কাশ্মীর সীমান্তের পুঞ্চ সেক্টরে সোমবার দিবাগত রাতে হামলায় ভারতের পাঁচ সেনা নিহত হয়েছে। ভারতের অভিযোগ, নিয়ন্ত্রণরেখা পার হয়ে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীরা অতর্কিত আক্রমণে ওই পাঁচ সেনাকে হত্যা করে। তবে পাকিস্তান এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। ভারতের লোকসভায় সংসদ সদস্যরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে পাকিস্তানের কঠোর সমালোচনা করেন।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, ১৫ থেকে ২০ জন ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী’ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সহায়তায় নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করে।
তারা সারলা নিরাপত্তাচৌকিতে ছয় সদস্যের ভারতীয় সেনা টহল দলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। একজন সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের ২১ বিহার রেজিমেন্টের পাঁচ সেনা আক্রমণের জবাব দিতে পাল্টা গুলি চালিয়ে নিহত হন। তাঁদের মরদেহ সীমান্তরেখা থেকে আমাদের ভূখণ্ডের সাড়ে চার শ মিটার ভেতরে পড়ে ছিল। আরেকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। ’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি লোকসভায় বলেন, সীমান্তে সেনা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কূটনৈতিক মাধ্যমে ইসলামাবাদ সরকারকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণরেখায় আমাদের পাঁচজন সেনা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনা পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের স্বাভাবিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করবে। ’
তবে পুঞ্চ সীমান্তরেখায় ভারতের সেনাদের হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সীমান্তে আমাদের পক্ষ থেকে নির্বিচারে কোনো গুলি চালানো হয়নি। ’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাকিস্তানের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, মঙ্গলবার সীমান্তে গোলাগুলি বা এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
ভারতীয় সেনা হত্যার ঘটনায় দেশটির পার্লামেন্টে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিরোধী দলের সদস্যরা। তাঁরা সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, নমনীয় পররাষ্ট্রনীতির কারণেই সীমান্তে প্রায়ই এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেন, সরকারের উচিত পাকিস্তানকে এ ঘটনার সোজাসাপ্টা ও কঠোর জবাব দেওয়া।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি এ ঘটনায় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের কাছ থেকে বিবৃতি আশা করেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আর পি এন সিং বলেন, ‘পাকিস্তান যদি সত্যিই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়, তাহলে এমনটা করতে পারে না।
’
বিশ্লেষকেরা এ ঘটনাকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টায় একটি ধাক্কা বলে মনে করছেন। আগামী মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার কথা রয়েছে। সীমান্তের ঘটনা ওই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে।
ভারতীয় গণমাধ্যমে অভিযোগ করা হয়, কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তান চলতি বছরেই ৩৩ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া, আল-জাজিরা ও ডন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।