ ছিল। কিন্তু বিশ্বকাপজয়ী আর তিনবারের বিশ্বসেরাকে মাঠই টেনেছে নিরন্তর। তাই আগ্রহ দেখিয়েছেন কোচিংয়ে যুক্ত হওয়ার। মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্স করেছেন।
হুড়োহুড়ি করে প্রধান কোচ হওয়ার ইচ্ছে তাঁর কখনোই ছিল না। ২০১১ সালে রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই গ্যালাকটিকোকে ডেকে নিলেন রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। ব্যক্তিগত উপদেষ্টা হিসেবে। পরের বছর ভেবেছিলেন, সহকারী কোচের ভূমিকাটা পাবেন। পাননি মরিনহোর অনিচ্ছায়।
এবার আনচেলত্তি রিয়াল কোচের তপ্ত চেয়ারটিতে বসার পরই ডাক পড়ল। এটাই তো জিজু চেয়েছিলেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।